আসন্ন ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত ডাকসুর সদস্য পদপ্রার্থী মুহাঃ মাহমুদুল হাসান। লাল সবুজের কথা নিউজের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহানুর ইসলাম।
জাহানুর ইসলাম: শুভ সকাল।
মাহমুদুল হাসান: শুভ সকাল।
জাহানুর ইসলাম: আপনি তো এবারের ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন। তো ডাকসুর প্রতিনিধি কেন হতে চান?
মাহমুদুল হাসান: ডাকসু এমন একটা প্লাটফর্ম যেখান থেকে সবার প্রতিনিধিত্ব করা যায়। আমি বিগত কয়েক বছরে ক্যাম্পাসে অসংখ্য শিক্ষার্থীদের সাথে মিশেছি। তাদের সাথে আমার অনেক ভাল সম্পর্ক ছিল, বর্তমানেও আছে, মনে প্রাণে বিশ্বাস করি ভবিষ্যতেও এর কোনো অবনতি হবে না।এছাড়া আমি ক্যাম্পাসের ১৯ টি সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত, যেগুলো ডাকসুর অবর্তমানে শিক্ষার্থীদের অধিকারের পক্ষে কাজ করেছে।
জাহানুর ইসলাম: আমি আপনার ইশতেহার দেখেছি।আপনি গেস্টরুম কালচারের সংস্কারের কথা বলেছেন।আসলে এটা দ্বারা আপনি কি বুঝাতে চেয়েছেন?
মাহমুদুল হাসান: গেস্টরুম বলতে কোনো কিছু থাকবে না। গেস্টরুম শব্দটাকে আড্ডারুমে পরিণত করতে চাই। গান, কবিতাসহ স্ব স্ব প্রতিভা প্রকাশের জায়গা হবে এই আড্ডারুম।
জাহানুর ইসলাম: তো গেস্টরুম কালচার সংস্কার না করে তা তো একেবারে বন্ধ করে দিতে পারেন?
মাহমুদুল হাসান: বললেই তো বন্ধ করা যায় কিন্তু আমাদের ভাবা দরকার বন্ধ করার চেয়ে ইতিবাচক কী কী পরিবর্তন করা যায়? আমরা যদি এটাকে (গেস্টরুম) নতুন শিক্ষার্থীদের প্রতিভা প্রকাশের কেন্দ্রে পরিণত করতে পারি, তাহলে তাতে শিক্ষার্থীদের মনন যে আরো বেশি ধারালো ও তীক্ষ্ণ হবে তা নিঃসন্দেহে বলতে পারি।
জাহানুর ইসলাম: আপনি তো ছাত্রলীগ প্যানেল সমর্থিত?
মাহমুদুল হাসান: আমি সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত ডাকসুর সদস্য পদপ্রার্থী
জাহানুর ইসলাম: ছাত্রলীগ প্যানেল ব্যতীত অন্য সকল বিরোধী প্যানেল হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের কথা বলেছেন।এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কি?
মাহমুদুল হাসান: আমি যে শুধু একজন প্রার্থী তা কিন্তু নয়, আমি একজন ভোটারও বটে। একজন ভোটার হিসাবে যতটুকু জানি তা হলো, ডাকসুর ইতিহাসে কোনো কালেই হলের বাইরে ভোট হওয়ার নজির নেই। তাই সকল সাধারণ শিক্ষার্থী ভোটারদের মতো আমারও চাওয়া অতীতের মতো এবারো ভোটকেন্দ্র হলেই থাকুক।
জাহানুর ইসলাম: ভোটকেন্দ্রগুলো যদি হলে করা হয়,তাহলে নির্বাচনে দুনীর্তি হবে বলে বিরোধী প্যানেলগুলো জোর আশংকা করছেন।এ ব্যাপারে আপনার মুল্যায়ন কি?
মাহমুদুল হাসান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম আশংকা অবান্তর। এখানে এরকম আশংকা কিংবা আশা করলে সেটা বোকার স্বর্গে বাস করার মতো। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী সচেতন । সুতরাং যোগ্য প্রার্থীকেই তারা বেছে নিবেন।
জাহানুর ইসলাম: নির্বাচনে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে এ ব্যাপারে এমন কিছু বলুন,যাতে বিরোধীতা আপনার কথায় আশ্বস্ত হন,,,,
মাহমুদুল হাসান: ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে। সাংবাদিকরা থাকবেন। এর মধ্যে কারচুপি হবে কিংবা এ রকম কিছু একটা ঘটবে এটা ভাবা শুধু ভুলই নয়, চরম ভুল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে যারা যোগ্য নির্বাচনে কেবল তাঁরাই জয়ী হবেন। যেহেতু প্রশাসন নির্বাচনের ব্যাপারে আন্তরিক সেহেতু ভয় পাবার কিছু নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ বছরের বন্ধ্যাত্ব দূর হবে, ছাত্ররা নিজের অধিকারের কথাগুলো জোরালো ভাবে প্রশাসনের কাছে তুলে ধরতে পারবে এর চেয়ে বড় ভালো খবর কিছু হতে পারে না।
জাহানুর ইসলাম: নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
মাহমুদুল হাসান: আমি ১৯ টি সংগঠনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত । যেগুলো ডাকসুর অবর্তমানে কাজ করেছে। গত ৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীর সাথে আমার কোনো দ্বন্দ্ব হয়নি, কারো সাথে উচ্চস্বরে কথাও বলিনি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আমার বন্ধুসুলভ সম্পর্ক আছে। শিক্ষার্থীরা আমার বিগত দিনের রেকর্ড দেখে আমাকে ভোট দিবেন। আমি বিশ্বাস করি, আগামীদিনে ডাকসুর একজন প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারবো।
জাহানুর ইসলাম: নির্বাচনে জয়ী হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য আপনি কী করবেন?
মাহমুদুল হাসান: কথার ফুলঝুরি কিংবা উচ্চ শব্দ নয় আমি শুধু বলবো এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস । আগে ছিলো শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের, এবার হবে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন মাফিক বিশ্ববিদ্যালয়কে সাজানোই হবে আমার কাজ ।
জাহানুর ইসলাম: কিন্তু নির্বাচনে যদি আশানুরুপ ফল না আসে তাহলে পরবর্তীতে আপনার ভূমিকা কি হবে?
মাহমুদুল হাসান: ভোটে হার জিত থাকবেই।এটা নিয়ে চিন্তিত নই। হারি কিংবা জিতি সব সময় শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের পক্ষে সোচ্চার থাকবো।
জাহানুর ইসলাম : সকল ভোটারদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন?
মাহমুদুল হাসান: আমি আপনাদের ভাই, গত ৫ বছর কাটিয়েছি এই ক্যাম্পাসে । আমাকে নিয়ে একটু ভাবুন, যদি মনে হয় আমি আপনাদের প্রতিনিধি হিসাবে যোগ্য তবেই আপনার মূল্যবান ভোটটি আমাকে দিবেন। আমার সদস্য ব্যালট নম্বর- ৩৪
। আমি সকল শিক্ষার্থীদের একটি বিষয়ে আশ্বস্ত করতে চাই, আমি ডাকসুতে গেলে ডাকসু হবে আপনার । ডাকসুতে আমি আপনাদের অধিকারের কথা গুলো জোরালোভাবে তুলে ধরতে চাই।
জাহানুর ইসলাম: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মাহমুদুল হাসান: আপনাকেও ধন্যবাদ ।