সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ!

494
সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ!

নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন শিক্ষিত স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়া। সেই লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মান করা হয়েছে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আর এই যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরীতে সারাদেশব্যাপী যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোকে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষন কেন্দ্রে আসছে বরাদ্দের টাকা। যার বরাদ্ধকৃত অর্থ সঠিক ভাবে ব্যায় হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সরকারের গৃহীত কোনো প্রদক্ষেপ আলোর মুখ দেখছে না দীর্ঘদিন ধরে। একই কর্মস্থলে দীর্ঘ সময় কাজ করার সুবাধে বিভিন্ন মধ্যস্বত্বভোগীদের সঙ্গে ঐ যুব কর্মকর্তা সখ্যতা গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ৩ মাস মেয়াদী গবাদী পশু পালন, পোল্ট্রি চাষ ও প্রাথমিক চিকিৎসা বিষায়ক প্রশিক্ষণ চলমান। প্রতি ব্যাজে ৬০ জন শিক্ষার্থী থাকার কথা থাকলেও উপস্থিত নেই অনেকেই। গরু পালনের সেড আছে, নেই গবাদী পশু। পুকুর আছে, মাছ নেই। পোল্ট্রির খামার থাকলেও নেই কোন মুরগী। হাতে কলমে প্রশিক্ষণের বিষয় শেখার কথা থাকলেও নেই পর্যাপ্ত উপকরণ। প্রশিক্ষার্থীদের বিভিন্ন খামারে নিয়ে ব্যবহারিক ক্লাস করানোর জন্য রয়েছে সরকারি যানবহন। কিন্তু সেটি ব্যবহার হয় ভিন্ন কাজে। যার সুবিধা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা। ৩০জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ১১জন প্রশিক্ষক থাকার কথা থাকলেও সবমিলে রয়েছেন মাত্র ২জন। তাদের মধ্যে প্রশিক্ষক আসাদুজ্জামানের পোস্টিং মাগুরায় ও অপরজন আব্দুল কায়ুমের পোস্টিং বরগুনায়। সেখান থেকে তারা বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। আর এখানে ক্লাস নেন তারা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য কোয়ার্টার থাকার সত্বেও ডিডি রফিকুল ইসলাম থাকেন একাডেমিক ভবনের রুম দখল করে। তিনি বিভিন্ন সময় কাজের কথা বলে মাসের অধিকাংশ সময় ঢাকায় কাটান বলেও অভিযোগ।

সাতক্ষীরা যুব উন্নয়নে প্রশিক্ষণ নেওয়া নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক প্রশিক্ষনার্থীদের অভিযোগ, যুব প্রশিক্ষনে প্রতিদিন ব্যবহারিক ক্লাস করানোর কথা থাকলেও তা ঠিকমত করানো হয় না। শুধু তাই নয়, ক্যান্টিনের জন্য বরাদ্দের টাকা লুটপাট হচ্ছে। এতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। প্রশিক্ষন কেন্দ্রের খামারটি ব্যবহারিক কাজে ব্যবহৃত হওয়ার কথা থাকলেও নেই কোন খামার ব্যবস্থা। হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথার সাথে কাজের মিল নেই। এর আগে ২টি ব্যাচে ১০০ জন শিক্ষার্থীকে নাম মাত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কি বা শেখবে তারা? ডিডির ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষা করতে নামমাত্র এমন প্রশিক্ষণ পরিচালিত হচ্ছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অতিরিক্ত দায়িত্বরত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। জনবল নিয়োগ না হওয়ায় এটি সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে একটু সমস্যা রয়েছে। তাছাড়া কেন্দ্রে ব্যবহারিক শিক্ষার উপকরণ না থাকায় বাহিরের সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়ে গিয়ে সেটি সম্পন্ন করা হয়। আমি নিজের উদ্যোগে বাহিরের প্রশিক্ষক এনেও প্রশিক্ষণ করায়। আমি জানি কারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। আমার জায়গা থেকে আমি ঠিক আছি।