কেশবপুরে রোপা পাটের বাম্পার ফলনের  সম্ভাবনা কৃষকের মুখে হাসি

72
কেশবপুরে রোপা পাটের বাম্পার ফলনের  সম্ভাবনা কৃষকের মুখে হাসি

আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে রোপা পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ও বিকালে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা তাদের পাট ক্ষেতে পাটের পরিচর্যা করছে। মাঠ জুড়ে পাট আর পাট। তবে কৃষকরা বলছেন, পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে সময়মত পাট কেটে ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা। অল্প খরচে অধিক ফলন, সমান দূরাত্বে রোপনের কারণে গাছ ছোট বড় হওয়ার সম্ভাবনা কম, নিড়ানীর সুবিধার কারণে আধুনিক এ পদ্ধতির পাট চাষ এলাকা ভেদে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এ উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা পদ্ধতির পাটের চাষ করেছে কৃষকরা। জানাগেছে, প্রাচীন কাল থেকে এ উপজেলায় পাটের আবাদ হয়ে আসছে।

এক সময় পাটের ব্যবহার বেশী হওয়ায় একে সোনালী আঁশ বলা হতো। কিন্তু বর্তমান প¬াষ্টিক ও নাইলনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এ সোনালী আঁশের বাজারে ধস নেমেছিল। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা পাটের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। এমন সময় এ উপজেলার কৃষকরা অল্প খরচে অধিক ফলন পেতে উদ্ভাবন করেন রোপা পদ্ধতির পাটের আবাদ।

পরীক্ষামূলক আবাদে কৃষকরা বাম্পার ফলন পাওয়ায় সেকারণে এবছরে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করেছে কৃষকরা। উপজেলার মজিদপুর, মঙ্গলকোট, বিদ্যানন্দকাটি, কেশবপুর সদর, পাঁজিয়া, সুফলাকাটি, গৌরিঘোনা, ত্রিমোহিনী, সাতবাড়িয়া, সাগরদাঁড়ি, হাসানপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষকরা এ পদ্ধতির পাট চাষে ঝুঁকে পড়েছে। অধিকাংশ কৃষক ক্ষোভের সাথে বলেন, পাটের পাটকাঠি একটি উৎকৃষ্টমানের জ্বালানী হিসেবে পরিচিত। খরচ না উঠলেও অনেকে জ্বালানীর জন্য পাটের আবাদ করে থাকেন কৃষকরা।

মজিদপুর গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন, জামাল হোসেন, ব্রহ্মকাটি গ্রামের আব্দুল লতিফ, তারিফ মোড়ল, রামচন্দ্রপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম, খোকন সরদারসহ উপজেলার অনেকেই পাট চাষীরা জানান, আমরা অনেক বছর আগে থেকে এ পদ্ধতিতে পাটের আবাদ করছেন। এ বছরও আমরা পাট চাষ করেছি। সরেজমিনে পাট চাষীদের ক্ষেত পরিদর্শনকালে তারা জানান, ১৫ চৈত্র বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধানের বীজ তলার মত পাটের বীজতলা তৈরী করে বীজ বপন করেন।

২২ দিন বয়সের চারা তুলে ক্ষেত তৈরী করে নির্দিষ্ট ব্যবধানে সেখানে পাটের চারা রোপণ করেন। চারার বয়স ১০ দিন হলে ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করেন। তাদের পাট মাঠের মধ্যে সেরা হওয়ায় তারা বাম্পার ফলনের আশা করছেন। তবে কৃষকরা আশা করেছে এবার পাটের মূল্য বেশী পাবো। সেজন্য গত বছরের তুলনায় এবছরে অনেক চাষীরা পাট চাষে ঝুকে পড়েছে।

আমরা আশা করছি প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে সুন্দর পরিবেশে পাট ঘরে তুলতে পারবো এবং লাভবান হবো। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, এবার উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট রোপন করেছে কৃষকরা। সময়মত পাট কেটে তারা ঘরে তুলতে পারবেন এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে কৃষকরা পাট বিক্রি করে লাভবান হবেন।