সিরিয়াসলি না পড়েই বিসিএসে প্রথম হলেন উর্মিতা!

38

অনলাইন রিপোর্ট: বিসিএস দেয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না তার। টার্গেট ছিল সার্জারিতে ক্যারিয়ার গড়বেন। এজন্য প্রস্তুতিও নেননি ওইভাবে। মোটামুটি পড়াশোনা করেই ৩৭তম বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্যাডারে প্রথম হলেন তিনি।

বলছিলাম উর্মিতা দত্তের কথা। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে উর্মিতা প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকও লাভ করেছিলেন।

বলছিলাম উর্মিতা দত্তের কথা। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে উর্মিতা প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকও লাভ করেছিলেন।

উর্মিতা বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিউরোসার্জারি বিষয়ের রেসিডেন্ট হিসেবে উচ্চতর প্রশিক্ষণ (এমএস) গ্রহণ করছেন।

এক প্রতিক্রিয়ায় উর্মিতা জানান, আমি বিসিএসে আশাবাদী ছিলাম না। আসলে আমি সার্জারিতে ক্যারিয়ার করব তো সেজন্যই মূলত বিসিএস দেয়া। এটার জন্য যে খুব সিরিয়াসলি পড়াশোনা করা হয়েছে, তা কিন্তু না। মোটামুটি পড়াশোনা করেছি, তার মধ্যেই হয়ে গেছে। আমি মনে করেছিলাম পাস করব হয়তো। কিন্তু এত বড় সাফল্য পাব সেটা চিন্তাও করিনি। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে উর্মিতা দত্ত মেডিভয়েসকে বলেন, আমি বিএসএমএমইউতে নিউরোসার্জারিতে রেসিডেন্টে আছি। ওটা কমপ্লিট করব। আর আমার ইচ্ছা আছে, নিউরোসার্জারিতে দেশের বাইরে থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার।

বেড়ে ওঠার গল্প উর্মিতার বাবা উত্তম দত্ত একজন ব্যবসায়ী। মা শিখা দত্ত গৃহিণী। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়েছেন ১২ বছর। ভালো ফলাফল করতেন সেখানেও। এসএসসি আর এইচএসসি দুটোতেই ছিল গোল্ডেন জিপিএ। ভবিষ্যতে শল্যচিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন যশোরের মেয়ে উর্মিতা। বড় হয়েছেন ঢাকায়।

সরকারি চাকরি দিয়ে পেশাজীবন শুরু করে দেশের মানুষের পাশেই থাকার ইচ্ছা উর্মিতার। শল্যচিকিৎসায় গবেষণার ব্যাপারেও রয়েছে তার ব্যাপক আগ্রহ। অনিরাময়যোগ্য রোগ নিয়েও কাজ করার ইচ্ছা আছে। রাস্তার পাশে জন্মগত ত্রুটি নিয়ে বেড়ে ওঠা অসহায় শিশুদেরও সাহায্য করতে চান। সুযোগ পেলে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যেতে চান।

বুয়েটে চান্সের পর চিকিৎসা পেশায় আসার গল্প

পরিবারের সদস্যরা চেয়েছিলেন মেয়ে ঢাকা মেডিকেলে পড়ুক। আর উর্মিতা চেয়েছিলেন বুয়েটে পড়তে। তিনি চান্সও পেয়েছিলেন বুয়েটে। শেষ পর্যন্ত মা-বাবার ইচ্ছানুযায়ীই ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে।

এ ব্যাপারে উর্মিতার কথা ‘প্রথম দিকটায় কষ্ট হতো খুব। তবু পরিবারের কথা ভেবে মেনে নেই। প্রথম টার্ম পরীক্ষায় প্রথম হলাম। পরেরগুলোতেও ভালো করলাম। ধীরে ধীরে ডাক্তারিবিদ্যাকে যেন আপন করে নিলাম। ’

অবসরে ফুল গাছের যত্নআত্তি অবসরে তিনি সিদ্ধেশ্বরীর বাসার বারান্দায় ফুল গাছের যত্নআত্তি করে সময় কাটান। গল্পের বইও পছন্দ তার। সময় পেলে এখনো রবীন্দ্রনাথের ‘গল্পগুচ্ছ’ পড়েন।

উর্মিতার যত সাফল্য ২০০৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস (ইইই) বিভাগে পড়ার সুযোগ পান উর্মিতা। পরে মেডিকেলের তিনটি পেশাগত (প্রফ) পরীক্ষাতেই প্রথম স্থান অধিকার করেন।

উর্মিতার যত সাফল্য ২০০৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস (ইইই) বিভাগে পড়ার সুযোগ পান উর্মিতা। পরে মেডিকেলের তিনটি পেশাগত (প্রফ) পরীক্ষাতেই প্রথম স্থান অধিকার করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৬৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী উর্মিতা শুধু তিনবার প্রথমই হননি, প্রতিবারই পেয়েছেন অনার্স। প্রথম পেশাগত পরীক্ষায় অনার্স পেলেন ফিজিওলজি আর বায়োকেমিস্ট্রিতে। দ্বিতীয় পেশাগত পরীক্ষায় অনার্স পেয়েছেন মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাকোলজি, ফরেনসিক মেডিসিন আর কমিউনিটি মেডিসিনে।

শেষ পেশাগত পরীক্ষায়ও মেডিসিন আর গাইনি ও অবস বিষয়ে পেয়েছিলেন অনার্স মার্কস। চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক লাভসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন উর্মিতা।