কলারোয়া প্রতিনিধি (সাতক্ষীরা) : তালা-কলারোয়া – পাটকেলঘাটা তিনটি উপজেলার সমন্বয়ে সংসদীয় আসন সাতক্ষীরা -১। আওয়ামীলীগের উর্বর ভূমি হওয়া সত্বেও এই আসনটি বারংবার চলে গিয়েছে স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে।বি.এন.পির অবস্থা নাজুক হলেও জামাত এই আসনটিতে বরাবরই শক্তিশালী। বাস্তবতা হলো,জামায়াতই এই আসনটিতে মূলত বি.এন.পির ভোট ব্যাংক।
বি.এন.পি যতবারই ক্ষমতায় গেছে জামায়াতের ভোটেই গেছে।
পর্যালোচনায় দেখা যায় যে,২০০২ সালের ৩০ শে আগস্ট কলারোয়া উপজেলায় জননেত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকাবস্থায় বি.এন.পি-জামাত ক্যাডার কর্তৃক স্বশস্ত্র গাড়িবহর হামলার ঘটনার শিকার হন।যে গাড়ি বহর হামলা মামলায় হাওয়া ভবনের টাকা খেয়ে কতিপয় স্বার্থান্ধ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য প্রদান করে।
শুধু তাই নয়,২০০৮ সাল থেকে টানা প্রায় দুই মেয়াদে আওয়ামীলীগ সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার পরও ত্যাগী নেতা-কর্মমীদের অবমূল্যায়ন করে কতিপয় স্বার্থান্ধ আওয়ামীলীগ নেতাদের জামাত-বি.এন.পি অনুপ্রবেশকারীদের দলে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার ফলে দলীয় গ্রুপিং এখন তুঙ্গে।সাতক্ষীরা -১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মহাজোট তথা ওয়ার্কার্স পার্টির হওয়ায় দলীয় গ্রুপিং নিরসনে উনার কার্যকর কোন পদক্ষেপ লক্ষণীয় নয় বলে মনে করেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
এই দলীয় গ্রুপিংয়কে কাজে লাগিয়ে জামাত-বি.এন.পি ফায়দা লুটতে চাইছেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এমতাবস্থায়, এম.পি পদে দলীয় মনোনয়নের জন্য মহাজোট প্রার্থীর চেয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর প্রতিই তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কারণ,যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ায় জামাত যেহেতু অনেকটাই নাজুক অবস্থানে,জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের বাস্তব চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরে বি.এন.পি কে পরাজিত করে ফিল্ডে কর্মী আছে এমন নেতাকে মনোনয়নের মাধ্যমে বিজয়ী করে পুনরায় আওয়ামীলীগকে সাংগঠনিকভাবে সংগঠিত করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আওয়ামীলীগ পরিবারে জন্মগ্রহণ করা আওয়ামীলীগ অসংশ্লিষ্টমনরা।
সাতক্ষীরা -১(তালা-কলারোয়া-পাটকেলঘাটা) আসনে আওয়ামীলীগ -জোট – মহাজোট মিলে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে রয়েছেন-জনাব সরদার মুজিব, ইঞ্জিঃশেখ মুজিবুর রহমান, এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, শেখ নুরুল ইসলাম, এড.মোহাম্মদ হোসেন, ফিরোজ আহমেদ স্বপন, ঘোষ সনৎ কুমার, ফিরোজ কামাল শুভ্র, বাবু বিশ্বজিৎ সাধু, মন্ময় মনীর, রফিকুল ইসলাম।
সাতক্ষীরা -১ আসনে এম.পি. পদে দলীয় মনোনয়ন আপনি কাকে চান (?) এমন প্রশ্নকে সামনে রেখে আওয়ামীলীগের ভেতরে সাতক্ষীরা -১আসনে মাঠ চষে বেড়িয়ে যে তথ্য পেয়েছি তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি :
কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জনাব আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন,”যারা টি-আর, কাবি-খা খাওয়ার লোভে রাজনীতি করে;যারা ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী বাদ রেখে অনুপ্রবেশকারী জামাত-বি.এন.পি সাথে নিয়ে চলে তাদেরকে বাদ দিয়ে সরদার মুজিব ভাইর মতো আওয়ামীলীগমনা প্রার্থীকে এম.পি পদে দলীয় মনোনয়ন দিলে দলের জন্যই ভাল হবে বলে আমি মনে করি।বাকিটা দলের সিদ্ধান্ত।”
প্রয়াত চেয়ারম্যান স.ম.আনোয়ারুল ইসলামের ভাইপো ও ১১নং দেয়াড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাচান এ বিষয়ে বলেন, “সাতক্ষীরা -১ আসনের বর্তমান পদধারী অনেক আওয়ামীলীগ নেতাই চলেন এখন জামাতের টাকায়।এই অবস্থান থেকে উত্তোরণের জন্য যে কয়জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী, তার মধ্যে সরদার মুজিব ভাই’ই যোগ্য।এবং সরদার মুজিব ভাইর মতো কর্মীবান্ধব নেতা যদি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নৌকা মার্কার এম.পি প্রার্থী হন তাহলে বিজয়ের পাশাপাশি আওয়ামীলীগও জামাত-বি.এন.পি প্রভাবমুক্ত হয়ে সাংগঠনিকভাবে সংগঠিত ও শক্তিশালী হবে বলে আমি আশাবাদী। তারপরও জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”
কলারোয়া উপজেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি রুবেল মল্লিক বলেন,” যে ক’জন মনোনয়ন প্রত্যাশী আমাদের আওয়ামীলীগের ভেতর আছেন।তারা সব কাগুজে বাঘ।একমাত্র সরদার মুজিব ভাই ছাড়া কারো কোন কর্মী নাই ফিল্ডে।আবার একেকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। ”
