আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে পরকীয়া প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক সন্তানের জননীকে নিয়ে অজানা উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে। স্ত্রী সন্তানকে ফেরত না পেলে স্বামীসহ শ্বশুর শ্বাশুড়ি মিলে ওই যুবকের বাড়িতে বিষপান করে আত্মহত্যার করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। স্ত্রী ও সন্তানের সন্ধান পাওয়ার জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা পুরুস্কারের ঘোষণা দিয়েছে। এঘটনায় স্বামী শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে কেশবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছে। যার নং: ৪৪৭, তারিখ ১২/০৭/২০১৮।
সরেজমিন শুক্রবার দুপুরে উপজেলার কাঁস্তা গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, শফিকুল ইসলামের স্ত্রী এক সন্তানের জননী হাজিরা খাতুন (২৬) কে পার্শ্ববর্তী বাঁশবাড়িয়া গ্রামের সিদ্দিক সরদারের ছেলে মফিজুর রহমান সরদার (২২) গত ১০ জুলাই সন্ধ্যায় হাজিরা খাতুনকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ও শিশু সন্তান সোহানা খাতুন (৫) কে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে। শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আমার স্ত্রী মফিজুর রহমান সরদারের সঙ্গে ফোন আলাপ করত। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর উভয়কে নিষেধ করি। বিশেষ করার সত্বেও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমার স্ত্রী সন্তানকে বিভিন্ন প্রলোবন দেখিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে। আমার পিতা তার বৌমার সুখের জন্য ১১ শতক সম্পত্তি দলিল করে দিয়েছে। প্রতারক মফিজুর সরদার আমার স্ত্রী, কন্যাকে নিয়ে পালানোর সময় ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণের অলংকার নিয়ে গেছে। শফিকুল ইসলামের শ্বশুর হাবিবুর রহমান হবি বলেন আমার মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার আগের দিন সোমবার গভির রাতে আমার বাড়িতে মফিজুর রহমান সরদার এসে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। আমি ভয়ে ভয়ে তার ডাকে সাড়াদিয়ে ঘুম থেকে উঠে পড়ি। এ সময় আমাকে মফিজুর সরদার বাঁশবাড়িয়া সড়কের পাশে নিয়ে বলে তোর মেয়েকে আমি ভালবাসি তোর মেয়েকে না পেলে জীবনের তরে তোর পরিবারকে শেষ করে ফেলব।
তার ভয়ে এক পর্যায়ে আমি রাজি হয়ে বাড়ি ফিরি। পরের দিন সকালে মফিজুর রহমান সরদারের পিতাকে বিষয়টি জানায়। কথন তার পিতা সিদ্দিক সরদার বলেন, এ রকম আর কোন দিন হবে না। এটা মিমাংসা করে নেব। সে আরও বলেন আমার ধারণা সিদ্দিক সরদার নিজেই তার ছেলে ও আমার মেয়েকে পালিয়ে যেতে সহযোগীতা করেছে। মেয়ের মা মাছুরা বিবি বলেন, গত কয় মাস আগে মফিজুর রহমান সরদারের মা আমার মেয়েকে ভাতের সঙ্গে বিষ জাতীয় দ্রব্য খাওয়ায়ে দেয়।
ফলে সে অনেক বার বমি করে। এছাড়া আমার মেয়ে সুখের জন্য আমার পিতার বাড়ি থেকে পাওয়া ১৫ শতক সম্পত্তি মেয়ের নামে দলিল করে দিই। সম্পত্তি ও নগদ টাকা আত্মসাৎ করার জন্য আমার মেয়েকে ভয় ভীতি দেখিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মেয়ে ও নাতিকে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে ওই প্রতারক মফিজুর সরদার।
দ্রুত যদি ছেলের পিতা আমার মেয়ে নাতিকে ফেরৎ না দিতে পারে তাহলে আমার জামাই ও স্বামী এবং আমি সিদ্দিকের বাড়িতে গিয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করে জীবন দিয়ে দেব এবং মেয়ে ও নাতির সন্ধান পাওয়ার জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা পুরুস্কারের ঘোষণা করেছি।
এ ব্যাপারে সরাসরি মফিজুর সরদারের পিতা সিদ্দিক সরদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত ১০ জুলাই সন্ধ্যায় আমার ছেলে ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে চলে গেছে। এ ব্যাপারে প্রতারক মফিজুর সরদারের মুঠোফোনে বার বার ফোন দেওয়া হলেও ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।