মো. তারেকুর রহমান আজাদ, কক্সবাজার প্রতিনিধিঃকক্সবাজার জেলায় লবন চাষী ও মালিকদের নুন্যতমও মুনাফা না পেয়ে চরম হতাশায় মাথায় হাত দিয়ে অবশেষে বাড়ি ফিরতে হল বছর শেষে। লবন মৌসুমের শুরুতেই এবার দেরিতে ও শেষ পর্যায়ে এসেও কালবৈশাখীর ঝড়ে অনেক আগেভাগে লবন মাঠ ত্যাগ করে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
এমতাবস্থায় কিছু কিছু চাষীরা খুশি হলেও অনেক চাষী ও মালিক হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে অন্তত লাভের টাকাতো দুরের কথা পুঁজির টাকাও উঠেনাই। যার ফলে জেলার বেশিরভাগ ক্ষতি সাধিত হয়েছে টেকনাফ উপজেলায়। এ উপজেলায় অধিক সংখ্যক মানুষের আশাভরশা লবন আমদানী রফতানী করে মুনাফার আশায় বেশি লবন চাষ ও ব্যবসা করা।
কিন্তু কালবৈশাখীর ভয়াল থাবায় ক্ষতবিক্ষত করে অবশেষে কয়েকদিনের অনবরত বৃষ্টিতে তলিয়ে যাই পুরো লবন মাঠের অংশ। যার ফলে এবছর আর কোন মাঠ চাষ করার উপযোগী হিসেবে দেখতে না পারায় মাঠ থেকে পলিথিনসহ যাবতীয় মালামাল কুড়িয়ে নিয়ে আস্তে আস্তে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে। চাষী ও মালিকদের অভিযোগ, এ বছর নুন্যতম আয়ের টাকাও পায়নি অনেকেই। অনেক চাষীদের বেতন দিতে পারছেনা। এমুহুর্তে হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেককে। লবন মৌসুম শুরুর দিকে যেমন সরকারের উদাসীনতায় বাহিরে রফতানী করতে পারে নাই ঠিক শেষ মুহুর্তে এসেও লবন ন্যায্য মুল্যে বিক্রি করতে না পারায় আরো হতাশা দেখা দিয়েছে।
এ কি অবস্থা শুধু টেকনাফ নয় জেলার মহেশখালী, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও উখিয়ার বিস্তীর্ন জায়গায় লবন চাষী ও মালিকদের হতাশা। ফলে এ বছর পুরো জেলায় কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে মালিকদের।
টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রংগীখালী এলাকার লবন চাষী হেলাল উদ্দিন জানান, এ বছরের মত কোন বছর এ রকম লোকসান গুনতে হয়নি। অনেক মালিক চাষীদের ও পানির টাকা শোধ করতে পারেনি। যার ফলে মাথায় হাত দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নাই। একই এলাকার লবন ব্যবসায়ী হোসাইন আনিম জানান, মৌসুমের শেষে এসে কালবৈশাখীর ঝড়ে লন্ডভন্ড করে আশা নিরাশার বাদ ভেংগে দিয়ে চুরমার করে দিয়েছে।
এই মুহুর্তে লাখ লাখ টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে। অপর দিকে মহেশখালীর কালামারছড়া এলাকার লবন চাষী আবুল কাশেম জানান, মৌসুমের শুরুতে লবনের মাঠে দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে শুরু করছিল আর এখন পুজির টাকা তো দুরের কথা চাষীর টাকা ও দিতে পারে নাই। ফলে হতাশার অন্তরালে ঢুকে মাথায় হাত দিয়ে বিস্তীর্ন লবনের মাঠ ত্যাগ করে এই অবস্থায় চলে যেতে হল।
আবার কিছু কিছু চাষীরা জানান, কয়েকদিনের মধ্যে রোধ দেখা দিলে যদি মাঠ উপযোগী থাকে আবার নতুন করে মাঠে কাজ করে আবার লবন চাষ করবে। এই সুযোগটি পেলে মোটামোটি পুজির টাকা গুলো তুলতে পারবে।