বিএনপির শাসন আমলে নির্যাতিত হয়েছি আজও আমরা নির্যাতিত হচ্ছি, আওয়ামীলীগ করে আর কত নির্যাতনের শিকার হবো

41

সাহিদুল এনাম পল্লব, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: “বিএনপির শাসন আমলে নির্যাতিত হয়েছি আজও আমরা নির্যাতন হচ্ছি, আওয়ামীলীগ করে আর কত নির্যাতনের শিকার হবো?” কথাটা বলেছে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের দেবীনগর গ্রামের একটি পরিবার। শৈলকূপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন ছিল এক সময়ে বিএনপির ঘাটি।

১৯৮৬ সালে ৭ই মের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী তৎকালীন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মির্জাপুর ইনিয়নের সাধুখালী কেন্দ্রে মাত্র ৩৫ ভোট পেয়েছিল। সেই সময় থেকে আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত দেবীনগর গ্রামের মৃত আরশাদ আলী মণ্ডলের ছেলে পোষ্ট মাস্টার এনামুল হক
ঠান্ডূ। এই ঠান্ডূর পরিবার ২০০১ সালে জামাত-বিএনপি জোট ক্ষমতায় আসার পর ব্যপক নির্যাতিত হয়। জামাত-বিএনপি জোটের নির্যাতনে তাদের বাড়ি ছাড়া হতে হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর তারা ভাবে তাদের উপর আর নির্যাতন হবে না। কিন্ত তাদের উপর নির্যাতন থেমে থাকেনি।
এনামুল হক ঠান্ডূ জনায় গত ৬০ বছর ধরে দখল কৃত জমি গ্রামের একটি পরিবার তাদের জমি জোর করে দখল করে নেয়। এই দখলের বিরুদ্ধে তারা মামলা দায়ের করে। মামলায় দখলকারিরা হেরে যায়। হেরে তারা উচ্চ আদালতে আফিল করে কিন্ত সম্পত্তি তাদের দখলে থেকে যায়। এই অবস্থায় আদালত ঐ জমির উপর ১৪৪ ধারা জারী করে।

দেবিনগর গ্রামের আনিচুর রহমান জানায় যে তাদের গ্রামের মোল্লাদের মধ্যে ঐ পরিবার অনেক বেপরোয়া বর্তমানে । তাছাড়া বিগত ২ বছর হলো ওরা দিনের বেলায় দেবীনগর গ্রামের আওয়ামীলীগ কর্মী আতিয়ার রহমান খা কে ভেলা দিয়ে ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। কিছুদিন আগেও ৭১ টিভিতে ঐ পরিবারের নামে নানা অপকর্মের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে ঐ পরিবার অনেক বেপরোয়া। একের পর এক অপকর্ম করে , এলাকাই প্রসাসনের নাকের ডগাই ঘুরে বেড়াচ্ছে এলাকা বাসী ভয়ে মুখ খুলতে পারে না, এদের খুটির জোর কোথাই? কেই বা দিচ্ছে এদের সেল্টার সে প্রশ্নের উত্তর এলাকাবাসীর আজও অজানা ?? আনিচুর রহমান প্রশাসনের উদ্ধোতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করে এলাকাবাসীর পক্ষে এ বেপরোয়া পরিবারের প্রতি সুস্ঠ তদন্ত দাবি করে এদের অত্যাচার থেকে এলাকাবাসীর মুক্তি চান।

গত ১১ই নভেম্বর মির্জাপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসের তহসীলদার আনিছুর রহমান ১৪৪ ধারা তদন্তে আসলে সেখানে পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত হয় এনামুল হক ঠান্টু ও জাহিদুজ্জামান। তহসীলদার তাদের দখল সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলে যে গত ৬০ বছর ধরে আমরা এই জমি ভোগ করে আসছি। বলার সাথে সাথে মোল্লা পাড়ার সরোয়ার মোল্লার ছেলে টুলু মোল্লা, বুলু মোল্লা ও ফেলু মোল্লা সহ ১০/১২ জনের একটি দল তাদের দুই জনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে মারধর শুরু করে। এই অবস্থায় তহসীলদার আনিছুর রহমান দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে তাদের একজন শৈলকূপা হাসপাতালে ভর্তি হয় অপর জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। ঘটনার পর শৈলকূপা থানায় জাহিদুজ্জামান হিরক বাদি হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করে। তবে পুলিশ এখন পযুন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি।

এই সময়ে আওয়ামীলীগের কর্মী আক্ষেপ করে বলেন যে বিএনপির শাসন আমলে নির্যাতিত হয়েছি আজও আমরা নির্যাতিত হচ্ছি, আওয়ামীলীগ করে আর কত নির্যাতনের শিকার হবো?

ঘটনা সম্পর্কে বুলু মোল্লার সাথে কথা বললে সে জানায় যে ঐ পরিবারের টাকা পয়সা আছে। আমাদের পরিবারের এক পাগল চাচার জমি তারা ফাকি দিয়ে লিখে নিয়েছে। সেই জমি তারা প্রায় ৩০ বছর ধরে ভোগ করছে। এখন আমরা সেই জমি দখল করেছি। আমরা তাদের কাউকে হামলা করি নাই। তারাই আমাদের উপর উত্তেজিত হয়ে গালাগালি করতে থাকে এই সময়ে সামান্য হাতাহাতি হয়। তাদের টাকা আছে তাই আমাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানী করছে বলে সে দাবী করে। তবে টূলু কে বাড়ীতে পাওয়া গেলেও সে সাংবাদিকদের সামনে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।

এই প্রসঙ্গে মির্জাপুর ইউনিয়নের ভুমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন যে আমি গত ১১ই নভেম্বর ৪২৩/২০২৩ একটি পিটিশন মকর্দমার উভয় পক্ষকে নোটিশ করে তদন্ত যাই। তবে দুই পক্ষের হাতাহাতি হওয়ার কারনে পরিবেশ খারাপ দেখে তদন্ত না করেন ফিরে আসি। ঘটনা আমার স্যার কে জানিয়েছি। তবে পুলিশ কে জানাই নাই। রামচন্দ্রপুর বাজারে উপস্থিত রামচন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের এস আই শামীম হোসেনের সাথে দেখা হলে তার নিকট এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সে জানায় যে আমি ঘটনা শুনেছি। তবে থানার একজন এস আই এই ঘটনার তদন্ত করছে। তাছাড়া আমি কিছুই বলতে পারব না।

মির্জাপুর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আতিয়ার রহমানের নিকট এই পরিবার সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বলে যে ঠান্ডূর মাষ্টারের পরিবার অত্র ইউনিয়নের পুরাতন আওয়ামীলীগের পরিবার বলে উল্লেখ করেন।