কয়রায় বোরোর স্বপ্ন রোপনে ব্যস্ত কৃষকরা

102
কয়রায় বোরোর স্বপ্ন রোপনে ব্যস্ত কৃষকরা

ওবায়দুল কবির সম্রাট, কয়রাঃ খুলনার কয়রা উপজেলায় বোরো ধানের চারা রোপনের জমি প্রস্তুত ও বীজ তলা তৈরীতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের জমিতে বোরো রোপনে কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়,প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ উপজেলার সর্বত্র জুড়ে এখন চলছে বোরো ধান চাষাবাদের মহোৎসব। উপজেলার কৃষকদের কেউ জমি প্রস্তত করছে, কেউ বীজ তলা থেকে চারা তুলছেন, অনেকে চারা রোপন করছেন। শীত থাকায় আবার হাওরাঞ্চলের কৃষকরা পানিতে নামতে একটু দেরি করছেন। সকালে সূর্যের দেখা পেলে তবেই তারা চারা রোপনে নামছেন। আগাম তৈরি বীজতলা থেকে এবারও কৃষকরা শীতের শুরুতেই আগাম চারা রোপনের কাজ শুরু করেছেন।

ক্ষেত প্রস্তুত করার লক্ষ্যে জমিতে সেচ ও হাল চাষের কাজেও ব্যস্ত দেখা গেছে কৃষকদের। মাঠে ব্যস্ততা দেখে ও তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে চাষাবাদ করে বাম্পার ফলনের মধ্য দিয়ে তারা বিগত সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান। এদিকে কয়েক বছর ধরে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অনেক কৃষক অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছেন বলেও সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে।

স্থানীয় কৃষক, ছালাম, আফছার, আলম, শফিক জানান, বছর বোরো ধান চাষে খরচ অন্যান্য বছরের চেয়ে কিছুটা কম বলে খানিকটা উজ্জীবিত কৃষকদের আশঙ্কা শুধু ধান-চালের ন্যায্য মূল্য নিয়ে।

কয়রার বাগালী ইউনিয়নের কৃষক আহসান তিনি ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করবেন বলে সব প্রস্তুতিই প্রায় সম্পন্ন করেছেন। এরই মধ্যে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ধানের চারা বাবদ ৫শ টাকা, জমি চাষ করা বাবদ ৮শ টাকা, দিনমজুর বাবদ ১ হাজার টাকা, সার কেনা বাবদ ১ হাজার ৩শ টাকা। এছাড়া ৩ মাস পানি সেচ বাবদ ২ হাজার টাকা, নিড়ানী ও কিটনাশকসহ নানা ওষুধ বাবদ আরও প্রায় ১ হাজার টাকাসহ ধান কাটা-মাড়াইসহ আরও প্রয়োজন ২ হাজার টাকা। এ নিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদ বাবদ সর্বমোট খরচ হবে ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা। ফলন ভালো হওয়াসহ দাম ভালো পাওয়া গেলে এই খরচ আর পরিশ্রম দুই সার্থক হবে।

কৃষক ইনছার আলী বলেন, জমি প্রস্তুত ।কয়েকদিন পর বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন করবো জমিতে রোপনের জন্য। বোরো ফসলটি ভালো হলে পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিতে থাকতে পারব। তাই যত্নসহকারে জমি তৈরি করেছি। মাঠে কাজ অবস্থায় কথা হয় কয়রা সদরের কৃষক ফেদু মন্ডল তিনি জানান,জমিতে লবণ পানি ওঠায় এবার জমি করবো কিনা একটা দ্বিধাদন্দে ছিলাম তাই জমি প্রস্তুত করতে লেট হল।লবণ পানির কারনে ধান কেমন হবে বলা মুশকিল।

উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম মিজান মাহমুদ বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে প্রায় ৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হবে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৪ হাজার হেক্টর, উফসী ২হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো উৎপাদন করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে বোরো চারা রোপন শুরু হয়েছে।আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনার পাশাপাশি তাদের উৎপাদিত ধান-চালের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।