খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জোরপূর্বক ব্যালটে সিল মারার কারণে দুটি ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এগুলো হলো ইকবালনগর সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র (পুরুষ) ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় কেন্দ্র।
আজ দুপুর ১২টার দিকে ইকবালনগর সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের (পুরুষ) ভোট স্থগিত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আর বেলা দুইটার দিকে অপর কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়।
ইকবালনগর সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট শুরুর পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই কেন্দ্রে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক জোর করে ঢুকে পড়েন। তাঁরা কেন্দ্রের ৭ নম্বর বুথে ঢুকে ব্যালট পেপার নিয়ে সিল মেরে ভোট বাক্স খরতে থাকে। এই ঘটনার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা খলিলুর রহমান কেন্দ্রে ভোট স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কেন্দ্রের ৭ নম্বর বুধের ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট কাকলী খান ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী জাকিয়া সুলতানার এজেন্ট সাজেদা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ওই যুবকদের সবার শার্টে নৌকা প্রতীকের ব্যাজ লাগানো ছিল। তাঁরা এসেই অন্য প্রার্থীদের এজেন্টদের বের হয়ে যেতে বলেন। এরপর ব্যালট পেপার নিয়ে নৌকা প্রতীকে এবং আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর ঠেলাগাড়ি ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদের গ্লাস প্রতীকে ভোট দিয়ে তা বাক্সে ভরেন।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা খলিল বলেন, তিনি পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেছে কি না, সেটা তাঁর জানা নেই।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তার পাশেই ছিলেন ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁর পোশাকে নামের কোনো ব্যাজ ছিল না। ব্যাজ কোথাও পড়ে গেছে জানিয়ে নিজের নাম নয়ন মিয়া বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্র যে দখল হয়েছে, এমন তথ্য তাঁদের কাছে ছিল না।
এরপর দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রে আসেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলী। প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই কেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে। সব ব্যালট পেপার জব্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, কাউকে মারধর করা হলে সেটা পুলিশের ব্যাপার। আর এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়ার কোনো অভিযোগ আসলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় একদল যুবক ঢুকে ব্যালটে সিল মারতে থাকেন। তাঁরা আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্রার্থী খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেলের নির্বাচনী প্রতীকে সিল মারতে থাকেন। এই কেন্দ্রের মোট ভোটার ১ হাজার ৬৯১ জন। প্রায় আধা ঘণ্টা তাঁরা ব্যালটে সিল মারেন। এরপর পুলিশ এলে তাঁরা চলে যান।
ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আলীম হোসেন বলেন, দুর্বৃত্তরা ব্যালটে সিল মারলেও তা বাক্সে ভরতে পারেনি। পরে দুটার দিকে কেন্দ্র স্থগিত করা হয়।