প্রধানমন্ত্রীর কাছে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীর চিঠি

342

আব্দুজ জাহের নিশাদ, ঢাবি প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জ অবস্থিত বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা, সমাধান ও প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থী সুপ্ত রায় অসিত।

নিচে চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
গোবরা,গোপালগঞ্জ

১৭ই ফেব্রুয়ারী,২০২০
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপেষু,

কেমন আছো মমতাময়ী? নিশ্চয়ই ভালো! ১৬কোটি মানুষের জন্য হলেও তোমাকে যে ভালো থাকতেই হয় মা।এই চিঠিটা হয়তোবা তোমার চোখে পরবে নাহ নানাবিধ সীমাবদ্ধতায় তবুও আবেগী হৃদয় লিখতে উৎসাহ দিচ্ছে বারংবার।

জননী,আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলছি! আমি বঙ্গবন্ধুর বাসভবন থেকে বলছি!আমি বঙ্গবন্ধুর পবিত্র মাটি থেকে চিৎকার দিচ্ছি শুনতে পাচ্ছ কী দয়াময়ী?

মাগো তুমি তো মনে মনে ভাবছো আমি/আমরা বড্ড সুখে আছি!কিন্তু পরিস্থিতি প্রতিকূলে।তোমার বশেমুরবিপ্রবি আজ ভালো নেই মা।বঙ্গবন্ধুর আত্মা বশেমুরবিপ্রবির অবস্থা দেখে হয়তো বেহেশতে থেকেও কষ্ট পাচ্ছে অবিরত,অস্ফুট স্বরে কাদছে নিরবধি! সত্যি বশেমুরবিপ্রবি আজ ভালো নেই,ভালো নেই এখানের কিছুই!

এখানে শিক্ষার্থীরা আজ জিম্মি!বঙ্গবন্ধুর নাম শুনে ভর্তি হয়ে এখানে গুনতে হয় লাগামহীন খরচ যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকগুন বেশি! কিন্ত কেন? ক্লাসরুমের সংকট প্রবল! এখানে ক্লাসরুম নিয়ে ঝগড়া হয় মাঝে মাঝেই! কী আজব।

আমাদের কোনো অডিটরিয়াম নেই,নেই পর্যাপ্ত হল সুবিধা! এসব বাদই দিলাম জানো কি মা আমাদের এখানে নেই কোনো খাবার পানির সরবরাহ পর্যন্ত! মাগো আমাকে পাগল ভেবোনা আমি সত্যিই বলছি। বশেমুরবিপ্রবি র ৪১৩ জন শিক্ষার্থী যারা কিনা বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস পড়ে,বাংলাদেশের ইতিহাস শেখে,মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে সেই ইতিহাস বিভাগ এর অনুমোদন নেই!
আজ ৪১৩ জন জীবন্মৃত অবস্থায়! আন্দোলবরত।

অাজ শতাধিক কর্মচারী আন্দলনে তাদের পেটের তাড়নায়! একাডেমীক কার্যক্রম স্থগিত এখানে সন্মানিত শিক্ষকরাও আজ জীবনের নিরাপত্তার জন্য মানববন্ধন করেন! কি অদ্ভুত পরিবেশ! মাগো জানো এখানকার প্রতিটা শিক্ষার্থীর অস্থিমজ্জায় বঙ্গবন্ধু বিরাজিত।শুধু বাঙালি শিক্ষার্থী নয় বিদেশি শিক্ষার্থীরাও বক্তব্যের শেষে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে যেটা আমাদের বিরাট পাওয়া কিন্তু ঐ বিদেশি যখন বলে এখানে বঙ্গবন্ধুর কোনো প্রতিকৃতি নেই কেন?তখন তাদেরকে কিছুই বলার থাকেনা মাতা।

এত টাকা এত দিকে খরচ হচ্ছে অথচ আজ এত বছরে কেউ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির কথা ভাবল না! জানো মা এখানে বরাবরই বঙ্গবন্ধু অবহেলিত যার আদর্শে আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা পেয়েছি সেই বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগের অস্তিত্ব নেই এই ক্যাম্পাসে!
কি অদ্ভুত কারবার!

যে প্রতিষ্ঠানকে দূর থেকে মানুষ বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ভাবে সেই আঙিনা আজ হ-য-ব-র-লময়! আর কত আত্ন প্রশংসা করিব, এবার উপসংহার করি। পরিশেষে একটি অনুরোধই করব মা তুমি ছাড়া বশেমুরবিপ্রবির কেউ নেই, নেই কেউই! আমাদের দেখিও। দেখবে তো বঙ্গজননী?

ইতি
সুপ্ত রায় অসিত
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ২য় বর্ষ,বশেমুরবিপ্রবি।