নতুন বন্ধুর সন্ধানে জামায়াত

22

ন্যাশনাল ডেস্ক: জোট বেঁধে পাশাপাশি চলেছে বিএনপি ও জামায়াত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দুটি দলের নেতারাই হিসাব মেলানোর চেষ্টা করছেন।

জোটের প্রধান শরিক দল বিএনপি মনে করছে, জামায়াতকে জোটে রেখে আর লাভ নেই। বরং সে নিজেই জোট ছেড়ে চলে যাক। তাতে একদিকে প্রভাবশালী প্রতিবেশী দেশ ভারতকে খুশি করা যাবে। অন্যদিকে ‘উদারপন্থী’ দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যপ্রক্রিয়াও সহজতর হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপির সঙ্গে জোটে থেকে রাজনৈতিকভাবে আর কোনো লাভ দেখছে না জামায়াত। ফলে নির্বাচনে ভালো ফলের জন্য দলটি এখন নতুন বন্ধুর সন্ধান করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

বিএনপি ও জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দল দুটির মধ্যে দূরত্ব এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সর্বশেষ সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির কয়েক দফা অনুরোধ সত্ত্বেও জামায়াত তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার না করায় দলটির অবস্থান নিয়ে বিএনপিতে সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়েছে। দলটি মনে করছে, ওই ঘটনার নেপথ্যে কোনো তৎপরতা থাকতে পারে।

প্রায় কাছাকাছি সময়ে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদের কারামুক্তির ঘটনার যোগসূত্র থাকতে পারে বলে মনে করছে বিএনপি। এ ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধায় বেশ কয়েক বছর মাঠে নামতে না পারলেও হঠাৎ করে গত ১৩ জুলাই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে সারা দেশে ইসলামী ছাত্রশিবিরের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালনের ঘটনাকেও সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের দাবি, আড়ালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির সঙ্গে নির্বাচনী জোট গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াত। তবে বিষয়টি এখনো আলোচনার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। জাপার শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাঁর কাছে জামায়াতের মধ্যম পর্যায়ের কিছু নেতা গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের ‘অথরিটি’ নিয়ে সংশয় থাকায় শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া জামায়াতকে নিতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের অনুমতি লাগবে। লাগবে প্রভাবশালী একটি দেশের সবুজ সংকেতও।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহম্মদ কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে জামায়াত কোন দিকে যাবে, তা বলার সময় এখনো আসেনি। তবে দলটি স্বস্তিতে নেই, এটুকু বোঝা যায়। ফলে সুবিধাজনক একটি জোট বা দলের সঙ্গে তারা যাবে- এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। ’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার অবশ্য মনে করেন, দেশ এখন যারা নিয়ন্ত্রণ করে, ক্ষমতার এমন কেন্দ্র এবং সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা পেলে জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠন সম্ভব। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির কোনো স্তরের সঙ্গে এসংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। ’

জামায়াতের নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। ’ তাঁর মতে, নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এ ধরনের নানা গুঞ্জন তৈরি হয়। হতে পারে জামায়াত-জাতীয় পার্টি সম্পর্কে সে রকম কোনো গুঞ্জন।

সূত্র: কালের কণ্ঠ