আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম ও সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস সানা গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনা এগারো দিন অতিবাহিত হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনো সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
প্রতিরাতে বাড়িঘর ভাংচুর, হাঁস-মুরগী, গরু, ছাগল ধরে নিয়ে যাওয়া ও ধানসহ জিনিসপত্র লুটপাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ক্ষতিগ্রস্তরাসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, গদাইপুর গ্রামের লম্বা খোকনের ১২টি গরু, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল শেখের একটি মোটরসাইকেল ও ৩টি গরু চুরি, মনো গফ্ফার মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর, বাচ্চুর বাড়িঘর ভাংচুর, ছোটনুনু মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর, জামারুল ইসলামের ধান, সিরাজুল মোল্যার জুতা ও কাপড়ের দোকান লুট, মোহাম্মদ পুলিশের দোকান ভাংচুর ও লুট, নুর ইসলাম মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর, মোস্তাকিম মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর ও লুট, আনারুল মোল্যার ৩টি গরু চুরি, ঘরবাড়ি ভাংচুর, মহিদুল্লাহ মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর, সাইফাল মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর, কামরুল ইসলামের বাড়িঘর ভাংচুর, জামসেরের বাড়িঘর ভাংচুর, শেখ কামরুল ইসলামের দোকান ভাংচুর ও লুট, তুহিন সরদারের ২টি গরু ও শফিকুল সরদারের নগদ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এছাড়া আব্দুল সালাম, ওয়েজ কুরুনী, সিরাজুল ইসলাম, সেলিম ও রাব্বির বাড়ি ভাংচুর ও মালামাল লুট করা হয়েছে।
এদিকে, নিহত সরবত মোল্যার ছেলে সবুজ মোল্ললা বাদি হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এতে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমকে প্রধান আসামী করে ৫৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। ইতিমধ্যে এ মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অপরদিকে, চেয়ারম্যান ডালিমের ভাই ওবায়দুল্লাহ ডাবলু বাদি হয়ে টগরকে মারপিট, গাড়িবাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দস ও অহিদসহ ২৫ ও ৩৬ জনকে আসামী করে পৃথক দুটি মামলা এবং মুক্তিযোদ্ধা নুরুল শেখের স্ত্রী জামিলা খাতুন বাদি হয়ে ২০ জনকে আসামী করে আর একটি মামলা করেছেন। জামিলা খাতুনের মামলায় ২০নং আসামী মেম্বর আরিফ বিল্লাহকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে ফিরেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজির মোল্ল্যার পুত্রবধূ মিনারা বেগম ও মটরসাইকেল চালক সেলিম সরদারের মা বেবি খাতুনের অভিযোগ, তাদের বাড়ি ভাংচুর, মালামাল লুট ও প্রকাশ্য দিবালোকে মটর সাইকেল ছিনতাই করেছে শিমুল, সবুজ ও আনারুলরা।
এ বিষয় গত ২/৩ দিন আগে লিখিত ভাবে থানায় অভিযোগ করেছেন বলে তিনি জানান। চেয়ারম্যান ডালিমের স্ত্রী আঁখি জানান, হত্যা ও নাশকতাসহ একাধিক মামলার আসামী সরবত মেল্যা মারা যাওয়ার পর তার (আঁখির) বাড়িসহ বাড়িতে থাকা ৫টি মোটর সাইকেল ও মাইক্রোবাস ভাংচুর করা হয়। এছাড়া নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও দলিলসহ সকল মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এঘটনা ১১দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কোন মালামাল উদ্ধার বা কোন আসামী গ্রেপ্তার হয়নি। ফলে রাত এলে চরম আতংকে থাকে তাদের লোকেরা।
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুস সালাম বলেন, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ৪টি মামলা হয়েছে। এখন সেখানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে এবং পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।