পাটকেলঘাটা পারকুমিরায় গণহত্যা দিবস পালিত

70
পাটকেলঘাটা পারকুমিরায় গণহত্যা দিবস পালিত

রিপন হোসাইন,পাটকেলঘাটা ॥ পাটকেলঘাটা পারকুমিরা ঐতিহাসিক গনহত্যা দিবসটি বিভিন্ন কর্মসূচী মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯.৩০মি.শহীদদের স্বরনের মধ্য দিয়ে আনুষ্টানিক ভাবে শহীদ বেদীতে মাল্যদান,আলোচনা সভা,চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ,শহীদ পরিবারের সন্তানদের সম্মননা স্বারক প্রাদান,বিভিন্ন কর্মসূচী শুরু হয়।

গনহত্যা দিবস উৎযাপন কমিটির আহবায়ক তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এড. আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে ও জেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি সম আতিয়ার রহমানের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের সন্তান , পারকুমিরা গনহত্যা সংরক্ষন কমিটির সভাপতি ও তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার,তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীন, তালা সহকারী কমিশনার ভূমি অনিমেশ বিশ্বাস, জেলা কুষকলীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু, তালা উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান সরদার মশিয়ার রহমান,পাটকেলঘাটা অফিসার ইনচার্জ রেজাউল ইসলাম রেজা,খলিশখালী ইউপি চেয়ারম্যান সাংবাদিক মোজাফ্ফর রহমান।

বক্তব্য রাখেন,তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক শেখ আব্দুল হাই,পাটকেলঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ জহরুল হক, তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মাহবুব হোসেন মিন্টু, তালা উপজেলা ছাত্রলীগেরর সাধারণ সম্পাতক মশিউর আলম সুমন, উপস্থিত সহকারী অধ্যাপক আসাদুল হক,পাটকেলঘাটা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মো. রিপন হোসাইন প্রমুখ। বক্তরা বলেন, প্রধান অতিথি আজ ভয়াল ২৩ এপ্রিল এই দিনে পারকুমিরার গণহত্যা দিবস। পারকুমিরার একটি সম্মুখ যুদ্ধ। ১৯৭১সালের ২৩এপ্রিল পাটকেলঘাটার সন্নিকটে পারকুমিরা নামক স্থানে ৭৯জন গ্রামবাসীকে পাকসেনারা সেদিন ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে। এর মধ্যে ৪৯জনের লাশ পারকুমিরার বধ্যভূমিতে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়। কাশীপুর গ্রামের শেখ হয়দার আলীকে পাকসেনারা গায়ে পাট জড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে।

প্রধান অতিথি আরো বলেন, তার বক্তব্য সেদিনের বর্বরস্থ্য হত্যাযজ্ঞের লোমহর্ষক কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, সেদিন ছিল শুক্রবার। মসজিদে জুম্মার আযান হচ্ছিল এ সময় পাটকেলঘাটা থেকে পাকিস্তানী হায়নারা বীর দর্পে পারকুমিরায় গিয়ে নিরীহ গ্রামবাসীকে আলোচনার কথা বলে একত্রিত করে। এ সময় সহজ সরল গ্রামবাসীর উপর ব্রাশ ফায়ার করলে ঘটনাস্থলেই ৭৯জন নিহত হয়। এদের মধ্যে যশোর নওয়াপাড়া, চুকনগর, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা সহ বিভিন্ন এলাকার আশ্রয় সন্ধানে আশা স্মরনার্থীদের উপর নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়। অনুসন্ধানে বেশ কিছু এলাকার শহীদদের পরিচয় পাওয়া যায়।

সেদিন যারা শহীদ হয়েছিলেন- পাটকেলঘাটা থানার পুটিয়াখালী গ্রামের শহীদ শেখ আব্দুর রহমান, শহীদ শেখ আলাউদ্দীন, শহীদ শেখ সামছুর রহমান, শহীদ শেখ বদরুদ্দীন, মোঃ সালমত আলী, শেখ ফয়জুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, সাজ্জাত আলী, বেলায়েত আলী, শামছুর রহমান, আজিজুর রহমান, আব্দুস সামাদ, কাশীপুর গ্রামের শেখ হায়দার আলী, তৈলকূপী গ্রামের আব্দুর রউফ, পারকুমিরা গ্রামের বিজয় পাল, কলাগাছির কার্ত্তিক মন্ডল, পারকুমিরার ষষ্ঠি কুন্ডু ও বিজয় পাল। যাদের পরিচয় পাওয়া যায় তাদের অনেককে পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়। বাকী যাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি তাদেরকে পারকুমিরার ঐ বধ্যভূমিতে গণকবর দেওয়া হয়।

বর্তমান প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯২ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকাকালে কাশীপুর সফরকালে বক্তব্য প্রদানকালে পারকুমিরা স্মৃতি স্তম্ভ নির্মিত হবে। প্রধান মন্ত্রীর সেই আশ্বাসের আজ বাস্তবায়ন হতে চলেছে এরং নির্মিত হচ্ছে পারকুমিরা স্মৃতি স্তম্ভ । অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগন,শিক্ষক,কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেনির পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।