মোঃ জাকির হোসেন, শার্শা প্রতিনিধিঃ ৭ই মার্চ ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালিকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রস্তুত করেছিলেন -শেখ আফিল উদ্দিন । যশোরের শার্শা উপজেলায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
সকালে বর্ণাঢ্য র্যালি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অস্থায়ী পতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে দিনটি শুরু হয়। এই উপলক্ষে বিকাল ৪টার সময় শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিলের সঞ্চালনায় ও শার্শা উপজেলার চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জুর সভাপতিত্বে নাভারন ডিগ্রী কলেজ মাঠে বিশাল এক জনসভার আয়োজন করা হয়।এতে প্রধান অতিথীর মঞ্চ আলোকিত করেন যশোর-১, শার্শা আসনের সংসদ সদস্য শেয আফিল উদ্দিন। জনসভার প্রধান আলোচকের ভূমিকা পালন করেন শার্শা উপজেলার আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান ।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ স্বরনে প্রধান অতিথী শেখ আফিল উদ্দিন এমপি বলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণে দীর্ঘ ২২ বছরের রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরেছিলেন। এ ভাষণের মাধ্যমে তিনি নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালিকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রস্তুত করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধুকে রাজনীতির কবি হিসেবে বর্ণনা করে এমপি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ হলো তার অমর কাব্যমালার অনন্য নিদর্শন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শুধু ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতিকেই অনুপ্রাণিত করেছিল তা নয়, বরং এই ভাষণ যুগে যুগে বিশ্বের সকল অবহেলিত, বঞ্চিত ও স্বাধীনতাকামী জাতি-গোষ্ঠীকে অনুপ্রেরণা যোগাতে থাকবে। এ কারণেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের বিষয় নিয়ে যতটা সম্ভব বিতর্কমুক্ত থাকতে পারবো ততটাই আমাদের জন্য মঙ্গলজনক। স্বাধীনতার যে মূল দর্শন রয়েছে, এখনও আমরা তা পুরোপুরি অর্জন করতে পারিনি। স্বাধীনতার যে সার্ব মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, শোষনমুক্ত সমাজ ব্যবস্থার যে স্বপ্ন জাতির জনক দেখেছিলেন যে বাঙালিরা হাসবে, বাঙালিরা খেলবে, বাঙালিরা পেট ভরে খাবে কিন্তু আমাদের দেশে এখনও এমন মানুষ রয়েছে যারা খোলা ছাদের নিচে বাস করে, না খেয়ে দিন পার করে। তাই তার সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার পেছনে আমাদের একটি দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই দায় থেকে কিভাবে এই জাতিকে মুক্ত করবো তা নিয়ে ভাবতে হবে।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটাকে ‘মিরাকল ’বা অলৌকিক ঘটনা বলে আখ্যা দিয়েছে প্রধান অতিথী৷
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভূয়সী প্রশংসা করেন এমপি শেখ আফিল উদ্দিন । তিনি বলেছেন, দেশের সব অর্জন ‘আওয়ামী লীগের হাত ধরেই’ এসেছে। দেশ আজ ‘উন্নয়নের মহাসড়কে’ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কূটনৈতিক সমাধান অর্জনের মধ্য দিয়ে তিনি ‘বিশ্বমাতৃকার আসনে সমাসীন’ হয়েছেন।
এ ছাড়াও আওয়ামীলীগ সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ এবং বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে৷
’ তিনি আরও বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়ে গেছে।
শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। দলের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না বলে তিনি হুশিয়ারী দেন। ইউনিয়ন ভিক্তিক গ্রুপিং করবেন না, কারন শেখ হাসিনা আমাকে পাঠিয়েছে আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করতে ৷ লক্ষ থাকবে একটায় গ্রুপ শেখ হাসিনা গ্রুপ।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন যশোর জেলার আওয়ামীলীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আসিফ-উদ-দৌলাহ অলোক সরদার, শার্শা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আলেয়া ফেরদৌস, বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব এনামুল হক মুকুল সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন, বাঁগআচড়া ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল, শার্শার ইউপি চেয়ারম্যান ও শার্শা উপজেলা যুবলীগের সেক্রেটারী মোঃ সোহরাব হোসেন, শার্শা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও যশোর জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ অহিদুজ্জামান অহিদ, কায়বা ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ হাসান টিংকু, শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম সর্দার ও সেক্রেটারী মোঃ ইকবাল হোসেন রাসেল।