পাটকেলঘাটায় শ্রাবণের বারিধারায় নতুনত্বের আস্বাদনে জনজীবন

45

এস.এম মফিদুল ইসলাম, পাটকেলঘাটা :
‘‘শ্রাবণের আকাশে ঘন মেঘ চেয়ে আছে ছন্দে, প্রিয়ার সাথে ভিজতে চাইছে মন বর্ষার আনন্দে’’-বাংলা সাহিত্যের যতো রুপ রস আর আনন্দ জুগিয়েছেন কবি সাহিত্যিকরা সবই তার বৃষ্টিকে নিয়ে। বৃষ্টির সুরের ছন্দে মানুষের মনকে করে আন্দোলিত। প্রিয় মানুষটির কথা মনের গহীন কোণে বারে বারে উকি দিয়ে জানান দেয় আমি পথপানে চেয়ে আছি তোমারই অপেক্ষায়। বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে কবি সাহিত্যকগণ প্রেম ভালোবাসাকে বৃষ্টির মতো সুন্দর চমৎকার মুহুর্তকে হৃদয়ের আঙ্গিনায় ঠাই করে ছন্দ আর কবিতার জন্ম দিয়েছেন। জীবনের যতো জঞ্জলতা ধুয়ে মুছে ছাপ করে বিরহ, প্রেম আর ভালোবাসায় গেয়ে উঠেছে বৃষ্টির গান। গাছে গাছে কদম কেয়া ভিজে নতুন সুরের মুর্ছনার সৃষ্টি করে। জগতের সমস্থ প্রাণীকুল আর উদ্বিদ কুল সেই বৃষ্টিতে ভিজে নতুনত্বের গানে আবদ্ধ হয়। পথ ঘাট পানিতে ভিজে, খানা খন্দ টই টুম্বুর হয়ে ভরে ওঠে। নদী আর পুকুরের নতুন পানিতে মাছেরা খেলা করে।

ছোট ছোট বাচ্চাগুলো নতুন পানিতে জলকেলিতে চরম আনন্দে মেতে ওঠে। সবুজ শ্যামল ফসল নতুন পানিতে নিজেদের সিক্ত করে নতুনত্বের মাঝে বেড়ে উঠতে আরম্ভ করে। কদম আর গাব গাছের মৌ মৌ গন্ধে সুবাতাস চর্তূদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

বৃষ্টি বাদল এমনই দিনে পাটকেলঘাটার জনজীবন অনেকটা বিপরীত কুলে অবস্থান নিয়েছে। শ্রাবণের আজ বেশ কয়েক দিন অতিবাহিত হতে চললেও এতোদিন বৃষ্টির দেখা পায়নি প্রকৃতি। গত দু’দিনে অবিরাম বৃষ্টি যেন পাটকেলঘাটা সহ তালা উপজেলা মানুষের মাঝে এক নতুনত্বের সুরের মোহনার সৃষ্টি করেছে।

সারা দিন ঝুম ঝুম বৃষ্টিতে গাছপালা প্রাণীকুল যেন নতুনত্বের আস্বাদন পেতে চরম পুলকিত অনুভব করছে। রাস্তাঘাট পানিতে ভিজে , পুকুর নদী নালা ভরে বৃষ্টি যেন জানান দিয়েছে এখন শ্রাবণ মাস। সাথে সাথে এতদাঞ্চল গ্রাম্য এলাকা হওয়ায় রাস্তাঘাট কাদায় অস্বস্থিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। একটু দুর্ভোগ হলেও তাতে কি শ্রাবণ জানান দিচ্ছে এটাই তো বৃষ্টির স্বাভাবিক ঘটনা। প্রকৃতিতে আষাঢ় শ্রাবণ মাসে এমনটাই ঘটবে এটাই স্বাভাবিক।

গত দু’দিন কখনও মুষলধারে আবার কখনও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে দিনভোর কোনো ফাকা নেই। সারাদিন খেটে খাওয়া মানুষগুলো পড়েছেন এতে মহা বিপদে। একদিন কাজ না করলে যাদের দুমুঠো পেটে আহার জোটে না তারা পড়েছেন বিপাকে। তবুও বৃষ্টিতে ভিজে পুড়ে অনেকে পেটের তাগিতে ভ্যান কিংবা ক্ষেতে কাজ করতে বেরিয়ে পড়ছিলেন।

বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ ঘরের বাহির হতে দেখা মেলেনি। বৃষ্টিতে জনজীবনে একটু অস্বস্থি সৃষ্টি হলেও সবমিলিয়ে বৃষ্টিতে প্রকৃতির মাঝে নতুন ভালোবাসার জন্ম দিয়েছে।