বিনোদন ডেস্ক: বগুড়ায় স্ত্রীকে মারপিটের মামলায় আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। ৪৩ দিন কারাভোগের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়া জেলা ও দায়রা নরেশ চন্দ্র সরকার তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এদিন দুপুরে হিরো আলমকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিন পাবার পর রাজনীতিতে কী ভূমিকা পালন করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বিএনপি শপথ না নিলে বগুড়া-৪ শূন্য আসনে উপনির্বাচনে অংশ নেব। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, আবারও মিডিয়াতে কাজ শুরু করব। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে ঢাকায় বিয়ের যে অভিযোগ করা হয়েছিল তা মিথ্যা।
তিনি আরও জানান, স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক কিছু সমস্যা হয়েছিল তা মিমাংসা হয়ে গেছে। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনে জয় পান জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী মোশাররফ হোসেন। তিনি ১ লাখ ২৬ হাজার ৭২২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাসদের রেজাউল করিম তানসেন পান ৮৪ হাজার ৬৭৯ ভোট।
আলোচিত ওই আসনে হিরো আলম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। নির্বাচনে আশরাফুল ইসলাম ওরফে হিরো আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ মার্কা নিয়ে ৬৩৮ ভোট পান। বিএনপি যদি শপথ না নেয় তাহলে স্বাভাবিকভাবে ওই আসনটি শুন্য হবে। এক্ষেত্রে আবারও বগুড়া-৪ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার সময় তার আইনজীবী মাসুদার রহমান স্বপন আদালতের আদেশ জেলে জমা দিয়ে হিরোকে বাইরে আনেন। পরে তাকে পরিবারের সদস্যদের কাছে দেয়া হয়।
অ্যাডভোকেট মাসুদার রহমান স্বপন জানান, হিরো আলমের শ্বশুর সাইফুল ইসলাম মামলাটি আপস ও স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমি ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সংসার করতে রাজি হয়ে আদালতে আবেদন করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সুমি আদালতকে বলেন, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে স্বামী হিরোর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তিনি এখন সন্তানদের নিয়ে স্বামীর সঙ্গে সংসার করবেন। হিরো আলমকে বগুড়া জেল থেকে আদালতে হাজির করা হলেও তার বক্তব্য শোনা হয়নি। শুনানি শেষে জেলা ও দায়রা জজ ১০ হাজার টাকার বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর করেন। আগামী ২০ জুলাই মামলার পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে।
এজাহার সুত্র জানায়, হিরো আলম যৌতুকের দাবিতে গত ৬ মার্চ স্ত্রী সুমি বেগমকে মারপিট করেন। সাইফুল ইসলাম তার মেয়েকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। এছাড়া সদর থানায় মামলা করেন। পুলিশ হিরো আলমকে গ্রেফতার করে। এর আগে ২৫ মার্চ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন ধরা হলে আদালত নামঞ্জুর করে ১৮ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। এছাড়া আদালত হিরো আলমের স্ত্রী সুমি ও শ্বশুর সাইফুল ইসলামকে ভর্ৎসনা করেছিলেন।
এর আগে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় হিরো আলমের স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অনেক আগে থেকেই স্বামীর চারিত্রিক সমস্যা আছে। তিনি একবার তার ছোট বোনকে (শালিকা) নিয়েও পালিয়েছিল।
এখন এমপি নির্বাচন করে আলোচিত হওয়ার পর থেকেই তিনি বাড়িতে কম আসেন। সন্তান, তার ও সংসারের খোঁজখবর রাখেন না। দুই মাস পর বগুড়া শহরতলির এরুলিয়া গ্রামের বাড়িতে আসেন। রাতে বিছানায় শুয়ে দীর্ঘ প্রায় তিন ঘণ্টা ঢাকার এক নারীর সঙ্গে গল্প করেন। প্রতিবাদ করলে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছিল।