রাফসান সাইফ সন্ধি,ঘাটাইল উপজেলা (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : ঘাটাইল উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন গঠিত। এ আসনে বর্তমান ভোটার সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৯২ হাজার।
১৯৭৩ ও ১৯৮৬ সালে এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত নেতা শামসুর রহমান খান শাহজাহান। তার হাতেই ঘাটাইল আওয়ামী লীগের ভীত রচিত হয়। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দীর্ঘদিন দখলে থাকা আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হয়। ২১ বছর পর এ আসটি আওয়ামী লীগের দখলে যায়। বিশিষ্ট চিকিৎসক ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মতিউর রহমান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়েই এমপি নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে তিনি ভোট পান এক লাখ ৪০ হাজার ৬৮২ ভোট। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদ পেয়েছিলেন ৮৩ হাজার ৭৬ ভোট। ডা. মতিউর রহমান ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়ায় টাঙ্গাইল-৩ ঘাটাইল আসনটি শূন্য হয়ে পড়ে। গত ১৮ নভেম্বর শূন্য আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক শহিদুল ইসলাম লেবু। কিন্তু তার মনোনয়নকে প্রত্যাখান করে নাগরিক কমিটির ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমানুর রহমান খান রানা। বিএনপি বিহীন নির্বাচনে আমানুর রহমান খান শহিদুল ইসলাম লেবুকে পরাজিত করেন।
মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে এ হত্যায় এমপি রানা ও তার ভাইদের নাম বের হয়ে আসে। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। এই মামলায় এমপি রানা ছাড়াও তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ ১৪জন আসামি রয়েছে। গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর এমপি রানা বিগত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বেশ কয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিন্ম আদালতে আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি।
বর্তমান আসন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন-
সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদ, জেলা বিএনপির কেযাধ্যক্ষ মাইনূল ইসলাম।
আসন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক কামরুল হাসান খান ;জেলা অাওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জাকারিয়া মানব কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ তুহিন; ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক শহিদুল ইসলাম লেবু; জেলা অাওয়ামী লীগের অাইন বিষয়ক সম্পাদক এস. অাকবর খান; ঘাটাইলের প্রয়াত সংসদ সদস্য মতিয়ার রহমানের ছেলে ও ঢাকা ভিক্টোরিয়া হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান তানভীর রহমান।
আওয়ামীলীগ মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রায় সকলেই বলেছেন, আওয়ামীলীগ একটি বড় দল তাই এখানে একের অধিক প্রতিদ্বন্দী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় নির্বাচনে ঘাটাইলে যাকেই মনোনয়ন বা নৌকা প্রতীক দিবেন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার পক্ষেই কাজ করে ভোটের মাধ্যমে জয়ী হয়ে এই সংসদীয় আসন শেখ হাসিনাকে উপহার দেব।