অমারেশ কুমার বিশ্বাস, রাজগঞ্জ প্রতিনিধি : বহু প্রতিক্ষার পর অবশেষে উৎসব মুখর পরিবেশে শক্রুবার বিকালে মনিরামপুরের ঝাঁপা বাঁওড়ের উপর নির্মিত ২য় সর্ববৃহৎ ভাসমান সেতুর উদ্বধোন করে জনগনের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
যশোর ৫ মরিরামপুরের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্রাচার্য্য (চাঁদ) প্রধান অতিথি হিসাবে এই সেতু উদ্বোধন করেন । মরিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের দ্বীপখ্যাত ঝাঁপা গ্রামবাসির নৌকা পারাপারের হাত থেকে মুক্তি পেতে ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে ঝাঁপা বাওড়ের উপর নির্মিত হল আর একটি ভাসমান সেতু। এর নাম দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু । এলাকার ১৫০ ব্যক্তির অর্থায়নে নির্মিত ভাসমান এ সেতুর উদ্বোধনের ফলে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের মধ্যে চলাচলের সেতুবন্ধব আরো দৃঢ় হলো । এমটায় জানা গেছে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে । সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বাঁওড়ের দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে মিলনমেলায় পরিনত হয় ।
এই সেতুটি মোবারাকপুর এর ঘাট ও গুরুচরণের খেয়াঘাটের মধ্য সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে । স্থানীয় ১৫০ জন মানুষের ঝাঁপা উন্নয়ন সম্মিলিত ফাউন্ডেশন করে নিজেদের অর্থয়ানে সেতুটি র্নিমান করেছে । এতে ব্যয় হয়েছে ৭০ লক্ষ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা । এই সেতুটির ১০৪০ টি প্লাটিকের ড্রাম ( ব্যারেল ) নিচে দেওয়া হয়েছে , উপরে রয়েছে লোহার ও কংক্রিট ,এর র্দৈঘ্য ৭০০ ফুট (লোহা), প্রস্থ ১২ ফুট (লোহা) , ১৬০ ফুট (কাঠের) ২১০ ফুট কংক্রিট । এই সেতুর উপর দিয়ে প্রায় সব ধরনের গাড়ি যেতে পারবে । তবে সেতু কতৃপক্ষরা জানায় আমরা সেতুর ভালো রাখার জন্য ৫ টনের উপর কোন লোড গাড়ি যেতে দেবো না ।
ঝাঁপা উন্নয়ন সম্মিলিত ফাউন্ডেশনের সভাপতি আব্দুল জলিল জানায় , প্রথমে আমাদের খেয়াঘাটে একটি ভাসমান সেতু তৈরী করার জন্য স্থানীয়দের সাথে কথাবলি । তারপর চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে প্রথম সপ্তাহে খেয়াঘাটে ভাসমান সেতু তৈরী করার লক্ষ্যে গণ- বৈঠাক আয়াজোন করা হয় । ঐ বৈঠকে ভাসমান সেতু নির্মান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং কমিটি গঠন করা হয় । পরের মাস তেকে শুরু হয় মূল সেতুর কাজ । আমি আশা করছি এলাকার সকল প্রকার ছোট-খাটো যানবাহন চলাচল করতে পারবে ।
কথা হয় সেতু তৈরীর প্রধান কারিগর জয়নাল আবেদীনের সাথে , তিনি জানান , এ সেতু তেরী নকশা অনুযায়ী সেতুটি সম্পূর্ণ করতে আমার সময় লেগেছে ৭ মাস । এতে ৭০০ ফুট লম্বা ভাসমান সেতুর জন্য ২০ ফুট লম্বা করে মোট ৩৫ টি খন্ড তৈরী করা হয়েছে । এই সেতুটি তৈরী করতে ১০৪০ ব্যারেল , লোহার শীট ২০ টন , লোহার এ্যাংগেল ৯০ টন ব্যবহার করা হয়েছে ।
কথা হয় ঝাঁপা গ্রামের আজিজুর রহমানের সাথে , তিনি বলেন ভাই আমরা সারা জীবন কষ্ট করে এই বাওড়ে নৌকা দিয়ে পারাপার করে আসছি। ছোট বড় অনেক ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি । গর্ভবতী মাকে দ্রুত আমরা ডাক্তারের কাছে নিতে পারিনি । পারিনি আমাদের ছেলেমেয়েরা সঠিক সময় স্কুলে যেতে । একটা মোটর বাইক কিনবো কিন্তু পারাপারের জন্য তা কিনতে পারিনি । এখন আমরা সবাই খুশি । আর আমাদের কোন দুঃখ থাকলো না ।
সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি স্বপন ভট্রাচার্য্য ( সংসদ সদস্য যশোর- ৫ মনিরামপুর ,যশোর । বিশেষ অতিথি জনাব আলহাজ¦ কাজী মাহমুদুল হাসাদ,( সভাপতি ও বর্তমান পৌর মেয়র , মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ ), জনাব আমজাদ হোসেন লাভলু ( চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ , মনিরামপুর যশোর ) জনাব প্রভাষক ফারুক হোসেন ( সাধারণ সম্পাদক , মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ ) , জনাব সামছুল হক (মন্টু) ( চেয়ারম্যান ৯নং ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদ ) , জনাব বীরমুক্তিযোদ্ধা কওসার আহমেদ ( সাধারণ সম্পাদক ,৯ নং ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদ) ।
অনুষ্ঠানের সভাপত্বিত করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন দফাদার , মোঃ আব্দুল জলিল (সভাপতি ঝাঁপা উন্নয়ন সম্মিলিত ফাউন্ডেশন) , প্রভাষক মিজানুর রহমান, সোহেল রানা, ( সভাপতি ৯ নং ঝাঁপা ইউনিয়ন যুবলীগ ) , পান্না (সভাপতি ১১নং ঝাঁপা ইউনিয়ন যুবলীগ প্রমুখ।