আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা হামলা চালিয়ে মহিলাসহ ১১ জনকে মারপিঠ করে গুরুতর আহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে ৩ জনকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ৭ জন স্থানীয় চিকিৎসা নিয়েছে।
জানা গেছে ৪৪ শতক জমি বন্ধক রাখা ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা হামলা চালিয়ে ৪ জনকে মারপিঠ করে গুরুতর আহত করেছে। এরমধ্যে ১ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ৩ জন স্থানীয় চিকিৎসা নিয়েছে। উপজেলার ভরত-ভায়না গ্রামের মৃত আলহাজ্ব তমিজউদ্দীন শেখের ছেলে দলিল উদ্দীন শেখ সাংবাদিকদের জানান, গত ২ বছর আগে আমার আপন ভাই আব্দুল হালিম শেখের কাছ থেকে আপন ভাই আব্দুল হান্নান শেখ ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ৪৪ শতক জমি বন্ধক রাখে।
বন্ধক রাখা ওই জমি ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য রবিবার সকালে আমার ভাই আব্দুল হালিম শেখ আমাকে ও আমার ছেলে আসাদুজ্জামান শেখ, ভাই আব্দুল মান্নান শেখকে সঙ্গে নিয়ে ভাই আব্দুল হান্নান শেখের বাড়িতে টাকা ফেরত দিতে যায়। হান্নান শেখ জমি ফেরত দিবে না বলে কথা কাটা-কাটির একপর্যায়ে আব্দুল হান্নান শেখ, তার ছেলে বাবু শেখ মিলে বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় আহত হয় দলিল উদ্দীন শেখ (৬৪), আব্দুল হালিম শেখ (৫২), আব্দুল মান্নান শেখ (৪২), আসাদুজ্জামান শেখ (৩২)। এর মধ্যে আসাদুজ্জামান শেখকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আব্দুল হালিমের বক্তব্য নেওয়ার জন্য বারবার ফোন দেওয়া হলেও সে ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এব্যাপারে আব্দুল হান্নান শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ১ মাস আগে আব্দুল হালিম শেখ বন্ধক রাখা জমি ছাড়িয়ে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ১ মাস পার হলেও বন্ধক রাখা জমি ছাড়িয়ে নেয়নি। আমি অবশেষে উপায় না পেয়ে ওই জমিতে মাছ চাষের জন্য মাছ ছাড়ি। হঠাৎ তারা রবিবার সকালে আমার বসত বাড়িতে এসে টাকা ফেরত দেওয়া তো দূরের কথা আমাকে বেদম মারপিঠ শুরু করে।
এসময় আমার স্ত্রী নাজমুন্নাহার (৪০), ছেলে বাবু শেখ (১৭), মেয়ে তানিয়া খাতুন (২২) ঠেকাতে আসলে তারা লাঠি, লোহার রড দিয়ে আমাদের ৪ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার পর তারা আমাদেরকে ভয়-ভিতি হুমকি দিয়ে বলে, ওই জমিতে আমরা মাছ ছাড়বো। যদি বাঁধা দিতে আসিস তাহলে আবারও তোদেরকে মারপিঠ করবো। আমরা ৪ জনই স্থানীয় চিকিৎসা নিয়েছি। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলে আহত দলিল উদ্দীন শেখ ও আহত আব্দুল হান্নান শেখ জানান।
বক্তব্য নেওয়ার জন্য বারবার ফোন দেওয়া হলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা হামলা চালিয়ে মহিলাসহ ৩ জনকে মারপিঠ করে গুরুতর আহত করেছে। এর মধ্যে ২ জনকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ১ জন স্থানীয় চিকিৎসা নিয়েছে। উপজেলার সন্যাসগাছা গ্রামের মুনছুর আলী সরদারের সাথে একই গ্রামের সিদ্দিক সরদারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি জায়গা ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পূর্ব শত্রুতা চলে আসছিল।
এরই জের ধরে শনিবার দুপুরে মুনছুর আলী সরদার ও সিদ্দিক সরদারের মধ্যে কথা কাটা-কাটি শুরু হয়। কথা কাটা-কাটির একপর্যায়ে সিদ্দিক সরদার, তার ছেলে আব্দুস সাত্তার সরদার, আবু সাঈদ সরদার মিলে বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে সিদ্দিক সরদারের স্ত্রী কুলসুম বেগম (৫০), মেয়ে তানিয়া খাতুন (২০), আন্না খাতুন (২৪) কে মারপিঠ করে গুরুতর আহত করে।
এর মধ্যে তানিয়া খাতুন ও আন্না খাতুনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেশবপুর থানায় অভিযোগের প্রস্তুতি চলছিল বলে মুনসুর আলী সরদার জানান।
এ ব্যাপারে সিদ্দিক সরদারের বক্তব্য নেওয়ার জন্য বারবার ফোন দেওয়া হলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।