আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে এক গৃহবধূকে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ওই গৃহবধূর গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে স্বামীর পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকায় প্রচারনা চালানো হচ্ছে। এ ঘটনার পর থেকে ঘাতক রুস্তম আলী তার পরিবারসহ এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজনি গিয়ে ও একাধিক এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বরনডালি গ্রামের আকাম দপ্তরির মেয়ে রহিমা খাতুন (২৫) প্রায় ছয় বছর আগে ঢাকাতে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। চাকরি করাকালীন সময়ে একই গ্রামের মৃত মাওলা বক্সের ছেলে রুস্তম আলী ওই মেয়ের সাথে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিবাহ করে। বিয়ের পর থেকে রুস্তম আলী ওই মেয়ের কাছ থেকে কৌশলে তার বেতনের টাকা আত্মসাৎ করে। বিয়ের পর থেকেই রুস্তম আলী বিভিন্ন সময়ে রহিমা খাতুনের উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেয়ে রহিমা খাতুন তার দেওয়া টাকা ফেরৎ চাইতে থাকে। একপর্যায়ে সোমবার রাতে রুস্তম আলী রহিমা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ঘরের আড়ার সাথে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে এলাকায় প্রচারনা চালানো হয়। আকাম দপ্তরি ও তার স্ত্রী গোলাপজান, মেয়ে মরিয়াম বেগম সাংবাদিকদের জানান, গত ২ মাস আগে কলারোয়া উপজেলা দেয়াড়া গ্রামের প্রবাসী কামরুল মোড়লের স্ত্রী জোহরা বেগম (২৩) দুই সন্তারের জননীর সঙ্গে রুস্তম আলী পরকীয়া গড়ে তোলেন। এর পর জোহরা বেগমকে জোর পূর্বক তার স্বামীকে তালাক করিয়ে রুস্তম আলীকে বিবাহ করেন।
বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ে রহিমা খাতুনের উপর চলে আসে বিভিন্ন প্রকারে নির্যাতন। নির্যাতনের ঘটনায় আমি বাদী হয়ে ভালুকঘর ফাঁড়ির ইনচার্জ বরাবর ও ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। রুস্তম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় সোমবার রাতে ঘরের ভেতর আটকিয়ে রেখে বেদম মারপিট করার পর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। এ ঘটনার পর থেকে ঘাতক রুস্তম আলী তার পরিবারসহ এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে করারও অভিযোগ রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ মঙ্গলবার সকালে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জণ্যে মর্গে প্রেরণ করেছে।
এব্যাপারে সরাসরি স্থানীয় ইউপি সদস্য এবাদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাতে সংবাদ পেয়েই রুস্তম আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখি রহিমা খাতুনের বেগমের লাশ ঘরের মেঝেতে শোয়ানো আছে। ওই সময় এলাকাবাসী তাকে জানিয়েছে রহিমা খাতুনকে তার স্বামী রুস্তম আলী বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ডাক্তার আনার নাম করে সে পালিয়েছে। কেশবপুর থানার ওসি তদন্ত শাহজাহান আহমেদ জানান, ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত্যু সন্দেহজনক হওয়ায় ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রুস্তম আলীর বক্তব্য নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করে তাকে না পেয়ে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।