বিশেষ প্রতিবেদক :- পানির উপরে ভাসমান সেতু নির্মাণ করা যেন ঐ এলাকার মানুষের নেশায় পরিনত হয়ে গেছে।নাকি একে অপরের প্রতি হিঃস্বা করে তৈরি করা হচ্ছে?তেমন কোন বড় ধরনের নদীও নয় ।নয় কোন সমুদ্র। শুধু মাত্র এলাকা ভিত্তিক ছোট্ট একটা বাওড়।এমন সব কথা দুর দুরান্তের জনমনে। এমনকি ব্যবসার উদ্দেশ্যে নয়তো?
নাকি জনকল্যাণে এসকল কাজের জন্য তারা ঝাপিয়ে পড়ছে সম্মিলিত ভাবে গ্রামবাসী?
বিভিন্ন প্রশ্ন দাগা দিতে শুরু করেছে জনমনে এবং প্রত্যক্ষ দর্শনার্থীদের ভিতর।
কোথায় সেই একই বাওড়ে পাশাপাশি দ্বিতীয় বার নির্মিত হচ্ছে ভাসমান সেতু?
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় গ্রামের ১৫০ জনের নিজস্ব অর্থয়ানে রাজগঞ্জ এলাকার পাশঘেশা ঝাঁপা বাঁওড়ে নির্মিত হচ্ছে আরো একটি দৃষ্টিনন্দন ভাসমান সেতু।
যার পেছনে রয়েছে মহৎ উদ্দেশ্য ও জনকল্যাণ মুলক কাজের ছোঁয়া,যেটা সেতু নির্মাণের কাজেই স্থানীয় কতৃপক্ষের দ্বারা ফুটে উঠেছে।
জানা যায়,কলারোয়ার দেয়াড়া মশ্বিমনগরের খুবই নিকটবর্তী যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের দ্বীপখ্যাত ঝাঁপা গ্রামবাসির নৌকা পারাপারের হাত থেকে মুক্তি পেতে ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে ঝাঁপা বাঁওড়ের উপর নির্মিত হচ্ছে আরো একটি দৃষ্টিনন্দন ভাসমান সেতু৷ একই বাঁওড়ের উপর নির্মিত দৃশ্যমান সেই দীর্ঘতম জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতুর আঁধা কিলোমিটার দক্ষিণে গুরুচরণ পাটুনী খেয়াঘাটে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু-(২) নির্মাণের কাজ চলছে৷
স্থানীয় ১৫০জন লোক তাঁরা ঝাঁপা উন্নয়ন সম্মিলিত ফাউন্ডেশন করে নিজস্ব অর্থয়ানে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেছে৷ এই সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করতে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যায় হবে বলে জানান সেতু নির্মাণ কর্তৃপক্ষ এবং আগামী এক মাসের মধ্যেই সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানা যায় এবং চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে৷ সেতুটির নাম করন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু নামে বলে জানান নির্মাণ কতৃপক্ষ ও সাইনবোর্ডও দেওয়া আছে চাকলা রাজগঞ্জ সড়কের মোবারকপুর বাবুপাড়া মেইন সড়কের পাশে।
যেটায় উল্লেখ আছে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু৷
রাজগঞ্জ পার্শ্ববর্তী মোবারকপুর গ্রামের স্থানীয় কয়েক জন যুবক ও অন্যান্যরা বলেন,কয়েক মাস আগে ঝাঁপার ঐ একই বাওড়ে রাজগঞ্জ বাজার সংলগ্ন এলাকায় ভাসমান সেতু নির্মাণে এলাকার ও মানুষের বেশ উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। করতে পারছে এপার ওপার দ্রুত যাতায়াতে বিভিন্ন কাজকর্ম, ব্যবসা বানিজ্য।
সেই সাথে ঐ নতুন বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলেই আরও উপকার হবে।
তাছাড়া ঝাঁপা – মোবারকপুর বাবুপাড়া গুরুচরন পাটুনী খেয়াঘাট সর্ব প্রথম ও পুরাতন খেয়াঘাট হিসেবে চলমান ছিল । দীর্ঘদিন অবহেলা এবং যাতায়াতের জন্য রাস্তার তেমন একটা ভালো ব্যবস্থা না থাকায় নৌকা পারাপারে সিমাবদ্ধ থেকে পিছিয়ে যায় খেয়াঘাটটি।
এবং মোবারকপুর বাবু পাড়ার খেয়াঘাটের মুখটা জনসাধারণের চলাচলের জন্য রাস্তাটি বাঁশ বাগানের ভিতরে থাকায় অপরিচিত ও অযোগ্য হয়ে পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে বলে জানান তারা।
তবে বর্তমানে রাজগঞ্জ পার্শ্ববর্তী ঝাঁপা বাওড়ের উপরে সংকীর্ণ আকারের ঐ সংস্কারহীন পিচের রাস্তাটি বড় এবং যাতায়াতের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা হলেই আরও উন্নত হবে এলাকা বলে আশাহতো স্থানীয় বাসিন্দারা।
সেই সাথে মাস খানেকের মধ্যে ভাসমান সেতুটি চালু হলেই পথচারীদের চাপ বেশি পড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এবং আশাহতো যে সেতুটি চালু হলেই রাস্তাটি সংস্কার করবেন কতৃপক্ষ।তানাহলে চলাচল ব্যাহত হবে জনসাধারণের।
ঝাঁপা উন্নয়ন সম্মিলিত ফাউন্ডেশনের সভাপতি আব্দুল জলিল সাংবাদিকদের জানান,প্রথমে আমাদের খেয়াঘাটে একটি ভাসমান সেতু তৈরি করার জন্য স্থানীয়দের সাথে কথা বলা হয় ৷
তারপর চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে খেয়াঘাটে ভাসমান সেতু তৈরি করার লক্ষ্যে গণ-বৈঠকের আয়োজন করা হয়৷
বৈঠকে ভাসমান সেতু নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং কমিটি গঠন করা হয়৷
পরের মাস থেকেই শুরু হয় সেতু তৈরির কাজ৷
১২ ফুট চওড়া এবং প্রায় হাজার ফুট লম্বা ভাসমান সেতুটির কাজ প্রায় শেষ হয়েছে৷ আগামী এক মাসের মধ্যে সেতু চলাচলের উপযোগি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে৷ সেতুর উপর দিয়ে এলাকার লোকজন খুব সহজেই ছোট-খাট সকল প্রকার যানবাহন চলাচল করতে পারবে৷
এছাড়া,সেতুটির একদিকে – ঝাঁপার মুখে গুরুচরণ ঘাটে সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ২শ’ ফুটের ঢালাই ব্রীজের কাজ৷
আর সেতুটির অপরদিকে – রাজগঞ্জের পার্শ্ববর্তী মোবারকপুর বাবুপাড়া মুখে কাঠের গুড়ে পুতে ১৫ ফুট চওড়া করে প্রায় দেড় শত ফুট লম্বা মজবুত কাঠের রাস্তা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৷
কথা হয় সেতু তৈরির প্রধান কারিগর জয়নাল আবেদীনের সাথে,তিনি সাংবাদিকদের জানান, এ সেতু তৈরির নকশা অনুযায়ী গত দুই/আড়াই মাস ধরে পাঁচ জন সহকারি কারিগর নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি৷
খন্ড খন্ড করে সেতু তৈরি করা হচ্ছে৷
পরে তৈরিকৃত খন্ডগুলো জয়েন্ট করা হবে৷
৬৫০ ফুট লম্বা ভাসমান সেতুর জন্য, ২০ ফুট লম্বা করে মোট ৩৫টি খন্ড তৈরি করা হবে৷ইতিমধ্যে সবকয়টি খন্ড তৈরির কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে৷
এ সেতু তৈরিতে ব্যারেল- ৯৪৫ পিচ, লোহার শীট- ১৯ টন, লোহার এংগেল- ৯০ টন ব্যবহার করা হয়েছে৷
ভাসমান সেতু তৈরি ফাউন্ডেশনের কয়েক জন সদস্য জানান,বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুর কাজ প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছে।
মাস খানেকের মধ্যে চলাচলের উপযোগি করা হবে৷
ভাসমান সেতুর কারীগরসহ উদ্দোক্তা ও সদস্যদের সাধুবাদ জানিয়েছে – দর্শনার্থীরা।
এবং সেই সাথে জনকল্যাণ মুলক সেতুটির দর্শনে মুগ্ধ হয়ে অভিনন্দন এবং সাধুবাদ জানান উপস্থিত সকল সংবাদকর্মীরাও ।
এ বিষয়ে ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল হক মন্টু সাংবাদিকদের বলেন,চলতি বছরের শুরুতেই বাঁওড়ে উপর জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু নামে একটি ভাসমান সেতু চালু করা হয়েছিল ৷
যার ফলে ঝাঁপা গ্রামবাসির যাতায়াতের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি হয়েছে৷
ইউনিয়নসহ এলাকার যথেষ্ট উন্নয়ন হচ্ছে৷ আরো একটি ভাসমান সেতু তৈরি হলে কোনো অসুবিধা নেই বরং এলাকায় আরো বেশি বেশি উন্নয়ন হবে বলে তিনি আশাবাদি
এবং সাধুবাদ জানিয়েছেন নির্মাণ কতৃপক্ষসহ ঐ ১৫০জন উদ্যোক্তাদের ঝাঁপা ইউপি চেয়ারম্যান।