কেশবপুরে বেতীখোলা দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন স্থগিত ॥ আদালতে মামলা

23
লাল সবুজের কথা- Lal Sobujer Kotha

আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্যের লক্ষ্যে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে ম্যনেজিং কমিটি গঠনের চেষ্টার অভিযোগে বেতীখোলা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। যার নং-২৪৭/১৮। ২১ অক্টোবর উপজেলার বেতীখোলা গ্রামের মোজাম মোড়লের ছেলে এমএ মান্নান বাদি হয়ে বিজ্ঞ সহকারি জজ আদালতে মামলাটি করেছেন। আদালতের আদেশে ওই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, বেতীখোলা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসায় এবতেদায়ী থেকে দাখিল পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সচিব ও মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আবুল খায়ের তৎকালিন সভাপতির ইন্দনে প্রতিষ্ঠানের দুটি পদে শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্য করার লক্ষ্যে গত ১১ সেপ্টেম্বর ভূয়া ছাত্রীর নামসহ ভূয়া অভিভাবক ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ২২ অক্টোবর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন।

ওই মাদ্রাসার ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া ২০১৭ সালের সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে ডুমুরিয়ার সাজিয়াড়া কওমী মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত আছে। অথচ ভোটার তালিকায় ১০২ নং ক্রমিকে তার পিতা আব্দুল হামিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ওই সুপার ভোটার তালিকার ৫৪ নং ক্রমিকের মাওয়া খাতুনকে ছাত্রী দেখায়ে তার পিতা আব্দুল হামিদ মোল্যাকে বাদ দিয়ে মাতা মরিয়ম বেগমকে বিধিবহির্ভূতভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

মামলার বাদি বর্তমান কমিটির দাতা সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তাকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। চুড়ান্ত ভোটার তালিকায় ১৫ নং ক্রমিকের ছাত্র তানভিরুল ইসলাম, ৪৪ নং ক্রমিকের ছাত্র মিকাইল, ৭৮ নং ক্রমিকের ছাত্র রনি, ৯৫ নং ক্রমিকের ছাত্রী রাজিয়ার অভিভাবকদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করে তিনি ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত সুপার আবুল খায়ের মাদ্রাসার সুপার হওয়ার মানষে ও নতুন শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্য করার লক্ষ্যে এবতাবেদায়ী কমিটি গঠনের নিমিত্তে ভূয়া ভোটার তালিকা প্রস্তুত করে ২২ অক্টোবর নির্বাচনের দিন ধার্য্য করেন।

এভাবে ম্যানেজিং কমিটি গঠিত হলে মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম মারাতœকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এমনকি মাদ্রাসাটি অচল ও বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেই বাদি আদালতে মামলাটি করেছেন। আদালত বাদির অভিযোগটি আমলে নিয়ে মোকদ্দমাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ২২ অক্টোবরের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছে।

মামলার বিবাদিরা হলো, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, রেজিস্টার, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বেতীখোলা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি ও বেতীখোলা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার। এ ব্যাপারে মাদ্রসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আবুল খায়ের নিয়োগ বাণিজ্যের কথা অস্বীকার করে বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা, ১১ সেপ্টেম্বর চুড়ান্ত ভোটার তালিকা রেজুলেশন করে নোটিস বোর্ডে টাঙানোসহ এলাকায় মাইকিং করানো হয়।

এরপরও কেউ মামলা করলে আমার কারার কিছুই নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আদালতে মামলার কারণে ওই মাদ্রাসার ২২ অক্টোবরের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।