ইসলাম ডেস্ক : এস্তেগফারের গুরুত্ব- মানুষ হিসেবে প্রতিনিয়ত আমাদের দ্বারা ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের গুনাহ্ সংঘটিত হয়ে যায়। আর গুনাহের কারনে আসে নানা ধরনের মুসিবত ও পেরেশানি। তাই আমাদের উচিত নিয়মিত গুরুত্ব সহকারে এস্তেগফার পড়া কেননা এর মধ্যে গুনাহ্ মাফ হওয়া ছাড়াও রয়েছে নানাবিধ উপকারীতা।
এস্তেগফারের আদেশ দিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেছেন, ‘অতএব তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে এস্তেগফার করো এবং তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করো। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক পরম দয়ালু ও প্রেমময়।’
(সূরা হুদ : ৯০)।
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’
(সূরা নিসা :১০৬)।
এস্তেগফারের ফাজায়েল – কালামে পাকে আল্লাহ বলেন ‘অতঃপর বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষন করবেন। তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদী-নালা প্রবাহিত করবেন।’
(সূরা নূহ : ১০-১২)
অন্যত্রে এরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা নিজেদের পালনকর্তার সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর! অন্তর তারই দিকে প্রত্যাবর্তন কর। তাহলে তিনি তোমাদের নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত জীবনোপকরণ দান করবেন এবং অধিক আমলকারীকে বেশি করে দেবেন।’
(সূরা হুদ :৩)
হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেছেন, আমি কি তোমাদের জানাব না, তোমাদের রোগ কী এবং তার ওষুধ কী? তোমাদের রোগ হলো গোনাহ, আর ওষুধ হলো এস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা। (বায়হাকি, আত-তারগিব)।
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘ইবলিস বলেছিল, তোমার প্রতাপের শপথ, তোমার বান্দাদের দেহে যতক্ষণ প্রাণ থাকবে, ততক্ষণ আমি তাদের বিপথগামী করতে থাকব। জবাবে আল্লাহ তায়ালা বলেছিলেন, আমার প্রতাপ ও মহিমার শপথ, তারা যতক্ষণ ক্ষমা চাইতে থাকবে, আমি তাদের ততক্ষণ ক্ষমা করতে থাকব।’ (আহমদ, হাকেম)।
হজরত বিলাল ইবনে ইয়াসার ইবনে জায়েদ (রা.) (যিনি ছিলেন প্রিয় নবী (সা.) এর আজাদকৃত গোলাম) থেকে বর্ণিত, তিনি তার বাবা ও দাদা সূত্রে বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি পড়ে ‘আসতাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইউল কাইউম ওয়া আতুবু ইলাইহি’ তার সব গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়, এমনকি ধর্মযুদ্ধ থেকে পলায়নের গোনাহও ক্ষমা করে দেয়া হয়।” (তিরমিজি, মিশকাত)।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি এস্তেগফার করাকে সর্বদা গ্রহণ করে আল্লাহ তাকে সব সংকীর্ণতার মধ্যে উদ্ধারের পথ বের করে দেন, সব দুশ্চিন্তার ক্ষেত্রে মুক্তির পথ বের করে দেন এবং তাকে এমন স্থান থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন যা সে চিন্তাও করেনি।’ (আবু দাউদ ও আহমদ)।
আল্লাহ্ আমাদেরকে বেশি বেশি এস্তেগফার করার তাওফিক দান করুন। আমীন।