কেশবপুরে বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২ পক্ষের সংঘর্ষ মহিলাসহ আহত- ২৪

14
লাল সবুজের কথা- Lal Sobujer Kotha

আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২ পক্ষের সংঘর্ষে মহিলাসহ ২৪ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জনকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভান্ডারখোলা ফতেহপুর গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিন শেখের ছেলে আব্দুল গফুর শেখের সাথে একই গ্রামের মৃত শামছুর রহমান শেখের ছেলে নাছিরুদ্দিন শেখের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে শনিবার সকালে আব্দুল গফুর শেখ ও নাছিরুদ্দিন শেখের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। কথা কাটির একপর্যায়ে ২ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে আহত হন আব্দুল গফুর শেখ (৩৪), তার ভাই হাবিবুর রহমান শেখ (৩০), মোখলেছুর রহমান শেখ (২৪), নাছিরুদ্দিন শেখ (৬০), তার ভাই আলাউদ্দিন শেখ (৫৩), শরিফুল ইসলাম শেখ (৪০), মণিরুল ইসলাম শেখ (৩৬)। এরমধ্যে আব্দুল গফুর শেখ ও মোখলেছুর রহমান শেখকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেশবপুর থানায় কোন লিখিত অভিযোগ হয়নি বলে ২ পক্ষের সূত্রে জানা গেছে। এদিকে তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২ পক্ষের সংঘর্ষে মহিলাসহ ৯ জন আহত হয়েছে। এরমধ্যে ৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার চিংড়া ফতেহপুর গ্রামের মৃত কওছার আলী মোল্যার ছেলে আব্দুল করিম মোল্যার সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুল বারিক মোড়লের ছেলে মামুন মোড়লের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।

এরই জের ধরে শুক্রবার বিকালে আব্দুল করিম মোল্যা ও মামুন মোড়লের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। কথা কাটাকাটির এপর্যায়ে ২ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে আহত হন আব্দুল করিম মোল্যা (৪০), রহিম মোল্যা (২৮), ইদ্রিস আলী মোল্যা (২৫), রহিমা বেগম (৪০), জেসমিন বেগম (৩০), হামিদা বেগম (৬৫), জোসনা বেগম (২৫), তার মেয়ে রহিমা খাতুন (১৩), মামুন মোড়ল (৩০), তার স্ত্রী জীবন্নাহার বেগম (২২), আব্দুল বারিক মোড়ল (৬৫), তার স্ত্রী নবীজান বেগম (৫০)। এরমধ্যে হামিদা বেগম ও জোসনা বেগম, জীবন্নাহার বেগম, আব্দুল বারিক মোড়ল, নবীজান বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

অপরদিকে তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলার বুড়িহাটি গ্রামের লিয়াকত আলী সরদারের ছেলে এনায়েত আলী সরদারের সাথে একই গ্রামের ইনায়েত আলী সরদারের ছেলে আবুল কালাম সরদারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে শুক্রবার সকালে আবুল কালাম সরদার, জিয়ারুল সরদার, তরিকুল সরদার, আমিনুর সরদার, সিরাজুল সরদার, পীর আলী সরদার মিলে এনায়েত আলী (৩৫) কে লাঠি দিয়ে মারপিঠ করতে থাকে। এসময় একই গ্রামের আজব আলী সরদারের ছেলে রুবেল সরদর ঠেকাতে গেলে তাকেও তারা মারপিঠ করে। এরমধ্যে এনায়েত আলী (৩৫) কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় এনায়েত আলী সরদার বাদী হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে কেশবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে আবুল কালাম সরদারের বক্তব্য নেওয়ার জন্য বারবার ফোন দিলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে পাঁট জাগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা স্বামী স্ত্রীকে মারপিঠ করে গুরুতর আহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে ১ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাবদিয়া গ্রামের আকব্বার সরদারের ছেলে শহিদ সরদার ও তার ভাই আজিজুর রহমান সরদারের বাড়ির পাশে একটি পুকুর রয়েছে। ওই পুকুরে গত বুধবার সকালে ২ ভাই মিলে পাট জাগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আজিজুর সরদার, তার ছেলে হারুন সরদার, প্রতিবেশী শহিদুল ইসলাম সরদারের স্ত্রী জামেলা বেগম মিলে বাশের লাঠি দিয়ে শহিদ সরদারের বসতবাড়ির উপরে যেয়ে তার স্ত্রী নূর নাহার বেগম (৩৮) কে মারপিঠ করে গুরুতর আহত করে।

এসময় প্রতিপক্ষরা শহিদ সরদারের বসতবাড়ি ভাংচুর করতে থাকলে শহিদ সরদার (৪৫) ঠেকাতে আসলে প্রতিপক্ষরা তাকেও মারপিঠ করে আহত করে। এরমধ্যে নূর নাহার বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেশবপুর থানায় কোন লিখিত অভিযোগ হয়নি বলে শহিদ সরদার জানান। এব্যাপারে আজিজুর সরদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের সাথে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়েছে।