সাহিদুল এনাম পল্লব, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি ।। চাহিদা মোতাবেক ঘুষের টাকা প্রদান না করায় প্রধান মন্ত্রীর ঘোষণা কৃত করোনা কালীন প্রণোদনা বন্ধ হয়ে গেল বলে অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এম এ অরিফ সরকারের বিরুদ্ধে। গত ৪ঠা আগস্ট ২০২০ তারিখে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় বাসুদেবপুর, পোড়াহাটি, বাইশের দাইড়, চুটলিয়া, বাগডাঙ্গা স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রসার প্রধান শিক্ষকগন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষা সচিব ও ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ পত্র দায়ের করেন।
অভিযোগে শিক্ষক গন উল্লেখ করেন যে প্রধান মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের দীর্ঘদিনের অবহেলিত স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রসার নন এমপি ও শিক্ষকদের করোনা প্রণোদনা বাবাদ শিক্ষক প্রতি ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্ত অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলে সত্য যে ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যথা সময়ে ই-মেলের মাধ্যমে (হার্ট কপি) মাদ্রসার তালিকা প্রদান করা হয় (যার কপি অত্রের সাথে সংযুক্ত হয়)। এই প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার প্রতিষ্ঠান প্রতি ৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করে। ঘুষ দিতে অস্বীকার করায় করোনা প্রনোদনার তালিকা থেকে বাসুদেবপুর, পোড়াহাটি, বাইশের দাইড়, চুটলিয়া, বাগডাঙ্গা স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রসার নাম বাদ দেওয়া হয়। কিন্ত ব্যানবেইজ জরিপে ১ নং তালিকায় সব প্রতিষ্ঠান তালিকা ভুক্ত। টাকা প্রদানের দিনে শিক্ষা অফিস থেকে সকল প্রতিষ্ঠানকে খবর দেওয়া হয়েছে। আমরা নির্ধারিত দিনে অফিসে আসলে চেক না পেয়ে শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তাকে পাওয়া যায় না। অফিস সুত্রে তারা জানতে পারে যে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৩/০৭/২০২০ তারিখের প্রজ্ঞাপন স্মারক নং ০৫০০০০০০১৭৩০৮০১৪০৭১৫৯ এর নির্দেশনা মোতাবেক কর্মস্থান ত্যাগ করা যাবে না। কিন্ত সে সেই নির্দেশনা অমান্য করে কুষ্টিয়া নিজ বাসায় অবস্থান করছে। তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে মোবাইল রিসিভ করে না। যার কারনে আমরা কিছু টা অপমানিত হয়ে ফিরে আসি।
তারা অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন যে ইতিপূর্বে মাদ্রসা প্রথমিক জরিপের সময় একই ভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ৫/১০ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করেছে। তারা এই অবস্থায় এই দুর্নীতি বাজ শিক্ষা অফিসারের শাস্তি দাবী করেছেন।
এই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। একজন দুর্নীতি বাজের হাত কতটা লম্বা হতে পারে সেটা সাহেদ-সাবরিনা দেখলেই বোঝা যায়। তেমনি একজন দুর্নীতিবাজ ঝিনাইদহের সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফ সরকার। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের অন্ত নেই। তবুও সে প্রতিবার থেকেই যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাহিরে। গোপন সুত্রে জানা গেছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত কমিটি গঠন হলে সেই তদন্ত কমিটিতে তার নিজস্ব লোক থাকার কারনে তাদের দিয়ে কৌশলে তদন্ত কমিটি ঘুষ দিয়ে ম্যনেজ করে ফেলে যার কারনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও প্রতিবার সে থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাহিরে। এই উপজেলা শিক্ষা অফিসার যখন কালীগঞ্জে ছিলো তখন সে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেয়ে তেল খরচ ও মোটর সাইকেল মেরামত বাবাদ টাকা আদায় করত। যাহা তখন বিভিন্ন গন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ঐ সময়ে যে শিক্ষা অফিসার ঝিনাইদহ সদরে কর্মরত ছিলো তার সাথে মিউসাল বদলী করে ঝিনাইদহ সদর আসে। ঝিনাইদহ সদরে আসার পর থেমে থাকানি তার দুর্নীতি। প্রথম সে অফিসে নিয়মিত আসে না। তার এক স্ত্রী ঢাকায় অবস্থান করার কারনে সে সময়ে অসময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ঢাকায় চলে যায়। আবার কখনো কখনো কুষ্টিয়া থাকে। সে যদিও সপ্তাহে দুই একদিন ঝিনাইদহে অবস্থান করলেও সে এখন থাকে ঝিনাইদহ আরাপপুরের একটি বাসায়। এখানে যে কয়দিন থাকে সে কয়দিন তাকে বাধ্য হয়ে বাড়ির চাকরের মত তাকে দেখা শুনা থেকে শুরু করে ভাত রান্না করে দিতে হয় অফিসের লোকের। সে খুব কম যথা সময়ে অফিসে আসে। মাঝে মাঝে টানা ২/৩ দিন বিনা ছুটিতে অফিসে আসে না। চাকুরী হারানোর ভঁয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
এ ছাড়া সে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীয় দণ্ডের জের কে কাজে লাগিয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটি গঠনের সুযোগে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকে। যার কারনে তাকে নিজে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শীল হাতে করে ভোট দিতে দেখা যায়। যাহা ছবি সহ বিভিন্ন গন মাধ্যমে প্রকাশিত হলেও সেই অজ্ঞাত কারনেই তার কোন ব্যবস্থা হয়নি। যার কারনে সে দিনে দিনে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সে আর কোন সরকারী নিয়ম নিতির তোয়াক্কা করে না যার কারনে ঈদ কালীন সময়ে যাতে করোনার বিস্তার রোধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারী কর্মচারীদের স্থান ত্যাগের ব্যপারে নিষেধ করলেও সে তার তোয়াক্কা না করেই সে কুষ্টিয়া অবস্থান করে। যাহা সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। দুর্নীতি করতে করতে এখন এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে সে আর কার দিকে ফিরে চায় না। তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় প্রভাব শালী লোক দিয়ে সাংবাদিকের উপর হামলার চেষ্টাও সে করেছে বলে অভিযোগ আছে। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির বিষয়ে তার কাছে জানতে গেলে সে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিকট সাথে সাথে তথ্য পাচার করে তাদের সতর্ক করে দেন।
এই সকল বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে সে বলে যে আমি এর আগের অভিযোগ সম্পর্কে আমি আমার সংশ্লিষ্টদের অবগত করেছে। তাবে প্রন্দনার ব্যপারে যে সমস্ত শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছে তারা ভুল ঠিকানায় আবেদন করেছে। তাই তারা করোনা প্রনোদনার টাকা পায়নি।