আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: সাম্প্রতি যশোর জেলা ছাত্রদলের কমিটি ষোষিত হওয়ায় ঝিমিয়ে পড়া কেশবপুরের ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। তারা বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে চলেছেন। বিএনপির অন্যতম এ সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ন পদ পেতে দৌঁড়-ঝাপ শুরু করেছেন একেক পদের জন্য একাধিক নেতা। তবে ২০১৩ সালে গঠিত থানা, পৌর ও কলেজ শাখার আংশিক কমিটির একাধিক নেতার বিরুদ্ধে গত ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করার অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র জানায়, কেশবপুর থানা, পৌর ও কলেজ শাখা ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ২০১৩ সালে গঠিত হয়। থানা ও কলেজ শাখা ছাত্রদল ৭ সদস্যের এবং পৌর ছাত্রদল ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। থানা কমিটিতে তরিকুল ইসলামকে সভাপতি, মজনু হুসাইনকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, মেহেদী হাসান শিপনকে সাধারণ সম্পাদক, ইয়াছিন আলী, বাবুল রানা বাবু, আব্দুল খালেককে যুগ্ম্-সম্পাদক, বাবলুর রহমানকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে, পৌর কমিটিতে মোকাদ্দেছুর রহমান বাবুকে সভাপতি, জাহঙ্গীর হোসেন পলাশকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, আনোয়ারুল ইসলাম রনিকে সাধারণ সম্পাদক, রিপন হোসেন, মেহেদী হাসানকে যুগ্ম্-সম্পাদক ও জাহাঙ্গীর আলমকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে, কেশবপুর ডিগ্রী কলেজ শাখার কমিটিতে মিজানুর রহমান মিঠুকে সভাপতি, আব্দুল হালিকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, ফরিদ-উজ-জামানকে সাধারণ সম্পাদক, আল-আমিন, ইবাদুল ইসলামকে যুগ্ম্-সম্পাদক, খায়রুল বাবুকে সাংগঠনিক সম্পাদক, ইমরান হোসেনকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করে আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। দীর্ঘদিনে কমিটি পূূর্নাঙ্গ না হওয়ায় সংগঠনটির কর্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে। গত জুন মাসে যশোর জেলা ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ষোষিত হওয়ায় ঝিমিয়ে পড়া ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা নড়েচড়ে বসেছেন। তারা গুরুত্বপূর্ন পদ পেতে তৃণমূল থেকে শুরু করে উপরি মহলে তদবির চালিয়ে যাওয়াসহ বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে চলেছেন।
জানা যায়, গত ৩ জুলাই বিকালে থানা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মজনু হুসাইন ও সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল গফুরের নেতৃত্বে উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর বাজারে, গত ৯ জুলাই দুপুরে থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শিপন, জাহঙ্গীর আলম ও মেহেদী হাসান হিমেলের নেতৃত্বে হাসানপুর ইউনিয়নের বগা মোড়ে, ৯ জুলাই ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান বিশ্বাসের নেতৃত্বে কেশবপুর শহরে ও গত ১১ জুলাই হাসানপুর ইউনিয়নের বগা মোড়ে সাবেক জেলা ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক ফারুক খান, মজনু হুসাইন ও ফরিদ-উজ-জামানের নেতৃত্বে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এর মধ্যে একমাত্র ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান বিশ্বাসের নেতৃত্বে কেশবপুর শহরে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় এবং গত ২২ জুলাই শহরে বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগানো হয়। বাকী মিছিল গুলো কেশবপুর শহর থেকে ৫ থেকে ১৪ কি: মি: দূরে গ্রামের ভেতর অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মিজানুর রহমান মিঠুর সভাপতি পদটি স্থগিত করা হয়। এছাড়া থানা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হুসাইন মজনু হুসাইনের বিরুদ্ধে গত ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন না করে সরাসরি আওয়ামীলগের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করার অভিযোগ রয়েছে তার ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর।
সাঁগরদাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও গত ইউপি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাষ্টার আমানত আলী জানান, আমি গত ইউপি নির্বাচনে দলের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করি। ওই নির্বাচনে থানা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মজনু হুসাইন ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন না করে সরাসরি আওয়ামীলীগের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করে।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি বলেন, বিগত দিনে যারা আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে তাদের ভেতর থেকে প্রকৃত ছাত্র ও অবিবাহিতদের উপজেলা ছাত্রদলের কমিটিতে রাখা হবে। এছাড়া কারোর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন না করে আওয়ামীলগের প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি নির্বাচন করার অভিযোগ থাকলে তা যাচাই বাছাই করা হবে। সত্যতা পেলে ছাত্রদলে তাদের কোন জায়গা নেই।