আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে সাগরদাঁড়ির কপোতাক্ষ নদের উপর বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় দু’পারের হাজার হাজার মানুষের দূর্ভোগে পড়তে হয়েছে। নদে জমে থাকা কচুরিপানা অপসারণে করার সময় শুক্রবার ওই সাঁকোটি ভেঙ্গে যাওয়ায় দু‘পাড়ের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতসহ যোগাযোগে দূর্ভোগ বেড়েছে। ঝুঁকির ভেতর নৌকায় করে দু’পারের মানুষ পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছে বলে দেখা গেছে।
জানা গেছে, ২০১১ সালে সাগরদাঁড়ি বাজারের সাথে কলারোয়া ও তালা উপজেলার মানুষের যাতায়াতের জন্যে সাগরদাঁড়ি বাজার কমিটির উদ্যোগে দুপাড়ের মানুষের কাছ থেকে বাঁশ ও অর্থ সংগ্রহ করে সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে কপোতাক্ষ নদের দু’পারের শার্শা, সানতলা, কৃষ্ণনগর, পাঁচপাড়া, সেনেরগাতী, সরুলিয়া, ধানদিয়া, কুঠিরঘাটা এবং সাগরদাঁড়ি, কোমরপোল, চিংড়া, বগা, নেহালপুর, মহাদেবপুর, রেজাকাটিসহ দু’পারের প্রায় ২০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ওই সাঁকো দিয়ে চলাচল করতো। নদের ওপারের মানুষজন ব্যবসা-বাণিজ্য, বাজার, সওদাসহ সকল কর্মকান্ড সাগরদাঁড়ি বাজারে পরিচালনা করে আসছেন। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় তাদের ব্যবসা বাণিজ্যসহ সকল কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারণে ওই বাজারের ব্যবসা বাণিজ্যে ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিবছর সাগরদাঁড়িতে ২৫ জানুয়ারি থেকে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত’র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
এ সময় লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল নামে সাগরদাঁড়িতে। যার অধিকাংশ মানুষই যাতায়াতের জন্যে ওই সাঁকোটি ব্যবহার করে থাকে। দীর্ঘদিন বাঁশের সাঁকোটি সংস্কার না হওয়ায় গত শুক্রবার নদের জমে থাকা কচুরিপানা অপসারোণ করতে গিয়ে কচুরিপানার চাপে সাঁকোটি ভেঙ্গে পড়ে। ফলে এলাকাবাসীকে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। এ ব্যাপারে সাগরদাঁড়ি বাজার কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য সুভাষ চন্দ্র জানান, বাঁশ ও অর্থ সংগ্রহ করে প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার কারণে দু’পারের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় বাজারে ব্যবসা বাণিজ্যে ধস নেমেছে। এছাড়াও প্রতিদিন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পর্যটকসহ শত শত মানুষের আগমণ ঘটে সাগরদাঁড়িতে। জরুরী ভিত্তিতে সাঁকোটি নতুন করে নির্মাণ করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
এর জন্য যে পরিমান অর্থের দরকার তা আমাদের নেই। সরকারি অর্থ ছাড়া সাঁকোটি নির্মাণ করা সম্ভব নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সায়েদুর রহমান জানান, নদের সাগরদাঁড়িতে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধিকতা সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় নদের ৩০০ মিটার জমে থাকা কচুরিপানা ¯্রােতে ভেসে গেছে। এখন সাগরদাঁড়ি এলাকার আর চকুরিপানা নেই। সাগরদাঁড়ির আলোচিত্র শিল্পী মুফতি তাহেরুজ্জামান তাছু বলেন, চকুরিপানা চলে যাওয়ায় সাগরদাঁড়ি এলাকায় নদের সৌন্দর্য্য ফিরতে শুরু করেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানূর রহমান বলেন, সাঁকোটি স্থানীয় জনগণ নির্মাণ করেছিলেন। সাঁকোটি ভেঙে পড়ার কথা শুনেছি। বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।