কেশবপুরে মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান পিটিয়ে ভেঙে দিল কৃষকের হাত ও পা

17
কেশবপুর
কেশবপুর

আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: আদালত থেকে মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় কেশবপুরে ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবারও এক কৃষককে পিটিয়ে হাত, পা ভেঙে দিয়েছে। বর্তমান ওই কৃষক কেশবপুর হাসাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গুরুতর আহত কৃষক মতিয়ার রহমান উপজেলার বরনডালি গ্রামের মৃত ঝড়– সরদারের ছেলে। এনিয়ে গত ২ বছরে ওই চেয়ারম্যানের হাতে সরকারি কর্মকর্তাসহ ৩ জন গুরুতর জখম হন। এসব ঘটনায় কোন মামলা না হওয়ায় ওই চেয়ারম্যান বেপরোয়া হয়ে একের পর এক মানুষ পিটিয়ে চলেছে। ফলে তাঁর হাতে ইউনিয়নবাসি জিম্মি হয়ে পড়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মতিয়ার রহমান অভিযোগ করে বলেন, ২০১২ সালে তিনি একই গ্রামের ইসলাম মোল্যার ছেলে রাসেলের নামে যশোর বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি অপহরণ মামলা করেন। বর্তমান মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান রাসেলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গত একমাস ধরে তাকে আদালত থেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্যে জোর চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। এতে রাজি না হওয়ায় ওই চেয়ারম্যান গত সোমবার রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে তাকে ত্রিমোহিনী বাজারে আসতে বলেন। এ সময় চেয়ারম্যান ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী তাকে জোর পূর্বক চেয়ারম্যানের টর্চার সেলে নিয়ে দরজার হাক দিয়ে এলাপাতাড়িভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। হাকের আঘাতে তাঁর হাত, পা ও হাত-পায়ের চারটি আঙ্গুল ভেঙে গেছে।

এরপরও তাকে চিকিৎসা না নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া কোথাও মামলা করলে তাকে জীবননাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। যে কারণে তিনি কোথাও অভিযোগ দিতে সাহস পাচ্ছেন না। হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, মারপিটের শিকার কৃষক মতিয়ারের চোখ, মুখ দিয়ে এখনও রক্ত ঝরছে। প্রচন্ড পিটুনিতে তাঁর হাত, পাসহ সমস্ত শরীর ফুলে গেছে। চাঁদড়া গ্রামের মেম্বার জুয়েল জানান, ২০১৭ সালে ওই চেয়ারম্যানের টর্চারসেলে মারপিটের শিকার হন সাহাপুর গ্রামের সোবহান আলী। সাড়ে ৩ লাখ টাকা খরচ করে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এখনও তিনি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। ওই বছরের ৩ জুন চেয়ারম্যান আনিছ মোটর সাইকেলের চাবি দিয়ে খুচিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের তহশীলদার বিষ্ণুপদ গাইনকে।

৪ জুন তিনি ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে আটক হন। ওই চেয়ারম্যান ক্ষমতাসীন দলের ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্মআহবায়ক হওয়ায় তাঁর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগযোগ করেও তাঁর মোবাইল বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।