আজিজুর রহমান, কেশবপুর(যশোর)প্রতিনিধি: কেশবপুরে মৎস্য ঘেরের স্কেভেটরের ব্যাটারির মিথ্যা চুরির অপবাদ দিয়ে ঘেরের ২ কর্মচারীকে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে রেখে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘেরের ২ কর্মচারী মাসুম বিল্লাহ ও ইসমাইল হোসেনকে মারাত্মক আহত অবস্থায় কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এর মধ্যে মাসুম বিল্লার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ওই রাতে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘটনায় শনিবার রাতে আহত মাসুম বিল্লার চাচা রফিকুল মোড়ল বাদি হয়ে কেশবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এদিকে পুলিশ শনিবার রাতেই ঘের মালিক সুলতান মোড়লকে অপর একটি মামলায় গ্রেফতার করেছে।
অভিযোগ ও আহতদের পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৩ বছর মধ্যকুল গ্রামের শফিকুল মোড়লের ছেলে মাসুম বিল্লাহ (২৫) ও একই গ্রামের আব্দুল গণি গাজীর ছেলে ইসমাইল হোসেন সুলতানের মাছের ঘেরে মাছ ধরার কাজ করে আসছে। গত তিন দিন আগে সুলতানের মাছের ঘেরের স্কেভেটরের ব্যাটারি চুরি হয়।
সন্দেহজনক ঘের মালিক সুলতান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গোপিকান্তপুর এলাকা থেকে তাদেরকে তুলে এনে ঘেরের পাশে মধ্যকুল কালীতলা খাজার লেদ ঘরের ভিতরে আটকিয়ে রড, লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে । আহত মাসুম বিল্লার পরিবারের লোকজন জানায়, রেলের পাতের উপরে হাত, পা বেধে তাদেরকে মারপিট করা হয়েছে। ঘের মালিক সুলতানের নেতৃত্বে রফিকুল, জাহাঙ্গীর, রুবেলসহ ৫/৭ জন মিলে লাঠি ও রড দিয়ে প্রায় ১ ঘন্টা মাসুম বিল্লাহ ও ইসমাইলকে পিটিয়ে মৃতভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। এরপর আহতদের উদ্ধার করে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত মাসুম বিল্লালের অবস্থার আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। মাসুম বিল্লার চাচাতো ভাই মিলন মোড়ল জানান, মাসুমের দুই হাত, দুই পা, রড দিয়ে পিটিয়ে থেতলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ডান হাতের কনুই এর নিচে ও বাম পায়ের হাটুর নিচে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, খুলনা মেডিকেল থেকে মাসুমকে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তার অবস্থা বর্তমানে আশংকাজনক।
পুলিশ রাতেই ঘের মালিক সুলতান মোড়লকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, রফিকুল, শফিকুলসহ তাদের আট ভায়ের বিশ বিঘা জমি সুলতান তার ঘেরের ভিতরে গত ১৩ বছর ধরে দখল করে মাছ চাষ করছে। কেশবপুর থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীন জানান, ঘের মালিক সুলতানকে গাজীপুরের একটি প্রতারণার মামলার গ্রেফতার করা হয়েছে। কর্মচারীদের উপর মারপিটের ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রবিবার দুপুরে আটক সুলতানকে যশোর জেলা আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।