বর্ণনা দিলেন হানিফ পরিবহনের সুপারভাইজার।
বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েল হত্যার ঘটনায় হানিফ পরিবহনের বাসচালক জালাল, সুপারভাইজার ফয়সাল ও সহকারী জনিকে আটক করেছে পুলিশ। হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আটক ফয়সাল।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন-উর-রশীদ এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সাইদুরের লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের তদন্তে প্রাথমিকভাবে বাসচালক, সুপারভাইজার ও চালকের সহকারীকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর মধ্যে সুপারভাইজার ফয়সাল পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনার বর্ণনা দেন। পরে তাঁকে মুন্সীগঞ্জের আদালতে পাঠানো হয়।
মুন্সীগঞ্জে আদালতের পুলিশ পরিদর্শক হেদায়তুল ইসলাম জানান, আজ আসামি ফয়সালকে আমলি আদালত গজারিয়ায় হাজির করে পুলিশ। ফয়সাল বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
হেদায়তুল ইসলাম আরো জানান, জবানবন্দিতে ফয়সাল বলেন, ২১ জুলাই দিবাগত রাতে হানিফ পরিবহনের বাসটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে যানজটে পড়ে। বাসযাত্রী সাইদুর প্রস্রাব করতে বাস থেকে নিচে নামেন। বাস দ্রুত টান দিলে পায়েল বাসের দরজার সঙ্গে জোরে ধাক্কা খায়। নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। বাসের চালক, চালকের সহকারী ও সুপারভাইজার ধারণা করেন, পায়েল মারা গেছেন। এই ভেবে চালকের সহকারী ও সুপারভাইজার পায়েলকে ব্রিজ থেকে ফেলে দিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
গত ২১ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম মহানগর থেকে হানিফ পরিবহনের বাসে চড়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএর পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সাইদুর এবং তাঁর রুমমেট ও বন্ধু আকিমুর রহমান আদর। ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে বাসটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর ক্যাসেল হোটেলের সামনে যানজটে পড়ে। তখন সাইদুর তাঁর মোবাইল বাসেই রেখে প্রস্রাব করতে নামেন। ওই সময় সাইদুরের সহপাঠী ঘুমিয়ে ছিলেন।
সকালে সাইদুরের মোবাইল ফোনে কল দেন তাঁর মা কোহিনূর বেগম। ফোন ধরেন বাসে থাকা তাঁর বন্ধু। সাইদুর নিখোঁজের বিষয়টি জানতে পেরে পরিবারের সদস্যরা বন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর ২৩ জুলাই সোমবার সকালে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবের চর খাল থেকে সাইদুরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর হানিফ পরিবহনের তিনজনকে পুলিশ আটক করে।