ভেবেছিলাম বিশ্বকাপে খেলতে পারব না: সালাহ

27
মোহামেদ সালাহ
মোহামেদ সালাহ

দীর্ঘ ২৮ বছর পর বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলতে যাচ্ছে মিসর। দলকে বিশ্বকাপের টিকিট এনে দিয়েছেন যিনি, সেই মোহামেদ সালাহকে ঘিরে মিসরীয়দের উন্মাদনা আকাশ ছুঁয়েছে। মাঝে অবশ্য মিসরের স্বপ্নে হানা দিয়েছিল দুঃস্বপ্ন।

গত ২৬ মে কিয়েভে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল অধিনায়ক সের্গিও রামোসের ধাক্কায় কাঁধে চোট পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিলেন লিভারপুলের মিসরীয় ফরোয়ার্ড সালাহ।

সেই আঘাত তার বিশ্বকাপে খেলাকেই শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। তবে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ঠিক পথে এগোনোয় সালাহ আশা করছেন, বিশ্বকাপের শুরু থেকেই খেলতে পারবেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের পর চোট ও বিশ্বকাপ নিয়ে প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন মিসরের স্বপ্নসারথি।

স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অনেক প্রসঙ্গই ছুঁয়ে গেছেন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার। সালাহর দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হল যুগান্তর পাঠকদের জন্য।

প্রশ্ন : চোটের অবস্থা কেমন? বিশ্বকাপে শুরু থেকে খেলতে পারবেন?

সালাহ : আগের চেয়ে এখন আমি অনেক ভালো আছি। আশা করি, উরুগুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলতে পারব। তবে সেটা নির্ভর করবে ম্যাচের ঠিক আগে আমার পরিস্থির ওপর। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়াটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে মুহূর্ত ছিল।

প্রশ্ন : ওই চোটের পর কখনও কী মনে হয়েছিল, বিশ্বকাপ মিস করবেন?

সালাহ : মাঠে পড়ে যাওয়ার পর ব্যথা ও উদ্বেগ একসঙ্গে চেপে ধরেছিল আমাকে। ফাইনালে খেলা চালিয়ে যেতে না পারায় ভীষণ রাগ ও দুঃখও হচ্ছিল। একটু পর ভাবতে শুরু করেছিলাম, বিশ্বকাপে হয়তো খেলতে পারব না। এটা ছিল ভয়ানক ব্যাপার।

প্রশ্ন : আপনার চোট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন রামোস। এমনটাও বলেছেন যে, ব্যথানাশক ইনজেকশন নিয়ে খেলা চালিয়ে যেতে পারতেন। আপনি কী একমত?

সালাহ : হাস্যকর সব কথাবার্তা। প্রথমে কাঁদিয়ে এখন হাসানোর চেষ্টা করছে! সে আমাকে একটি বার্তা পাঠিয়েছিল। কিন্তু আমি কখনই তাকে বলিনি, সব ঠিক আছে।

প্রশ্ন : এবার বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলা যাক। বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে ওঠার তাৎপর্য মিসরের কাছে কতটা?

সালাহ : ২৮ বছর পর বিশ্বকাপের টিকিট কাটতে পেরেছি আমরা। এটা স্বাভাবিক নয়। কারণ আমরা আফ্রিকান কাপ জিতেছি সাতবার। টানা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি ২০০৬, ২০০৮ ও ২০১০ আসরে। অথচ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন কারতে পারছিলাম না। বারবার ব্যর্থ হওয়ায় সবাই পণ করেছিলাম, এবার আমাদের পারতেই হবে। দীর্ঘ বিরতির পর এমন একটি অর্জন অবশ্যই বিশেষ কিছু। স্পেনের জন্য বিশ্বকাপ জয় যেমন ছিল, আমাদের জন্য এটা তেমনই।

প্রশ্ন : বিশ্বকাপে মিসর ও আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য কী?

সালাহ : ভালো একটি দল এবং দারুণ একজন কোচ (হেক্টর কুপার) আছে আমাদের। আমরা অন্তত দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে চাই এবং ভালো খেলতে চাই। দলকে লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করাই আমার লক্ষ্য থাকবে। সেটা গোল করে বা অন্য যেকোনোভাবে।

প্রশ্ন : মিসর জাতীয় দলের শক্তির জায়গা কোনটা?

সালাহ : এটা বলা কঠিন। আমার মনে হয়, দলীয় সংহতিই আমাদের মূল শক্তি। আগের কোচের চেয়ে হেক্টর কুপারের অধীনে আমাদের খেলার ধরন অনেকটাই বদলে গেছে। দল হিসেবে আমরা শক্তিশালী। সবারই এক স্বপ্ন, এক লক্ষ্য। সবাই দলকে সাহায্য করতে চাই। একসঙ্গে দলের জন্য খেলাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন : বিশ্বকাপ নিয়ে আপনার প্রথম স্মৃতি কোনটা?

সালাহ : ২০০২ বিশ্বকাপের কথা মনে পড়ে। নির্দিষ্ট কোনো ম্যাচের কথা বলতে পারব না। তবে মনে আছে নিজের শহরে নিজের বাড়িতে বসে খেলা দেখেছিলাম। ব্রাজিল জিতেছিল। ২-১? না, ২-০। দুটি গোলই ছিল রোনালদোর।