মণিরামপুরে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষিকাকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ

14

প্রতিবাদ করায় নৈশ প্রহরীকে মারপিট। এলাকায় উত্তেজনা

আজিজুর রহমান, মণিরামপুর থেকে ফিরে :
মণিরামপুর উপজেলার গৌরীপুর গ্রামে গৌরীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কর্তৃক একই বিদ্যালয়ের ১ শিক্ষিকাকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা রিজিয়া খাতুন বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এদিকে ওই ১ শিক্ষিকার শ্লীলতাহানীর প্রতিবাদ করায় সহকারি শিক্ষক আবু শাহাদাৎ মারুফের ইন্দোনে এলাকার একটি কু-চক্রীমহল ওই বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী শরিফুল ইসলামকে মারপিট করে গুরুত্বর আহত করেছে। আহত নৈশ্য প্রহরীকে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় ওই কু-চক্রীমহল শ্লীলতাহানীর শিকার ওই শিক্ষিকা ও প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা চালাতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহস্পতিবার রাতে ওই বিদ্যালয়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ১১নং চালুয়াহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ শনিবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন। শনিবার দুপুরে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা রিজিয়া খাতুন সাংবাদিকদের জানান, ৮ আগস্ট পঞ্চম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ পরীক্ষা শেষে অফিস কক্ষে গেলে প্রধান শিক্ষক অফিসে না থাকার সুযোগে সহকারি শিক্ষক আবু শাহাদাৎ মারুফ জোর পূর্বক আমাকে একা পেয়ে শ্লীলতাহানী করে। এসময় আমি সম্মান রক্ষার্থে দৌড়ে বেরিয়ে আসলে সহকারি শিক্ষিকা মর্জিনা খাতুন আমার নিকট থেকে ঘটনাটি শুনে আবু শাহাদাৎ মারুফকে উক্ত ঘটনার প্রতিবাদ করায় আমাদের উপর চড়াও হয়। মর্জিনা খাতুন জানান, সহকারি শিক্ষক আবু শাহাদাৎ মারুফ প্রায় প্রতিদিন আমাকে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করত। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে আমি প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী শরিফুল ইসলাম বলেন, বুধবার অফিস কক্ষে রিজিয়া খাতুনের শ্লীলতাহানীর প্রতিবাদ করায় সহকারি শিক্ষক আবু শাহাদাৎ মারুফের ইন্দোনে এলাকার একটি কু-চক্রীমহল আমাকে মারপিট করে গুরুত্ব আহত করে। এব্যাপারে সহকারি শিক্ষক আবু শাহাদাৎ মারুফ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ পরীক্ষা সাড়ে ১২ টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল। এই সময়ে আগে চা পানের ওজুহাতে ১ কি: মি: দূরে স্থানীয় নেংগুড়াহাট বাজারে যান প্রতিষ্ঠানের প্রধান আনারুল কবীর। এদিকে রুটিন অমান্য করে আধা ঘণ্টা আগে ১২ টায় শিক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র দিয়ে দেন শিক্ষক মর্জিনা ও রিজিয়া। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় পরীক্ষা শেষে অফিস কক্ষে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে নৈশ্য প্রহরী শরিফুল ইসলামের সহযোগিতায় রিজিয়া খাতুন ও মর্জিনা খাতুন আমাকে জুতা পেটা করে এবং আমি রিজিয়া খাতুনকে শ্লীলতাহানী করার কোন প্রশ্নই ওঠেনা। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মূলক অভিযোগ দিয়ে হয়রাণী করছে। এব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনারুল কবীর বলেন, ঘটনার দিন অফিসিয়াল কাজে বাইরে থাকায় আমি কিছু জানিনা। পরের দিন বিদ্যালয়ে আসার পর শিক্ষিকাদের লিখিত অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি জানতে পারি। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সভাপতি ইকবাল হোসেন জানান, রিজিয়ার শ্লীলতাহানীর ঘটনার কথা প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন, শ্লীলতাহানীর ঘটনাটি শুনে শনিবার সকালে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।

এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসার মনিরা খানমের নিকট গৌরীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কর্তৃক একই বিদ্যালয়ের ১ শিক্ষিকাকে শ্লীলতাহানীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষিকা কোন অভিযোগ আমার নিকট করেনি। তবে ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবু শাহাদাৎ মারুফ বাদী হয়ে তাকে মারপিটের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। যা তদন্ত করা হয়েছে। ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।