দেশের অর্থনীতির স্থায়ী উন্নয়নে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির বিকল্প নেই

18

মো: জাকারিয়া,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : অন্যের চাকরীর পিছনে ছুটতে ছুটতে যেখানে তরুণরা হতাশার গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে সেখানে দাঁড়িয়ে কিছু তরুণ স্বপ্ন দেখে নিজেই অন্যের জন্য চাকরীর ক্ষেত্র তৈরি করার। তেমনি নতুন উদ্যোক্তা তৈরির স্বপ্ন নিয়ে দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্ভব হচ্ছে। “স্টার্ট আপ টক চট্টগ্রাম” তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান।

কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির পিছনে শিল্প- প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অগ্রগণ্য। কিন্তু আমরা নতুন নতুন শিল্প কারখানার দিকে না যেয়ে চাকরীর পিছনে ছুটে চলি। তবুও কিছু তরুণ উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্ঠা করলেও বিভিন্ন সংকটের মাধ্যে বেশীদূর যেতে পারে না। ফলে অল্পতেই আশাহত হয়ে যায়। ফলে তার প্রজেক্ট বেশীদিন রান করে না।

এই সকল নবীন তরুণ উদ্যক্তাদের দিক নির্দেশনা দিতে আরাফাতুল ইসলাম আকিব প্রতিষ্ঠা করেন “স্টার্ট আপ টক চট্টগ্রাম”। প্রতিষ্ঠাতা আকিব জানান চট্টগ্রাম স্টার্ট আপ প্রজেক্ট তরুণ উদ্যক্তাদের ফান্ডিং, মেন্টরিং, তাদের বিভিন্ন সহযোগী পার্টনারদের মাধ্যমে চট্টগ্রামের উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করবে। তাছাড়াও এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চট্টগ্রামের তরুণদের বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্ট, ব্যবসায়িক আইডিয়া কন্টেস্ট, উদ্যোক্তাদের হাভ তৈরিতে কাজ করবে।

এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে “স্টার্ট আপ টক চট্টগ্রাম” গত ৯ নভেম্বর ২০১৮ চট্টগ্রামের প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজন করে “চট্টগ্রাম স্টার্ট আপ”।

অনুষ্ঠানে ঢাকা সহ সারা বাংলাদেশ থেকে দেশ সেরা উদ্যোক্তা ও ব্যবসায় পরিকল্পনাবীদেরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে স্পিকার হিসাবে ছিলেন আই সি টি ডিভিশন স্টার্ট আপ বাংলাদেশের , ওয়েল গ্রুপের, যে সি আই ঢাকা ইন্ট্রাপ্রেনিউরস ও প্রগতি গ্রুপের বেসিসের, বাককো, চিটাগাং ওমেন্স চেম্বারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন উদ্যোক্তারা।

ওইদিন চট্রাগ্রামে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্টার্ট আপ চট্টগ্রাম উদ্ভোধন করা হয়। যেটা কিনা তরুণ উদ্যোক্তা এবং ছাত্র- ছাত্রীদের স্কিল উন্নয়নে কাজ করবে।

সম্প্রতি প্রকাশিত হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (HSBC) গ্লোবাল রিসার্চে সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) নিরিখে বিশ্বের ২৬তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে যেখানে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ৪২তম। ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইন ২০৩০: আওয়ার লং-টার্ম প্রজেকশনস ফর ৭৫ কান্ট্রিজ’ শিরোনামের এই রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান ১৬ ধাপ উন্নীত হবে। যা বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় অধিক।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যে উদ্যোক্তা সৃষ্টির বিকল্প নেই। উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্যে “স্টার্ট আপ টক চট্টগ্রাম”এর মত প্রতিষ্ঠানের বিকল্প নেই। যত বেশী সংখ্যক এমঅন প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হবে দেশে তত বেশী নতুন নতুন উদ্যোক্তার সৃষ্টি হবে। এই প্রতিষ্ঠানের আয়োজিত “স্টার্ট আপ টক চট্টগ্রাম” নামক আনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের থেকে তরুণ উদ্যোক্তারা যে বাস্তব জ্ঞান লাভ করেছে তা তার প্রজেক্ট পরিচালনায় ভূমিকা রাখবে। এমন অনুষ্ঠান দেশ ব্যাপি ছড়িয়ে দিতে পারলে তরুণদের চাকরীর পিছনে ছুটার হার কমে যাবে। নিজেরাই স্বাবলম্বি হতে চেষ্ঠা করবে। এতে করে একসময় আমাদের সোনার বাংলাদেশ বিশ্বের অনন্য অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। তরুণদের নেওয়া প্রজেক্টগুলোর প্রতি সরকারের সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের সরাসরি সহযোগীতার প্রয়োজন। তবেই নতুন উদ্যোক্তার সৃষ্টি হবে।