কেশবপুরে আদালতের রায় উপেক্ষা করে জমি দখলে নিয়ে ঘর নির্মাণ

13

আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি:  কেশবপুরে আদালতের রায় উপেক্ষা করে শতাধিক ভাড়াটে সন্ত্রাসী প্রকাশ্য দিবালোকে একটি বিরোধপূর্ণ জমি দখল করে ঘর নির্মাণসহ বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার উপজেলার ভালুকঘর গ্রামে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও দখদারদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে ভালুকঘর গ্রামের মৃত লোকমান গাজী টাকার প্রয়োজনে তার ভালুকঘর মৌজার ৫৭ ও ৬০ দাগের সাড়ে ৫১ শতক জমি মাত্র ৫ হাজার টাকায় খায়-খালাশি দেয় একই গ্রামের দেলোয়ার শেখের কাছে। ১৯৮৮ সালে দেলোয়ার শেখ প্রতারণা করে ওই জমির মধ্য থেকে ৩০ শতক জমি দখল শর্তে তার নামে রেকর্ড করে নেয়। পরবর্তীতে জমির দখল নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে দেলোয়ার শেখ ২০০১ সালে লোকমান গাজীর ওয়ারেশগণের বিরুদ্ধে যশোর বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। যার নং- ৯৯/০১। এ মামলার রায় লোকমান গাজীর ওয়ারেশগণের পক্ষে যায়। এরপর থেকে লোকামান গাজীর ওয়াশেগণ ভোগ দখলে রেখে এর ২৬ শতক জমিতে কলা, ২০ শতক জমিতে মেহগনী, ১০ শতক জমিতে বাঁশঝাড়, ২০ শতক জমিতে হলুদসহ নানাবিধ ফলদ বৃক্ষ রোপণ করে ভোগ দখল করে আসছেন।

জমির মালিক সাজ্জাদগং অভিযোগ করে বলেন, তাদের জমি প্রায় সময় জবর দখলের হুমকি দিতে থাকলে গত ১৪ জুলাই তিনি বাদি হয়ে দেলোয়ার হোসেন ও তার দু‘ছেলে নুুরন্নবী ও কবির হোসেনকে বিবাদি করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। যার নং- ৫২৮। এর পরের দিন ১৫ জুলাই আদালতের রায় ও থানার জিডির কোন তয়াক্কা না করে দেলোয়ার শেখ ও তার ছেলেরা বিভিন্ন জায়গা থেকে শতাধিক সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে প্রকাশ্য দিবালোকে দা, লাঠিসোটা, কুড়াল নিয়ে তাদের জমির জবর দখল কার্যক্রম শুরু করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে তাদেরকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়। ফলে নিরুপায় হয়ে জমির দখল কার্যক্রম বন্ধে সাজ্জাদগংরা পার্শ্ববর্তী ভালুকঘর ফাড়িতে একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও দখল কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। পুলিশের এ নিরাবতায় তাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা তাদের জমির তিন শতাধিক বিভিন্ন ফলদ ও বজন বৃক্ষ কর্তনসহ লুটপাট করে প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করেছে।

সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে দেখা গেছে, জমিতে লাগানো কলা, মেহগনী, বাঁশঝাড়, হলুদসহ নানাবিধ ফলদ, বনজ বৃক্ষ কেটে লুটপাট করে জমি পরিষ্কার করা হয়েছে। পরবর্তীতে জমি চাষ দিয়ে একপাশে টিনের ছাউনীর একটি দোচালা ঘর নির্মাণ করে চারিপাশ বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। বর্তমান দেলোয়ার হোসেন ও তার ছেলেরা ওই জমি রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।

এ ব্যপারে প্রতিপক্ষ কবির হোসেন জানান, দখল শর্তে ওই জমির প্রিন্ট পর্চা তার পিতার নামে হয়েছে। বর্তমান পিতা ওই জমি আমাদের চার ভাইয়ের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়ায় আমরা দখল করে নিয়েছি।
এ ব্যাপারে ভালুকঘর ফাঁড়ি ইনচার্জ নাজমুল হোসেন জানান, আমি খবর পেয়ে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে মিমাংশার জন্যে উভয় পক্ষকে ১৬ জুলাই বিকেলে ফাড়িতে ডেকেছি।