কেশবপুরে রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথ. বিদ্যালয়ের ভবনের নির্মাণ কাজ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ

13
কেশবপুরে রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথ. বিদ্যালয়ের ভবনের নির্মাণ কাজ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ

আজিজুর রহমান, কেশবপুর: কেশবপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের নির্মাণ কাজ জোরপূর্বক চালানোর পর অবশেষে আদালতের নির্দেশেই তা বন্ধ হয়ে গেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ৭ জনের নামে আদালতে মামলা হয়েছে। ওই জমির দলিল স্কুলের নামে হলেও এর হাল রেকর্ড ও নামপত্তন অন্যের নামে হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

রবিবার দুপুরে স্কুলের জমির মালিকানা দাবি করে রামচন্দ্রপুর গ্রামের লিয়াকত আলী মোড়ল এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে কেশবপুর প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্য পাঠকালে তিনি জানান, ১৯৫৮ সালে ৯৪ শতক জমির ওপর রামচন্দ্রপুর বেসরকারি রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে এলাকার মৃত এনাম মোড়ল শর্তসাপেক্ষে স্কুলের নামে ২০ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠানটি চলমান রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের জমির কোন খোঁজ খবর না নেয়ায় একপর্যায়ে এনাম মোড়লের ওয়ারেশগণের নামে ওই জমির হাল রেকর্ড ও নামপত্তন হয়। দখল শর্তে ওয়ারেশগণ খাজনা পরিশোধ করে জমিতে ফসল আবাদ করে আসছেন। সুনামের সাথে স্কুলটি পরিচালনা হওয়ার কারণে পরবর্তীতে স্কুলটি জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়।

এদিকে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে শিক্ষা অধিদপ্তর ওই স্কুলের বহুতল ভবন নির্মাণের জন্যে ৭৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। ৬ মাস আগে স্কুল কর্তৃপক্ষ দলিল বুনিয়াদে লিয়াকত আলীগংদের রেকর্ডীয় জমিতে জোর পূর্বক ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করে। এ সময় বাধা দিলেও কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখলে অবশেষে লিয়াকত আলী বাদী হয়ে যশোর বিজ্ঞ সহকারি জজ আদালতে (কেশবপুর) জমির ওপর চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মামলা করেন। যার নং- ২৭৪/১৮।

এ মামলায় বিবাদি করা হয়, স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, প্রধান শিক্ষকসহ ৭ জনকে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ আদালতের এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুনরায় নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখলে অবশেষে আদালত ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে গত একমাস ধরে ওই স্কুলের ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, হাসিকুর রহমান, তাজাম্মুল ইসলামসহ গ্রামবাসী। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা নারগিস পারভিন বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে তীব্র কক্ষ সংকট রয়েছে। তিন কক্ষের পুরনো ভবনে ১৩০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান সম্ভব নয়। নতুন ভবন হলে এ সমস্যা দূর হত। কিন্তু স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে আদালতে মামলা হওয়ায় নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকবার হোসেন বলেন, ওই বিদ্যালয়ের জমির মধ্যে অলিখিত কিছু জমি রয়েছে।

দেখভালের অভাবে অন্যের নামে রেকর্ড হয়েছে। বিষয়টি নিরসনে স্কুলের দাতা সদস্যদের সাথে আলোচনা চলছে। আদালতের ভিন্ন কোন রায় না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে।