পাইকগাছায় মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

18

ওবায়দুল কবির সম্রাট, পাইকগাছা,কয়রা : খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অপরিকল্পিত ভাবে নদীর পাড়ে নীচু জায়গায় গৃহ নির্মাণ ও নিম্ন মানের নির্মাণসামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অল্প কিছুদিন আগে ঘরে না উঠতে উঠতেই ঘরের একাধিক ঘরে পলেস্তারা খসে পড়াসহ ফাটল দেখা দিছেয়ে ।

দেখা গেছে, ২ নং হরিঢালী ইউনিয়নের রহিমপুর মৌজায় ৫০ টি পরিবারের জন্য নির্মিত অধিকাংশ ঘরের মেঝে, দেয়াল ও পিলারে ফাটল ধরেছে। অপরিকল্পিত ভাবে নদীর চরে গৃহ নির্মাণ করায় বড় জোয়ারে ৫০ টি ঘরে একাংশ পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন সচেতন মহল ও সুবিধাভোগীরা। এদিকে অনিয়মের অভিযোগ ধরা পড়ায় ইতিমধ্যে জোয়াতাড়ি দিয়ে ঠিক করার কাজ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। স্থানীয় মানুষ জানিয়েছে, নির্মাণে অনিয়ম দুর্ণীতির কারনে সরকারের এ মহৎ উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। অভিয়োগ উঠেছে ইউএনও, প্রকল্প কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সকলে এ অনিয়মে জড়িত। উপজেলার রহীমপুর গ্রামের আবাসন প্রকল্পের সুবিধাভোগী বিধবা নুর জাহান বিবি বলেন, ‘ঘরে সারা জায়গায় ফাটল ধরেছে। এক পাশে নদী ও পাশে ঘের দুই সাইটে পানি এখন মধ্যিখানে ঘর ভবিষ্যতে থাকবে কিনা ভয়ে আছি।’

একই গ্রামের বিধবা সুখজান বলেন, ‘ঘরের সব জাগায় ফাইটে যাচ্ছে। এখন খবর পাইয়ে তারা (উপজেলা প্রশাসন) আইসে ঠিকাঠাক করে দেচ্ছে। কিন্তুক তাও বেশি দিন টেকবে বলে মনে হতিছে না।’

মিনারুল জানান,বালু বেশি সিমেন্ট কম দেওয়ায় খসে খসে পড়ছে,ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরছে,এখানে থাকা নিরাপদ না। এখন এবার নতুন করে ঠিক করে দেচ্ছে ফাটল জায়গা গুলো।

সুফিয়া জানান, তার ঘরের মেঝে ও দেয়াল ফেটে গেছে। আমরা প্রশাসনের জানালে ঠিক করে দেবে বলে জানায়।

হরিঢালী ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের জাকির হোসেন, জেসমিন,মীরজাহান আলীসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, তাদের গ্রামে ভূমিহীনদের জন্য ৫০ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে । এতে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। খোয়ার পরিবর্তে রাবিশ, নিম্নমানের বালু ও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে অতি সহজে ঘরের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। তাছাড়া নীচু জায়গায় হওয়ায় জোয়ারের ওঠে। নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে এখানে বসবাসের অনুপোযী হয়ে পড়বে বলে তাদের তাদের ধারণা। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

এদিকে কপিলমুনি বাজারের পাশে কপোতাক্ষ নদের তীরে লাগানো গাছ-গাছালি কেটে মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। সেখানে গৃহ নির্মাণের জন্য ছোট-বড় প্রায় দুইশ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম খালদি হোসেন সিদ্দিকী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে একাধিক বার ফোন করা হলে ঘরের বিষয়ে জানতে চাইলে ফোন কেটে অফিসে দেখা করার বলেন। পরে একাধিক বার ফোন করলেও ফোন ধরেননি। অফিসে গেলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।