কলারোয়া উপজেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী রুবেল চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন,”সাতক্ষীরা -১ আসনের জামাত-বি.এন পি কে দাবায়ে রাখার পরিবেশ এবং সরদার মুজিব ভাইকে এম.পি পদে প্রার্থী দিয়ে সুযোগ দিলে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের যে উন্নয়ন করেছেন তার প্রতিদানস্বরূপ নেত্রীকে তালা-কলারোয়া-পাটকেলঘাটা-১ আসনটি উপহার দেবোই,দেবো-ইনশাল্লাহ।”
কলারোয়া উপজেলা তাতী লীগের সভাপতি সরদার জিল্লুর বলেন, “দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই শেষ সিদ্ধান্ত।তবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট অনুরোধ থাকবে,৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের সময় কর্মীদেরকে বিপদের মুখে ফেলে রেখে যে সমস্ত নেতারা আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন তারা যেন মনোনয়ন না পান।এবং দাবী থাকবে-সরদার মুজিব ভাইর মতো নেতা যারা দূর্দিনে কর্মীদের পাশে দাড়িয়েছেন,নিহত আওয়ামীলীগ কর্মীদের শোকসন্তপ্ত পরিবারকে পাশে থেকে সমবেদনা জানিয়েছেন এমন নেতা যেন এম.পি পদে দলীয় মনোনয়ন পান।”
কলারোয়া উপজেলা তাতী লীগের সাধারন সম্পাদক প্রিন্সিপাল বেল্লাল হোসেন আবীর বলেন, “যে কয়জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী, তার মধ্যে সরদার মুজিব ভাই’ই বেস্ট। সরদার মুজিব ভাই দলীয় মনোনয়ন পেলে সাতক্ষীরা -১ আসনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা মার্কার বিজয় সুনিশ্চিত।”
খোরদো প্রেস ক্লাবের সভাপতি মেহেদী মাসুদ বলেন, “যে কয়জন প্রার্থী আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী, তাদের কেউ পত্রিকায় বিঙ্গপ্তি ; কেউ ব্যানার-ফেস্টুন অথবা কেউ ফেসবুকে প্রচারের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ।মাঠে একমাত্র সরদার মুজিব ভাইকে ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায় না।তাই কর্মীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত যে নেতা (সরদার মুজিব) তাকেই আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জননেত্রী এম.পি প্রার্থী চাই।”
সাতক্ষীরা জেলা কৃষক লীগের সদস্য, ১১নং দেয়াড়া ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি ও ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক এম. আয়ুউব হোসেন বলেন,”আমি আমার ক্যান্সারে আক্রান্ত ছেলে বাবুকে নিয়ে দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোটাছুটি করছি।বিগত জামাত-বি.এন.পি শাসনামলে আওয়ামীলীগ করার অপরাধে ভিটেমাটি ছেড়ে রাঙ্গামাটি গিয়ে মাটি কেটে খেতে হয়েছিল আমার।আজ আওয়ামীলীগ সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার পরও আমার সন্তানের চিকিৎসার জন্য সরকারি সুবিধাভোগী আওয়ামীলীগ নেতাদের নিকট সাহায্যের জন্য গেলে আশ্বাস ছাড়া যখন কিছুই পাই না,তখন দুঃখে বুকটা ভেঙ্গে যায়।তবে মিথ্যে বলবো না,সরকারি সুবিধা ভোগ না করেও সরদার মুজিব ভাই আমার ক্যান্সারে আক্রান্ত ছেলের শয্যার পাশে যেভাবে ছুটে এসেছিলেন এবং খোজ – খবর নেয়া সহ যতটুকু করেছিলেন, তাতে সরদার মুজিব ভাইর প্রতি আমি কৃতঙ্গ।আর সরদার মুজিব ভাইর মতো কর্মীবান্ধব নেতাকে যদি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা এম.পি প্রার্থী দেন,তাহলে কর্মীরা হবে উপকৃত,দল হতো সংগঠিত।”
১১নং দেয়াড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মুনসুর সরদার বলেন,”গ্রুপিংয়ের এই রাজনীতির সময় কোন নেতার কাছেই আমি যায় না।কার কাছে গেলে কে,কি মনে করে এই ভয়ে।একাই চলার চেষ্টা করি।তবে আমার এলাকার একটি অসহায় গরীব ছেলের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সরদার মুজিব ভাইর সঙ্গে কথা বললে উনি যে পরামর্শ দিলেন,তা সত্যিই এই মুহুর্তে কেউ কাউকে আপাতত দিচ্ছে না।সেদিক থেকে সরদার মুজিব ভাই অনেক বড় মনের মানুষ এবং কর্মীদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই উনি রাজনীতি করেন বলে আমার মনে হলো।”
মাঠ ঘুরেও দেখা গেছে,ওয়াজ মাহফিল, ইফতার মাহফিল, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান, খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান সহ নানা সামাজিক এবং রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগদানের পাশাপাশি আওয়ামীলীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র জনগণের মাঝে প্রচার করে নৌকা মার্কায় পুনরায় ভোট দিয়ে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার উদাত্ত্ব আহ্বান সহ গণসংযোগ করে চলেছেন।
একইভাবে,তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দেশ,জাতি ও সংগঠনের সার্থে ভেদাভেদ ভূলে ঐক্যবদ্ধ করার নিমিত্তে কাজ করতে দেখা গেছে সরদার মুজিবকে।।