আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে চাচা শশুরের সাথে পরকীয়া প্রেমের পর বিয়ে মেনে না নেওয়ায় মনের কষ্টে আতœহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে উপজেলার বাউশালা গ্রামের বদরউদ্দিন সরদারের মেয়ে শাহানার খাতুন (২৫) এর সাথে একই গ্রামের মতলেব মোড়লের ছেলে হাফিজুর রহমান মোড়লের (৩০) এর স ঙ্গে ২১/০২/২০১১ সালে মুসলিম শরীয়াত মোতাবেক তাদের বিয়ের কাজ সম্পুর্ণ হয়।
তাদের ঘরে কবির হোসেন (৬) নামে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে ।হাফিজুর রহমান মোড়ল সাংবাদিকদের জানান আমি গাড়ি চালক হওয়ায় প্রায় সময় বাড়িতে না থাকায় সেই সুযোগে আমার স্ত্রী শাহানারা খাতুন প্রতিবেশী ইনছার সানার ছেলে হারুন সানার সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে ।এরপর আমার স্ত্রী শাহানার খাতুন ২০/০৪/২০১৭ তারিখে আমাকে তালাক দেন। এলাকাবাসী জানান তার স্মামীকে গোপন করে হারুনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানতে পেরে তার পিতা মাতা শাহানারা খাতুনকে মারপিঠ করেন ।এর কিছুিদন পর শাহানারা খাতুন পরিবারকে না জানিয়ে ঢাকাতে পাড়ি জমান ।
মেয়ের চাচাতো ভাই আতাউর সরদার জানান আমার বোন আমার এখানে আশ্রয় নেন। এরপর তাকে গাজীপুরে একটি গার্মেন্সে কাজ করার সুযোগ করে দেন। সেই থেকে আমার চাচাতো বোন একটি ঘর ভাড়া করে ওখানে বসবাস করতেন। এলাকাবাসী জানান শাহানারা খাতুন বিয়ের পর তার চাচা শশুরের সাথে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে তারা দুজন ঘরোয়া বিয়ে করে ঢাকাতে একসঙ্গে বসবাস করতেন ।এরপর তারা ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসে। এক পর্যায়ে ছেলের বাড়িতে ছেলে যান আর মেয়ের বাড়িতে মেয়ে চলে যান। হঠাৎ করে মেয়ের পিতা সাবেক স্বামীর কাছে মেয়েকে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। ঐ সময় মেয়ে বলেন আমি সাবেক স্বামীকে তালাক দিয়েছি । তার সাথে আমার কোন সংসার করা হবে না ।
তখন পিতা তার মেয়েকে আবারও চাঁপ সৃষ্টি করেন এক পর্যায়ে তাকে মারপিঠ করা হয়।সেই মনের কষ্টে রবিবার ১১ টার দিকে শাহানারা খাতুন তার পিতার বসত ভিটার ঘরের মধ্যে আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। এই সময় এলাকাবাসী খবর পেয়ে একই গ্রামের সবুর মোড়লের ছেলে কালাম মোড়ল ও আসাদুর মোড়লের ছেলে শামীম মোড়ল ঐ আত্মহত্যার লাশ নামিয়ে রাখেন। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক শরিফুল ইসলাম শাহানার খাতুনকে মৃত ঘোষনা করেন।
এই ব্যাপারে সরাসরি মেয়ের পিতা বদরউদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান আমার মেয়েকে কোন চাপ সৃষ্টি করেনি এবং মারপিঠ করা হয়নি বরং তাকে সাবেক স্বামীর কাছে ফিরে যেতে বলা হয়েছে । এ ব্যাপারে সরাসরি হারুন সানার বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার বাড়িতে গেলে তাকে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই ব্যাপারে কেশবপুর থানার উপ-পরিদর্শক প্রসেনজিৎ মল্লিক বলেন, ঘটনাস্থলে পৌছিয়ে লাশের সুরোতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া যায়, প্রতিবেশি হারুন আর রশিদের সাথে শাহানারা খাতুনের প্রেম সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু হারুন আর রশিদ বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় শাহানারা খাতুন আত্মহত্যা করেছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।