পীরগঞ্জে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই এক বিধবার

35
পীরগঞ্জে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই এক বিধবার
পীরগঞ্জে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই এক বিধবার

মোঃ নয়ন হোসাইন, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও: আজকাল মানুষ যখন সুখের নানান চাহিদা মেটাতে বহুতল ভবন, বিলাশবহুল গাড়ি ও কেনাকাটায় ব্যস্ত। দামি-দামি খাবার, নিত্য-নতুন ফ্যাশন প্রতিদিনের চাওয়া যে পরিবার গুলির সেই পরিবার গুলির পাশে ঠাকুরগাঁয়ের পীরগঞ্জ পৌরশহরের মিত্রবাটি মহল্লায় ভাঙ্গা দোচালা ঘর করে থাকা বিধবা সন্ধ্যা রানীর জীবন যেন বড়ই বেমানান। অন্যের জমিতে দোচালা ঘর করে থাকা অবস্থায় স্বামীর মৃত্যুতে আঁধার নেমে আসে ২ সন্তানের জননী সন্ধ্যা রানীর জীবনে। তার একটি মেয়ে ও ছেলে। মেয়েটির পূর্বেই বিয়ে হয়েছে। ১২ বছরের ছেলেটিকে স্কুলে পড়াতে পারচ্ছেন না তিনি। মৌলিক চাহিদার গুলোর বেশিরভাগ যখন পূরণ হয় না তখন ছেলেকে স্কুলে পড়ানোর ভাবনা তার মাথায় নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অন্যের জমিতে স্বামীর তৈরী করা ঘরেই বসবাস করতো সন্ধ্যা। কিন্তু সাম্প্রতিক ঝড়ে তার দোচালা ঘরটি ভেঙ্গে পরে যায়। ঘরের প্রায় প্রতিটি খুঁটিই মাটিথেকে উপরে উঠে এসেছে। তারপরেও আর কোনো ঠিকানা না থাকায় সন্তান সহ নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঐ ঘরেই চরম কষ্টে পার করছেন তার জীবনের কঠিন মুহুর্ত্য গুলো।

এলাকার বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার এমন কঠিন দারিদ্র মুহুর্তেও তিনি ভিক্ষা না করে একটি হাসকিং মিলে শ্রমিকের কাজ করেন। বর্তমানে মিল চাতাল এর ব্যবসা ভালো না হওয়ায় আগের মত কাজ নেই। ফলে বেশির ভাগ সময় ধার দেনা করে চলতে হয় তাকে। কোনো কোনো দিন সন্তান নিয়ে না খেয়েও কাটাতে হয় দিন। ঘর তৈরি করবে কি দিয়ে। সন্ধ্যা রানীর সাথে কথা বলতে গেলে, বোবা কান্না বার বার তার দু’চোখে জ¦ল এনে কষ্টকে শিহরিত করে। তিনি বলেন, মানুষের জমির উপর থাকা ঘরটি ভেঙ্গে পরলেও খুব বেশি কষ্ট পাই নি। কেননা মাথা গুজার ঠাঁই তো ছিল। কিন্তু জমির মালিক ঐ জমিটি বিক্রি করবেন তাই আমাকে দ্রুত জায়গাটি ছাড়তে বলছেন। আমি এখন দু’চোখে আঁধার দেখছি। মাসুম সন্তান নিয়ে কোথায় যাবো কি করবো উপরওয়ালাই ভালো জানেন।

ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সন্ধ্যারানীর মত দারিদ্র এ ওয়ার্ডে আর কেউ নেই, পৌরসভা থেকে আমি যতদূর পারি তাকে সহযোগিতা করি। এবার তার বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করেছি।’ তার এ অবস্থায় সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।