ইন্দ্রনগর মাদ্রাসার আফফানের বিরুদ্ধে দূর্নীতি করে পদন্নতীসহ প্রতিষ্ঠানের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

45

নিজস্ব প্রতিনিধি : দূর্নীতি করে পদন্নতী নেওয়াসহ প্রতিষ্ঠানের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মস্বাতের অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতার ইন্দ্রনগর হুসাইনাবাদ ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, সহকারী অধ্যাপক ও একাত্বরের কুখ্যাত রাজাকার পালাতাক আকবর মাওলানার একান্ত সহকারী মাওলানা আফফান আলীর বিরুদ্ধে।

২০১২ সালে বাংলাদেশে যখন একাত্বরের দেশদ্রহী কুখ্যাত রাজাকারদের বিচার শুরু হয় তখন নলতার ইন্দ্রনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রাজাকার আকবর মাওলানা আত্মগোপন করে তখন এলাকা থেকে রাজাকারকে গোপন তথ্য এবং মাদ্রাসার অর্থ লুটপাটের জন্য এমপিও তালিকায় থাকা মাওলানা সফিউল্লাহ হাবীব থাকা সত্বেও তাকে টপকিয়ে অবৈধভাবে মাওলানা আফফানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে যায়।

পরবর্তীতে মাওলানা সফিউল্লাহ ইন্দ্রনগর হুসাইনাবাদ ফাজিল মাদ্রাসা থেকে নলতা আহ্ছানিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পায় তখন সিনিয়র হিসেবে এমপিও সীটে থাকা মাদ্রাসার বাংলা প্রভাষক রফিকুল ইসলামকেও টপকিয়ে মাওলানা আফফান কাগজপত্র জালিয়াতি করে সে নিজের নামে সহকারী অধ্যাপক স্কেল নিয়ে আসে। পরে মাওলানা আফফান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকাকালীন সময়ে শারীরিক শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম প্রতিষ্টানের কল্যানফান্ডে দেওয়া প্রায় দুই লক্ষাধীক টাকা মাওলানা আফফান আত্বস্বাত করে।

পরবর্তীতে বর্তমান সময়ের মাদ্রাসা কমিটি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন গত জুন মাসে অর্থ কমিটির যখন মিটিং হয় তখন সে অর্থ কমিটির মিটিংয়ে ইন্দ্রনগর নিবাসী উজির আলী শেখ কতৃক ইন্দ্রনগর মৌজার ১২৩ খতিয়ানের ১৭১ দাগের সাড়ে ১৬ শতক জমি মাদ্রাসায় দান করে দেওয়া জমির হারি মাদ্রাসার ফান্ডে জমা হয়না। এই বিষয় নিয়ে যখন বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতে থাকে ঠিক তখন কমিটি বিভিন্নভাবে তদন্ত করে প্রমান পায় যে উক্ত জমির অর্থ গ্রহণ করে সাবেক অধ্যক্ষ আকবর মাওলানার বড় পুত্র মো: মুহিবুল্লাহ।

অর্থ কমিটির সদস্য শেখ মোনাজাত হোসেন এবং এ্যাড. আব্দুজ জব্বার সিদ্ধান্ত নেন যে এই অর্থ ফিরিয়ে এনে মাদ্রাসার ফান্ডে জমা করা হোক। এই কথা জমির অর্থ গ্রহণকারী আকবর পুত্র মুহিববুল্লাহ সংবাদ পাওয়া মাত্রই একটি খাতা নিয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলামরে কাছে এসে বলে যে ২০১৪ সালে আফফান হুজুর আমাদের থেকে ৭৫ হাজার টাকা নিয়েছে আর সেই টাকার বদৌলতে আমি এই হারী গ্রহণ করি।

এই বিষয়ে মাদ্রাসা কমিটির সদস্য এ্যাড. আব্দুজ জব্বার, মো. মোনাজত শেখ এবং শাহাজান শেখ মাওলানা আফফানের কাছে জিজ্ঞাসা করলে অফফান বলেন আমি ওই টাকার বিষয়ে কিছু জানিনা। অথচ উক্ত জমির চাষাবাদ ইন্দ্রনগর গ্রামের আব্দুল খালেকের নিকট কমিটি ওই জমির হারীর টাকা কোথায় জমা দেন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন এই জমির হারীর টাকা আকবর হুসাইনের বড় পুত্র মুহিব্বুল্লার নিকট জমা দেই। তখন কমিটি উক্ত জমি চাষাবাদ খালেকের নিকট কেন এই জমির হারীর টাকা মুহিবুল্লার কাছে জমা দেয় এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি যখন আফফান হুজুরের কাছে জিজ্ঞাসা করি যে এই টাকাটা আমি কার কাছে জমা দিবো তখন তিনি বলেন মুহিব্বুল্লার নিকট এই টাকা জমা দিতে। এভাবে দূর্ণীতিবাজ মাওলানা আফফান বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে দূর্ণীতি করে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে।

বর্তমান দূর্ণীতিবাজ অফফান মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে। শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে আলিম স্তর এমপিও ভূক্ত হলেও সে ফাজিল স্তর দেখিয়ে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা দাবি করে নন এমপিও পোস্ট হিসেবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যাতে বাহিরের কোন প্রার্থী আবদন করতে আগ্রহ প্রকাশ না করে। বর্তমান কমিটি একজন যোগ্য ও স্বচ্ছ অধ্যক্ষ রিয়োগের উদ্দেশ্যে পূনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে যারা আবেদন করতে ইচ্ছুক তাদের সঙ্গে আফফান যোগাযোগ করে তাদেরকে এই মর্মে আবেদন করতে অনুৎসাহিত করে যে, কমিটির সাথে তার সমঝোতা হয়েছে এবং কমিটি তাকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে।

এ উদ্দেশ্যে সে ইতিমধ্যে কমিটির কয়েকজন গুরুত্বপুর্ণ সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে নিয়োগ পাইবার চেষ্টা করে এবং তাদের ভিতরে কয়েকজন গোপনে লেনদেনের মাধ্যমে তাকে নিয়োগের ব্যাপারে আশ^স্ত করেছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন।

এমতাবস্থায় এলাকার সচেতন মহলের দাবী যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, দুদক এবং বর্তমান কমিটি বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে যথাযত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।