সরকারি ব্যয় কমানো কর বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল বেশকিছুদিন আগে৷ এই ইস্যুতেই উত্তাল হয়ে ওঠে জর্ডন৷ টানা চারদিন ধরে লাগাতার বিক্ষোভের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী হানি মুলকি৷
সরকারি এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে কয়েকদিন আগে পার্লামেন্টে নতুন একটি কর বিল প্রস্তাব করা হয়। বলা হয় এই কর বিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল দ্বারা অনুমোদিত৷ তবে তা মানতে চাননি বিক্ষোভকারীরা৷ তাদের দাবি নতুন ওই কর বিলের কারণে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ওই বিল সংস্কারের দাবিতে রাজধানী আম্মানে কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে। কিন্তু হানি মুলকি সংস্কারের দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছিলেন, বিলটি পাশ হবে, নাকি হবে না তা সম্পূর্ণরূপে পার্লামেন্টের উপর নির্ভর করছে। দেশের নাগরিক ও সরকারের টানাপোড়েনে সংকট কাটাতে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ সোমবার হানিকে ডেকে পাঠিয়ে পদত্যাগের নির্দেশ দেন।
জর্ডনের পুলিশ জানায়, টানা চাররাত ধরে চলা এই বিক্ষোভে শতাধিক মানুষকে আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভে ৫০ জনেরও বেশি পুলিশ আহত হয়েছেন। শনিবার রাতে বিক্ষোভকারীদের আটকাতে পুলিশ আম্মানের বিভিন্ন রাস্তা অবরোধ করে৷ ছোঁড়া হয় টিয়ার গ্যাসের শেল৷
হানি মুলকির পদত্যাগের পর বাদশাহ আবদুল্লাহ বিশ্বব্যাংকের প্রাক্তন অর্থনীতিবীদ এবং শিক্ষামন্ত্রী ওমর আল-রাজ্জাজকে নতুন সরকার গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷ গত কয়েক বছরের মধ্যে দেশটিতে এটাই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ বলে খবর৷
প্রতিবেশী সিরিয়া ও ইরাকে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে জর্ডানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেছে বলে মনে করেন বাদশাহ আবদুল্লাহ৷
২০১৬ সালের জুনে জর্ডানের প্রধানমন্ত্রী হন হানি মুলকি। প্রাক্তন এই কূটনীতিক তার আগে একাধিক মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন। আল জাজিরা জানিয়েছে আয়কর পাঁচভাগ বাড়ানোর সরকারের প্রস্তাবিত আইনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ করে৷ যেখানে ব্যক্তিগত আয়কর ৫ শতাংশ এবং বিভিন্ন কোম্পানির কর ২০ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। মানুষের দাবি ছিল, এই আইন তাদের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।