মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও সাধারণ জনগণের চাওয়া, সেঁজুতিকে এমপি হিসাবে পাওয়া

44
লায়লা পারভীন সেঁজুতি

মোঃ মামুন হোসেনঃ সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব ও আধুনিক সাতক্ষীরার রূপকার শহীদ স ম আলাউদ্দিনের তনয়া লায়লা পারভীন সেঁজুতি দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন । পাশাপাশি পত্র–পত্রিকা, অনলাইন পোর্টাল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব ও আধুনিক সাতক্ষীরার স্বপ্নদ্রষ্টা শহীদ স ম আলাউদ্দিনের তনয়া লায়লা পারভীন সেঁজুতি দলীয় প্রার্থীর সমর্থন অনেক বেশি লক্ষণীয়। পাশাপাশি আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন চিত্র জেলার সাধারণ মানুষের দুয়ারে ঘুরে ঘুরে লিফলেট, ব্যানার, পোষ্টার আকারে প্রচার করে যাচ্ছেন তা চোখে পড়ার মত ।

৩০ তারিখের নির্বাচনের আগ মুহুর্তে নৌকা প্রতীকে ভোট চাইতে নগর ঘাটা কবি নজরুল বিদ্যাপীঠে আসেন লায়লা পারভীন সেজুতি । দূর থেকে দেখতে পেয়ে কাদতে কাদতে ছুটে আসেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর আলী সরদার । দু–জনের চোখে এক অকৃতিম ভালবাসার অশ্রু । শত শত মানুষের মাঝে নিজেকে সামলে নিয়ে শান্তনা দিতে থাকেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর আলী সরদারকে ( আপনি কাদছেন কেন চাচা ? কি হয়েছে আপনার ? কেউ কি কিছু বলেছে ? আমাকে বলেন , এইতো আমি আপনার মেয়ে , আমি আছিতো চাচা বলতে বলতে বুকে জড়িয়ে চোখের পানি মুছে দিতে থাকলেন । মুক্তিযোদ্ধা নূর আলী সরদার বলেন, নারে মা তোমাকে আমি আমার মেয়ে নয় মায়ের মত ভালবাসি । দোয়া করি মহান আল্লাহ–পাক তোমাকে দীর্ঘায়ু দান করুন এবং সংরক্ষিত আসনে এমপি হিসেবে তোমাকেই দেখতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট এই আবেদন করি ) ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে যারা ভালবাসেন এটা তাদের বহি:প্রকাশ । আমি যে সাধারণ জনগণের হৃদয়ে ভালবাসার জায়গা করে নিতে পেরেছি সেটা আমার সৌভাগ্য । আমি নিজে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান আমার কাছে অনেক অনেক বেশি যেটা বলে বোঝাতে পারবোনা । আমি গর্বিত যে আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ।

পিতা হত্যা :  ঊনবিংশের শেষ দশকে অর্থাৎ ১৯৯৬ সালের ১৯ জুন রাত ১০.২৩ সাতক্ষীরার গণমানুষের নেতা, বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত আস্হা ও স্নেহভাজন, প্রাদেশিক পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, আধুনিক সাতক্ষীরার স্বপ্নদ্রষ্টা, দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা, ভোমরা স্থলবন্দরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি,চেম্বার অব কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা স,ম আলাউদ্দিনকে নিজস্ব পত্রিকা অফিসে তৎকালিন ক্ষমতালিপ্সুরা গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে। যে হত্যাকান্ডের বিচারের দীর্ঘ অপেক্ষায় সাতক্ষীরাবাসী।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ স,ম আলাউদ্দীন হত্যাকান্ডে সাতক্ষীরায় নেমে আসে শোকের ছায়া। গোটা পরিবারের সবকিছু থেমে যায়।

স.ম আলাউদ্দীন

নিজের সংক্ষিপ্ত জীবনী :
শহীদ স,ম আলাউদ্দীনের তৃতীয় কন্যা লায়লা পারভীন সেঁজুতি তখন কেবলি কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী। পিতা হত্যার শোককে শক্তিতে পরিণত করেই ঝাঁপিয়ে পড়েন জীবন যুদ্ধে। অনুস্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর বিদেশে অবস্হান করায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া দু’কন্যা বর্তমান বিশ্বের রোল মডেল ও বাংলাদেশের অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে। হাল ধরেন সংসারের, পরিবারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয় পত্রদূত পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়ার। কিন্তু বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সে বাঁধা উপেক্ষা করে দায়িত্ব নেন পত্রদূত পত্রিকার ।

