আজিজুর রহমান, কেশবপুর থেকে : কেশবপুরে পৌরসভার মেয়রের নির্দেশ অমান্য করে নির্মাণ করা ভবনের অবৈধ অংশ নিজ খরচে অপসারণের জন্য কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলেও মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২০ মার্চ যশোর জেলা প্রশাসকের স্থানীয় সরকার শাখার সহকারী কমিশনার ইরুফা সুলতানা এই নির্দেশনা জারি করে ভবনের মালিককে নোটিশ করেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল গ্রামের শওকত হোসেন তার স্ত্রী জোহরা খাতুনের নামে মধুসড়ক সংলগ্ন মহিলা কলেজের পূর্ব পাশের ২.৯০ শতক জমির উপর ‘জান্নাতুল মাওয়া মঞ্জিল’ নামে একটি ৫ তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। অথচ তিনি কেশবপুর পৌরসভা থেকে ৪ তলা ভবন তৈরির অনুমতি নিয়েছিলেন।
১৪ ফুট প্রস্থ ও দৈর্ঘ ৯০ ফুটের ওই জমিতে প্লানের বাইরে অবৈধভাবে ৫ তলা ভবন নির্মাণের বিষয়টি আশেপাশের বাসিন্দাদের ভাবিয়ে তোলে। অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের ব্যাপারে আশেপাশের ভবন মালিক আতাউর রহমান, নিরঞ্জন নন্দন, আলী আকবর, কামরুজ্জামান, জাকির ইকবাল, কানাই নন্দী, অরুন দাস ও আক্তার হোসেন গত ৯ সেপ্টেম্বর কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ওই ভবনটি ভবিষ্যতে বড় ধরণের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
যে কারণে তারা আতংকের মধ্যে বসবাস করছেন। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, ওই সময় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর পৌরসভার মেয়রের নির্দেশে কাজ বন্ধ ছিলো। কিন্তু ২০ নভেম্বর থেকে আবারো ৫ তলা ভবনের নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। বর্তমানে নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। পরে তারা ৩১ জানুয়ারি ৪ তলার পরে অবৈধভাব ৫ তলা নির্মাণ করার বিষয়ে যশোরের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে ২০ মার্চ যশোর জেলা প্রশাসকের স্থানীয় সরকার শাখার সহকারী কমিশনার ইরুফা সুলতানা ভবনের অবৈধ অংশটুকু নিজ খরচে অপসারণের নোটিশ দেন ঘর মালিককে।
যার একটি অনুলিপি পাঠানো হয় কেশবপুর পৌরসভার মেয়রের কাছে। অভিযোগ উঠেছে, নির্দেশের ১ মাস অতিবাহিত হলেও ভবনের ৫ তলার অংশটুকু অপসারণ করেননি। বরং ভবনের মালিক ওই ভবনের ওই অংশটুকু বহাল রাখতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে দেনদরবার করছেন। এই ঘটনায় আশেপাশের ভবন মালিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, ভবনের অবৈধ অংশটুকুর জন্য তাদের বড় ধরণের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। এই বিষয়ে তারা যশোরের জেলা প্রশাসক ও কেশবপুরের মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে ভবনের মালিক শওকত হোসেনের সাথে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে ভবন মালিক এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এব্যাপারে কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল সাংবাদিকদের জানান, শওকত আলীকে ৪ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তিনি প্লানের বাইরে অবৈধভাবে ভবনের ৫ তলা সম্পন্ন করেছেন।
উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিজ খরচে ভবনের অবৈধ অংশ অপসারণের নির্দেশ দিলেও তা মানছেন না ভবন মালিক। জেলা প্রশাসন যদি প্রশাসনিক সহযোগীতা করে তাহলে ওই ভবনের অবৈধ অংশ উচ্ছেদ করা সহজ হবে।