আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে আমন ধানের আবাদের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফিরে এসেছে। গত বছরে বিভিন্ন বিলে জলাবদ্ধতা থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলন থেকে বঞ্চিত হয়েছিল অনেক কৃষকরা। কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে এবার জলাবদ্ধতা না থাকায় গতবছরের তুলনায় এবছরে প্রায় ৫৩৪১ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়েছে। যার ফলে গত বছরের তুলনায় এবছরে লাভবান হবে বলে আশা করেন কৃষকরা।
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও শ্রম হিসাবে ধান কাটা কাজে নিয়োজিত হচ্ছে। কেশবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১৪৪টি গ্রামে এবার ৮৭৫৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছে কৃষকরা। গত বছর জলাবন্ধতার কারণে ৫৪৮৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করেছিল কৃষকরা। প্রতি বিঘাতে ২০ মণের বেশি ধান হবে বলে কৃষকরা ধারণা করেছে। উপজেলার দোরমুটিয়া, মধ্যকুল, ত্রিমোহিনী, সাগরদাড়ী, চিংড়া, হাসানপুর, শ্রীফলা, প্রতাপপুর, শিকার পুর, দেউলি, বাগদা, ব্রক্ষকাটি, বালিয়াডাংগা, পাঁিজয়া, কলাগাছী, নারানপুর, গৌরিঘোনাসহ বেশ কয়টি গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা ধান কাটা কাজে ব্যাস্ত সময় পার করেছেন। সাতবাড়িয়া গ্রামের মৃত বাহাদুর খাঁর ছেলে সুরুত আলী খাঁ সাংবাদিকদের জানান গত বছরের তুলনায় এবছরে বৃষ্টির পানি কম থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে।
৩ বিঘা জমিতে ৩৬ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ৭০/৮০ মণ ধান পাবো বলে আমি ধারণা করেছি। এছাড়া আমি সরদার হিসাবে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও শ্রম হিসাবে কাজ দিয়ে থাকি। একই গ্রামের আতিয়ার সরদার ২ বিঘা জমিতে আমন আবাদের চাষ করেছে। আতিয়ার বলেন ধানের বাম্পার ফলন দেখে আমি আনন্দে আতœহারা হয়েছি। ব্রক্ষকাঠি গ্রামের ইসলাম সরদার, আলম সরদার, রামচন্দ্রপুর গ্রামের আলাউদ্দীন দফাদার, আলিউদ্দীন দফাদার, ওজিয়ার সরদার, হায়দার আলী গাজীসহ অনেক কৃষকরা জানান গত বছরের তুলনায় এবছরে বৃষ্টির পানি কম থাকলেও প্রতি বিঘাতে ২০/২৩ মণ ধান আশা করছি।
বাজারের দরও ভালো। আমাদের প্রতি বিঘা জমিতে ধান রোপন শুরু থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ১২/১৩ হাজার টাকা খরচ হলেও আনন্দ পাচ্ছি। গত বছরে বন্যার পানিতে ফসল তলিয়ে যাওয়ায় আমন আবাদের চাষ করতে পারিনি। এবার জমিতে মটরের সেচ দিয়ে খরচ বেশী হলেও ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফতেমা বেগম, জোহরা বেগম, আকলিমা বেগম, জাহানারা বেগম, চায়না বেগম সাংবাদিকদের জানান আমাদের কাজের সরদার সুরুত আলী। তার মাধ্যমে বছরে কর্মসূচির কাজ থেকে শুরু করে মাঠের সকল কাজে পুরুষের পাশাপাশি আমরাও কাজে নিয়োজিত হই।
তারা বলেন প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত ২শত টাকা করে শ্রমের মজুরি পায়। এবং দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত দেড়শত টাকা শ্রমের মজুরি আসে। আমরা গরীব ঘরের স্ত্রী হওয়ায় ঘরে বসে থাকতে পারি না। শ্রম দিয়ে অর্থ উপার্জন করে স্বামী সন্তানদের নিয়ে ভালই সুখে আছি। তারা বাড়ি বসে না থেকে কাজ করে খেটে খেয়েও মনের মাঝে একটু সুখ আনন্দ খুজে পায়।