লায়লা পারভীন সেঁজুতি

শত্রুদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে শত প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে লায়লা পারভীন সেঁজুতির অদম্য সাহসিকতায় সমাজের সাদা-কালো পার্থক্য নির্ণয়ে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও মুক্তযুদ্ধের চেতনায় পত্রদূত পত্রিকা আজও সাতক্ষীরার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে।

বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হাল ধরা :
সাতক্ষীরাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা পিতা শহীদ স,ম আলাউদ্দীন যিনি বঙ্গবন্ধুকে মনে প্রাণে ভালবাসতেন। তাইতো তিনি বঙ্গবন্ধুর নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ” বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়”প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। কিন্তু তাঁর অসময়ে চলে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি অস্তিত্ব সংকটে পড়ে।

লায়লা পারভীন সেঁজুতি লেখাপড়া শেষ করার আগেই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব রক্ষায় প্রধান শিক্ষক হিসাবে প্রতিষ্ঠানের গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। তাঁর সঠিক পরিচালনায় যা সুনামের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে।

লায়লা পারভীন সেঁজুতি

দাম্পত্য জীবন :
দাম্পত্য জীবনে স্বামী,সন্তান,সংসার সবকিছু সামলানোর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার মতো বাবার দেখানো পথে যাত্রা শরু করেছেন। কাছে থেকে সর্বক্ষণ সাহস যুগিয়েছেন সাতক্ষীরার আর এক নক্ষত্র সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি,চ্যানেল আই এ’র জেলা প্রতিনিধি, বিশিষ্ট আইনজীবি, তাঁর জীবনসঙ্গী এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ। যার সহযোগিতায় লায়লা পারভীন সেঁজুতি রাজনীতিতে পদার্পণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড সাতক্ষীরার প্রাণ লায়লা পারভীন সেঁজুতি :
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সুসংগঠিত করতে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড সাতক্ষীরা জেলার সদস্য সচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছেন জেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে। দিয়েছেন প্রত্যেকটি ইউনিয়নে নতুন কমিটি। প্রাণ ফিরে পেয়েছে সংগঠন। সূখে-দুঃখে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন সর্বক্ষণ। যে কারণে শুধু মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নয়, মুক্তিযোদ্ধাদের আস্হার ও স্নেহভাজন হয়ে উঠেছেন। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বে অতি অল্প সময়ে সংগঠনটি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

যে সংগঠনের ব্যানারে অতি সম্প্রতি সংঘঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরার চারটি আসনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি মহাজোট মনোনীত নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ভূমিকা রাখতে অনুঘটকের দায়িত্ব পালন করেছেন। কখনো সংগঠনকে সাথে নিয়ে আবার কখনো প্রার্থীদের সাথে সাতক্ষীরার চারটি আসনেই বিভিন্ন মিছিল-মিটিং ও সভা সমাবেশ সহ প্রচার-প্রচারণা চালাতে দিন-রাত ছুটে বেড়িয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র কিনেছিলেন ও মনোনয়ন চেয়েছিলেন। লায়লা পারভীন সেঁজুতি।

লায়লা পারভীন সেঁজুতি

সংরক্ষিত আসন (সাতক্ষীরা-৩১২) :
পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত লায়লা পারভীন সেঁজুতি কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। পিতা হত্যার বিচারের দাবীতে সাতক্ষীরার সুশীল সমাজকে সাথে নিয়ে বারবার রাজপথ কাঁপিয়েছেন।

সুমিষ্টভাষী,মার্জিত আচারণ, সততা নিষ্ঠাবান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে গঠনমূলক প্রতিবাদকারী এক মহীয়সী নারী লায়লা পারভীন সেঁজুতি।

পরিশেষে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছেন। যতবার এসেছেন ততবারই ভিন্ন ভিন্ন চমক দেখিয়েছেন।

সর্বশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে তরুণদের মনোনয়ন ও মন্ত্রীপরিষদ গঠনে ক্লিন ইমেজ ও তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে চমক দেখিয়েছেন।

তারুণ্য নির্ভর মন্ত্রীপরিষদ ও সংসদের পাশাপাশি সংরক্ষিত ( সাতক্ষীরা-৩১২ ) আসনটিতে সংসদ সদস্য হিসেবে
লায়লা পারভীন সেঁজুতিকে মনোনীত করলে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও সাতক্ষীরার জনসাধারণ কৃতজ্ঞ থাকবে।