হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় প্রজাতির বিচিকলা

272
বিচিকলা
বিচিকলা

নিজস্ব প্রতিনিধি: ছয়ঋতুর এই দেশে প্রায় হারিয়ে গেছে দেশীয় প্রজাতির ডয়াকলা( বিচি কলা)এখন আর কোথাও দেখা মেলেনা এই বিচি কলা বা বিচিকলা গাছের। এক সময় সবজি হিসাবে খুব সুস্বাদু খাবার ছিল এই বিচিকলা। আধুনিক যুগে কৃষি নির্ভর এই দেশে উন্নত মানের কৃষি প্রযুক্তির ছোয়াই বিদেশী হাইব্রিড সহ নানা উন্নতমানের বিভিন্ন প্রজাতির কলা জাতের আগমনের ফলে মানুষ এখন ভুলেই গেছে দেশীয় বনোজ,ফলজ জাত ও চাষ পদ্ধতি। একদম মনেই নেই প্রকৃতিতে তৈরী হওয়া দেশের এই সকল খাদ্যের কথা। মানবদেহের যে কত বড় উপকারিতা বিচিকলায় আছে তা এখনকার সমাজ না জানলেও ৭০-৮০ দশকের পূর্ববর্তি মানুষেরা ধারণা রাখতো।

হারিয়ে যেতে বসা বিচিকলা শুধু মানবদেহের জন্য উপকারে আসতো না। বিচিকলা গাছে ছিলো মহা উপকারিতা এক সময় পাকারাস্তার পাশে রোপন করা হতো বিচিকলা গাছ যানবাহনের কালো ধুয়া(কার্বনডাইঅক্্রাইড)খুব সহজেই শোষণ করে নিতেন। পরিবেশ ও ভারসাম্য রক্ষা করতে কলা গাছের জুড়ি ছিলনা। নদী মাতৃক বাংলাদেশে বছরে কয়েকবার প্রলয় ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে,আর এই ঝড়ের কবল থেকে ঘরবাড়ি রক্ষা করতে মানুষ বাড়ির আনাছে কানাছে বিচিকলা গাছ রোপন করতেন।বিচিকলা গাছের গুনাবলি বলে শেষ করা যাবে না বিচিকলা কাঁচা থাকতে তরকারি আর পেঁকে গেলে পাঁকা কলার কদর ছিলো আলাদা। কাঁচা কলা ইলিশ মাছের জন্য খুব উপযোগী তরকারী ছিলো বিচিকলা আর ইলিশ মাছের তরকারির স্বাদ ছিলো আলাদা। তাছাড়া বিচিকলা ঈদ পর্বণে অতিথি আপ্যায়নে ছিলো যথেষ্ট প্রচারণা চালের গুড়ার সাথে পাঁকা বিচিকলা দিয়ে গরুর দুধ একত্রে মিশিয়ে পায়েশ (নোম) তৈরী করে অতিথি আপ্যায়ণ করতেন বাংলার রমণীরা।

তালার মারফাতি ফকির সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম খাঁ বুধো বলেন প্রতি বছর কৃষি মেলার সময় হারিয়ে যাওয়া এই ডয়াকলা (বিচিকলার) প্রদর্শনী করলে তরুণ সমাজ এই বিচিকলাকে চিনতে পারবে এবং এই জাতের কলাগাছ কে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে।

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুর বলেন,প্রকৃতির নিয়মে এবং হাইব্রিড সহ নানা উন্নতমানের বিভিন্ন প্রজাতির কলা জাতের আগমনের ফলে এই দেশিয় প্রজাতির বিচিকলা হারিয়ে যাচ্ছে। কৃষি গবেষনা কেন্দ্র থেকে হারিয়ে যেতে বসা এই স্থানীয় প্রজাতির বিচিকলা কে বাঁচাতে এবং বিস্তার লক্ষে কাজ করলে আবারো এই কলা বিস্তার লাভ করবে।