নিজস্ব প্রতিনিধি : দিন দিন যেনো সাতক্ষীরা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটে একের পর এক ভাটা পড়ছে। আলোচিত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিক বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন। তারই উত্তরসূরি আশাশুনি উপজেলা ছাত্রলীগের দখলবাঁজ, মাদকাসক্ত ও সন্ত্রাসী আসমাউল হুসাইন। তার বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ নেই যে সে অপকর্ম করেনা। ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, মাদক আর কমিটি গঠণের নামে চাঁদা আদায় এসব ঘটনা আশাশুনি উপজেলায় সর্বজনস্বীকৃত।
তবে ক্ষমতাসীন কোনো এক নেতার ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি, মাদক ব্যবসা,মুক্তিপণ আদায় এসব ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায় খুব সহজেই। পকেট কমিটি করে রোজ টাকা আদায়,টাকা দিতে না পারলে আবার কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি গঠণ করা পুরনো কথা। আসমাউলের এ বাণিজ্য শুধু ছাত্রলীগের কমিটি গঠণে চাঁদাবাজি শেষ নয় উপজেলা সরকারি দপ্তরগুলোতে পদচারণা ছাত্রলীগ সভাপতি আসমাউল হুসাইনের। সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবসময় থাকে ভীত আতঙ্কগ্রস্ত।টাকা না দিলে যে শুধু মারধর করে তা নয়, তুলে নিয়ে যায়। আসমাউলের বাড়ি সদর ইউনিয়নে হওয়ায় সে সদর কেন্দ্রিক যতগুলো বে-সরকারি সংস্থা রয়েছে সেসব অফিসেও তার পদচারণায় মুখরিত। তবে দল কঠোর অবস্থানে যাওয়ার পর থেকে চাঁদাবাজির ভোল্ট পাল্টিয়ে ফেলেছে আশাশুনি উপজেলা ছাত্রলীগর বিবাহিত ও মাদকাসক্ত সভাপতি আসমাউল হুসাইন।
সরাসরি এখন আর সে বিভিন্ন অফিসে না গিয়ে,তার সাথে যেসব দেহরক্ষী থাকে তাদের পাঠান। তাদের দিয়ে চলে তার চাঁদাবাজির ব্যবসা। আর পরিমাণে বেশি হলে সরাসরি নিজেই মাঠে নেমে যান আসমাউল। প্রতিদিন আসমাউল ফেন্সিডিল সেবন না করলে রাত ১০টার পরে তার মাথা ধরে,অসুস্থ হয়ে পড়ে। সারা শরীরে তিব্র ব্যথা শুরু হয় বলে জানিয়েছেন তার একাধিক সাথে থাকা দেহরক্ষী।
আসমাউলের মাদক হাতে একটি ছবি সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন জনের মুঠোফোনে। তবে মাদক হাতে ছবির বিষয়টি নিয়ে উপজেলা সভাপতি আসমাউল হুসাইন বলেন, আমাকে ব্লাক মেইল করে ছবিটি তুলেছিল জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা।তবে তার এলাকার অধিকাংশ লোকজনই বলছে আসমাউল পুরোটাই মাদকাসক্ত।
আশাশুনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসমাউল হুসাইনের রাজনৈতিক উত্থান হঠাৎ করেই হয়েছে। পারিবারিকভাবে তার বাবা একজন রাজ মিস্ত্রি। দিনমজুরের কাজ করে দিন আনে দিন খায় এরকম অবস্থা ছিলো আসমাউলের আগে।তবে বর্তমানে রাজার হালে চলছে আসমাউল।কোন কিছু না করেই ইতিমধ্যেই আশাশুনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন আশাশুনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাদকাসক্ত আসমাউল হুসাইন।
বিভিন্ন সময় টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি জোরপূর্বক বাড়ি থেকে বউ, মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ সহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে আশাশুনি থানা পুলিশের এক সদস্যকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে আসমাউল।এ যেনো জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমানের একই উত্তরসূরি। আসমাউলে বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ আছে, মানুষকে ব্লাকমেইল করে বিভিন্ন স্পর্শকাতর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সেগুলো দিয়ে প্রতি গোনে গোনে মাসোহারা আদায় যেনো আসমাউলের নিত্য দিনের কাজ।আবার মানুষকে ধরে নিয়ে টাকা মুক্তিপণ আদায় করা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানিয়েছেন, আশাশুনি উপজেলা ছাত্রলীগের মাদকাসক্ত সভাপতি আসমাউল হুসাইন। দিন দিন অপকর্মের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাচ্ছে। অনেকেই আক্ষেপের সুরে বলছেন সিনিয়র জুনিয়ার কাউকে মানে না আসমাউল,দিন দিন সে জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিক এর চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। আশাশুনি উপজেলা ব্যাপি সকাল থেকে শুরু করে রাত অবধি বিভিন্ন রকম অপকর্ম কর্মকাণ্ড করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আসমাউল, কিন্তু মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না অনেকেই। যদিও কেউ বলতে চাচ্ছে তাহলে তাদেরকে হুমকি-ধামকি দিয়ে মারধর করে, উপজেলা আ’লীগের শীর্ষ এক নেতার ছত্রছায়ায় রেহায় পেয়ে যাচ্ছেন।
মুখ বন্ধ করে রাখতে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন যদি এভাবে ছাত্রলীগের বর্তমান মাদকাসক্ত সভাপতি আসমাউল চলতে থাকে তাহলে এনজিও, সরকারি চাকরিজীবী বাইরে থেকে আসা মানুষেরা আতঙ্কগ্রুস্থভাবে কতদিন যাবে? কারণ যারা বাইরে থেকে চাকরি করতে আসে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে বিভিন্ন ভাবে ছবি উঠিয়ে ভিডিও করে বা তাদেরকে ধরে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করছে।
সম্প্রতি আসমাউল হুসাইন- এর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে বসে আছে তার হাতে ফেন্সিডিলের বোতল, তারপাশে আরো কয়েকটা বোতল,আর সে হচ্ছে আসমাউল।তবে ছবিতে সেসময় তার মুখে দাঁড়ি ছিলোনা,ক্লিন সেভ করা।তার এক দেহরক্ষী বলেছে ফেন্সিডিলের ছবিতে ক্লিন সেভ করা ছিলো বলে যাতে তার চেহারা স্পষ্ঠ বোঝা না যায় সেজন্য আসমাউল এখন মুখে দাঁড়ি রেখেছে। এই যদি হয় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহলে গণতন্ত্র কোথায় এখানে? সুধি সমাজের অনেকেই দাবি করেছেন শুধু তার কমিটি থেকে বাদ দেওয়াই নয়, জেলা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান সাদিক এর মত আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।তাকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি সুধিজনের।