নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলা কাউন্সিলে বাংলাদেশ জাসদ কেন্দ্রীয় সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, দ্রব্যমুল্যের অস্বাভাবিক উর্ধগতি, ভোটার বিহিন নির্বাচন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে উদ্ভুত সংকট, দীর্ঘসময় ধরে অস্বাভাবিক পথে ক্ষমতায় বিদ্যমান সরকারের নানাবিধ অনাচারের ফলে সৃষ্ট আন্তর্জাতিক চাপ, প্রভাব বলয় বিস্তৃতির চেষ্টায় ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যে এখন আমরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করছি।
এখনো সরকার ও ক্ষমতাসীন দল জনবিচ্ছিন্ন কর্তৃত্বপরায়ন রাজনীতির পুরোনো ধাঁচেই চলছে এবং নির্বাচন কমিশন গঠনে নতুন কিছুই নেই। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন নিয়ে সরকার ও তার হুদা কমিশন যে অনাচার ও অন্যায় করেছে তা বরদাস্ত করা যায় না। এমনকি কোর্টের নির্দেশনাও তারা মানছে না। গনতন্ত্রের স্বার্থে এসব জায়গায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্দ করতে হবে। জনগনের আস্থা অর্জনে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নির্বাচনকালিন সরকার বিষয়কে পাশ কাটানোর কোন সুযোগ তৈরি হবে না। নির্বাচনকালিন সরকার বিষয়ে সরকারের উচিত অন্যান্য দলের সংগে আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যমতে পৌছা। সরকার তা করতে ব্যর্থ হলে দেশের যে অকল্যাণ হবে সেজন্য ক্ষমতাসীনরা দায়ী হবে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে লুটপাটের রাজনীতি জনগন আর বরদাস্ত করবে না। জনগন আজ বুঝতে পেরেছে, আওয়ামীলীগ ক্ষমতা আর টাকাকড়ি চেনে, জনগনকে তারা আর চেনে না, রাষ্ট্রীয় কল্যান ও জনস্বার্থ তারা ভুলে গিয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনীতির কথা যারা বলেন তাদের উচিৎ জামাতকে নিষিদ্ধ করা। সাম্প্রদায়িক শক্তি সমুহকে জিইয়ে রেখে বা ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক শক্তিকে বিভক্ত ও দূর্বলতা করার নীতি দেশের জন্য আত্মঘাতী হবে। যুদ্ধাপরাধী বিচারের পর এই কৌশলের অবসান হওয়া উচিত।
আমরা মনে করি, ১৪ দল আমাদের অতীত। এই জোট দিয়ে দেশকে পাকিস্তানি ধারায় ফেরত নেয়ার অপচেষ্টা রোখা হয়েছে। ক্ষমতার স্বার্থে এই জোট দিয়ে গনতন্ত্রের কবর খোড়া উচিত নয়। দেশকে শক্ত ও গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে নতুনভাবে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দুর্বৃত্ত ও লুটপাট বান্ধব রাজনীতি যারা করে গণতন্ত্র, ন্যায়নীতি, সমতা ভিত্তিক সমাজ তারা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। গত এক দশকে যে উন্নয়ন হয়েছে তা অনেক কম খরচে তা করা যেত, বড় রকমের লুন্ঠন ও অপচয় এসব উন্নয়ন প্রকল্পে হয়েছে। এই সরকার লুটেরা দুর্বৃত্তদের রক্ষা করে চলেছে। সংগ্রাম করেই এই অবস্থার অবসান করতে হবে।
তিনি কর্মীদের আদর্শভিত্তিক দল গড়ে তোলার আহবান জানান। নতুন প্রজন্মকে সমতা ও গনতন্ত্রের আদর্শে উদজীবিত করার কথা বলেন।
রাজধানী থেকে অনেক দূরে অবস্থিত সাতক্ষিরা জেলার রেলযোগাযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যবসাবাণিজ্য বিস্তৃত করার জন্য জেলা সংগঠনের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
জেলার দলীয় সভাপতি কাজেম আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় আরো বক্তৃতা করেন কেন্দ্রিয় নেতা আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, রফিকুল হক খোকন, অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, তালা উপজেলার সাবেক সভাপতি দেবাশীষ দাস, তালা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শাহিনুর রহমান শাহিন, শাহজাহান আলী সাজু,যুবজোট নেতা আবু সেলিম,মামুন, ছাত্রলীগ নেতা মোঃ মোকলেছুর রহমান,একরামুল হাসান নয়ন, সোহাগ, নারী নেত্রী লাভলী পারভীন, সীমা চৌধুরী, রওশন আরা,রোকেয়া পারভীন
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, ওয়ার্কারস পার্টির সাধারন সম্পাদক এডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু, ন্যাপের সভাপতি হায়দার আলী শান্ত, সাংবাদিক ঐক্যের আহবায়ক শুভাস চৌধুরী, শ্রমিক ফেডারেশনের মকবুল হোসেন, নাগরিক নেতা এডভোকেট কাজী হাবিব।
কাউন্সিলে জেলার সভাপতি সরদার কাজেম আলী, সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী’কে নির্বাচিত করা হয়।