কেশবপুরে যৌতুকের দাবীতে ১ সন্তানের জননীকে পিটিয়ে মাদকাসক্ত স্বামীর মনের কষ্টে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা

21

আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধিঃ  কেশবপুরে যৌতুকের দাবীতে ১ সন্তানের জননীকে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করার পর মনে কষ্টে মাদক সেবী স্বামী বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। আত্মহত্যার চেষ্টাকারীকে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ১ সন্তানের জননী স্থানীয় চিকিৎসা নিয়েছে।

রবিবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলার দত্তনগর গ্রামের প্রবাসী আবুল কালাম বিশ্বাসের মেয়ে মুসলিমা খাতুন (২০) এর সাথে ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর গ্রামের আফসার মালীর ছেলে হাবিবুল্লা মালী (২৭) এর সঙ্গে ২০১৫ সালে ৬০ হাজার টাকা দেন মোহরে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের সময় ২ লক্ষ টাকা মূল্যে সাংসারিক বিভিন্ন জিনিস পত্র স্বামীকে দেওয়া হয়। মুসলিমা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবী এনে আমার উপর চালাতো অমানুষিক নির্যাতন। এর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে খুলনার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে আমাদের ঔরষে ১ টি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। সেখান থেকে কিছুটা সুস্থহয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকদের সম্মতিতে আমার মা আমার পিতার বাড়িতে নিয়ে আসে। আমি মার্চ মাসে ছেলেকে ডাক্তার দেখানোর জন্য পিতার বাড়ি থেকে খুলনায় যায়। ছেলেকে ডাক্তার দেখাইয়ে পিতার বাড়িতে ফেরার পথে চুকনগরে এসে পৌছানো মাত্র আমার স্বামী পথ রোধ করে, আমার কোল থেকে শিশু সন্তানকে জোর পূর্বক কেড়ে নিয়ে আমাকে শারীরিক নির্যাতন ও হুমকী দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।

এরপর উভয় পরিবারে সালিশের মাধ্যমে আবারও সংসার শুরু করি। সংসার করাকালীন আমার স্বামী মাদক সেবী হওয়ায় পুলিশ তাকে মাদকসহ তিন বার আটক হয়। সে আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার আমার স্বামীকে নিয়ে চাচাতো বোনের বিয়ের দাওয়াত খেতে পিতার বাড়িতে আসি। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে স্বামী হাবিবুল্লা আমার পরিবারের কাছে মোটরসাইকেল দাবী করেন। আমার পরিবার তার দাবী পুরণ করতে না পারায় সে আমাকে মারপিট করে গুরুত্বর আহত করার পর শনিবার সকালে তার পিতার বাড়িতে চলে যায়। আমার পরিবারকে ফাঁসাতে আমার স্বামী পূর্ব-পরিকল্পিত ভাবে সঙ্গে বিষ নিয়ে বিকালে হঠাৎ আবার আমার পিতার বাড়িতে আমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসে। ওই সময় স্বামীকে বলি আমার শরীরর খুব খারাপ, রবিবার সকালে বাড়িতে যাব।

এই কথা স্বামী শুনে আমাকে আবারও মারপিট করে মনের কষ্টে রাত ৮টার দিকে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। এব্যাপারে সরাসরি হাবিবুল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আমি কোন মাদক সেবন করিনা। আমি কখনও আমার স্ত্রীকে নির্যাতন করিনি। গত বৃহস্পতিবার চাচতো শালি বিয়েতে দাওয়াত খেতে এসে বুঝতে পার লাম আমার স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, সেই কষ্টে আমি বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলাম।