‘আজকের শিশুরাই আগামী দিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে’ বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তোমরাই গড়ে তুলবে আগামী দিনের বাংলাদেশ। ইনশাআল্লাহ এই বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তিপূর্ণ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শিশু-কিশোর সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আগামী দিনের জন্য যোগ্য করে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আজকের শিশুদের মধ্য থেকে কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে, বড় বড় চাকরি করবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা শিশুদের সেভাবেই গড়ে তুলতে চাই। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে, দেশকে ভালোবেসে তারা কাজ করবে। শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হবে তোমাদেরই। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। এটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল।
শিশুদের খেলাধুলা, শরীরচর্চা, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু পড়ালেখাই যথেষ্ট নয়, শিশুদের ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। তাদের মেধা, মনন ও সৃজনশীলতা বিকশিত হতে হবে। তাদের একটি সুন্দর জীবন গড়ে তুলতে হবে। এটি আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আমরা সারা দেশে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু করেছি।
মাদক-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের হাত থেকে আমরা দেশকে মুক্ত করতে চাই। শিশুদের মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের কুফল সম্পর্কে জানিয়ে তাদের রক্ষা করতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের আহ্বান জানান। অভিভাবক, বাবা-মা তাদের অবশ্যই সব সময় লক্ষ রাখতে হবে সন্তান কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে, কীভাবে মেশে। অনুষ্ঠানে সমবেত শিক্ষার্থীদের বাবা-মা ও শিক্ষকদের কথা শুনতে, নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে এবং সুন্দরভাবে জীবনযাপনের উপদেশ দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
এ সময় শিশুদের জন্য বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধু-১ উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছে। সারা দেশে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষ চালু করেছে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক ও উপবৃত্তির ব্যবস্থা করেছে। তিনি আরও বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের সন্তানরা যেন এগিয়ে যেতে পারে, সেদিকে লক্ষ রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কারণ আজকের শিশুরাই আগামী দিনের কর্ণধার।
অনুষ্ঠানে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সোনামণিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। দীর্ঘ ২৪ বছরের সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছি আমাদের স্বাধীনতা। স্বাধীন দেশে প্রতিটি মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে এবং একটি উন্নত জীবন পাবে-এটাই ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন। আজ আমরা একটি লাল-সবুজ পতাকা পেয়েছি। একটা দেশ পেয়েছি, একটা জাতি হিসেবে আÍমর্যাদা পেয়েছি। এই মর্যাদাকে আরও উন্নত করাই ছিল জাতির পিতার লক্ষ্য।
জনগণের কল্যাণে জাতির পিতা ছোটবেলা থেকেই ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার আদায়ে সেই ১৯৪৮ সাল থেকে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। একাত্তর সালে তার নেতৃত্বে চূড়ান্ত
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতার জš§শতবার্ষিকী উদ্যাপন করব, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। ২০২০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত সময়কে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। আমরা এ সময়টাকে এমনভাবে কাজে লাগাতে চাই যেন বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে ওঠে। বক্তব্যের শেষে কবি সুকান্তের কবিতা উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যতক্ষণ এদেহে আছে প্রাণ/প্রাণপণে এ পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল/বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি/নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।।