চেয়ারম্যানের নির্দেশে প্রতিবন্ধী কৃষকের দু’হাত ভেঙে দিল গ্রাম পুলিশ

256

আজিজুর রহমান, কেশবপুর প্রতিনিধি: কেশবপুরে মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর পলাশের হুকুমে গ্রাম পুলিশ পিটিয়ে এক প্রতিবন্ধী কৃষকের দু’হাতের ৮টি আঙ্গুল ভেঙে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় গত রবিবার ওই চেয়ারম্যানসহ গ্রাম পুলিশ আব্দুল কাদেরকে অভিযুক্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মজিদপুর গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলী গত ১৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে পার্শ্ববর্তী বাগদা গ্রামের বাশারের কাছে বিচলী বিক্রির টাকা আনার জন্যে বাড়ি থেকে রওনা দেয়।

পথিমধ্যে সে ওই গ্রামের মৃত আকিমুদ্দীনের বাড়ির সামনে পৌঁছলে চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর পলাশ ও গ্রাম পুলিশ আব্দুল কাদেরের সাথে তার দেখা হয়। এ সময় গ্রাম পুলিশ আব্দুল কাদের তার কাছে গ্রামে ঢোকার কারণ জিজ্ঞাসা করে। তখন সে বাশারের কাছে বিচলী বিক্রির টাকা আনতে যাওয়ার কথা বলে। একথা বলার সাথে সাথেই চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর পলাশের হুকুমে গ্রাম পুলিশ আব্দুল কাদেরের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে প্রতিবন্ধী ইদ্রিস আলীকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলাসহ রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় সে মাটিতে লুটেপড়লে গ্রাম পুলিশ আব্দুল কাদের তার দু’হাত একটি শিশু গাছের ওপর রেখে উপর্যুপরি আঘাত করে ৮টি আঙ্গুল ভেঙ্গে গুরুতর জখম করে।

অবস্থা বেগতিক দেখে পরবর্তীতে চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর পলাশ মজিদপুর গ্রামের দফাদার আব্দুল বারিক ও গ্রাম পুলিশ সুভাষ দাসকে ডেকে মুমূর্ষু অবস্থায় ইদ্রিস আলীকে তাদের হাতে তুলে দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনার ২ দিন পর ইদ্রিস আলী স্বজনরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে এক্স-রে করলে দেখা যায় তার দু’হাতের ৮টি আঙ্গুই ভেঙ্গে গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর পলাশ বলেন, আমার অজান্তেই চৌকিদার তাকে মারপিট করেছিল। পরে আমি জানতে পেরে মজিদপুর গ্রামের দফাদার আব্দুল বারিকের কাছে তাকে তুলে দিয়েছিলাম। ওই গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে পরিষদ থেকে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গ্রাম পুলিশ আব্দুল কাদের বলেন, চেয়ারম্যানের হুকুমেই তাকে মারপিট করা হয়েছে।

কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জসিমউদ্দীন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করার জন্যে থানার উপপরিদর্শক নাজমুলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সত্যতা মিললে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।